চলমান সংবাদ

পুলিশের পা ধরে কান্নায় ভেঙে পড়া সেই প্রার্থী চেয়ারম্যান নির্বাচিত

পুলিশের পা ধরে কান্নায় ভেঙে পড়া করা স্বতন্ত্র প্রার্থী হাবিবুর রহমান জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।

দ্বিতীয় ধাপে জেলার ৭টি ইউপি নির্বাচনে তিনিই একমাত্র স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। অন্য ৬টি ইউনিয়নে নির্বাচিত হয়েছেন নৌকার প্রার্থীরা। হাবিবুর রহমান পেয়েছেন ৮ হাজার ৭৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান চেয়ারম্যান নৌকার প্রার্থী আবু সাইদ জোয়ারদার পেয়েছেন ৭ হাজার ৭২ ভোট। দ্বিতীয় ধাপের জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দুপুরে হঠাৎ করেই গোপীনাথপুর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের একটি কক্ষে প্রকাশ্যে নৌকার সিল মারাকে কেন্দ্র করে গণ্ডগোল বাধে। প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে লাঞ্ছিত হন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী হাবিুবর রহমান। তিনি ছিলেন বিএনপি’র সমর্থক। তার মার্কা আনারস। মুহুর্তের মধ্যেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। খবর পেয়ে এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে র‌্যাব ও পুলিশ ঘটনাস্থলে হাজির হলে পুলিশের পা ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন হাবিবুর রহমান।

তিনি অভিযোগ করেন, নৌকা প্রার্থীর ছেলে সজীব ও সাবেক ইউপি সদস্যের ছেলে রয়েল গোপীনাথপুর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৭ নম্বর কক্ষে প্রবেশ করে জোর করে নৌকায় সিল মারতে থাকে। এ দৃশ্য দেখে প্রতিবাদ করে স্বতন্ত্র প্রার্থীর এজেন্টসহ তার কর্মী-সমর্থকরা। সেখানে হাজির হয়ে প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে প্রতিপক্ষের হাতে লাঞ্ছিত হন তিনি। এ অবস্থায় পরিস্থিতি ক্রমান্বয়ে উত্তপ্ত হলে সজীব ও রয়েল সটকে পড়েন।

খবর পেয়ে র‌্যাব-৫ জয়পুরহাট ক্যাম্পের কমান্ডার লে. কমান্ডার তৌকির র‌্যাব সদস্যদের নিয়ে ছুটে আসেন। এর কিছুক্ষণ পরই সেখানে হাজির হন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম। এসময় তরিকুল ইসলামের পায়ে হাত দেওয়ার ভঙ্গিমায় বসে ভোট কারচুপির অভিযোগ করে কান্নায় ভেঙে পড়েন হাবিবুর রহমান। এএসপি তরিকুল ইসলাম এসময় নিরপেক্ষ ভোটের নিশ্চয়তা দিয়ে তাকে শান্ত থাকার পরামর্শ দেন। এ ঘটনার পর থেকে ওই কেন্দ্রে অবস্থান নেয় র‌্যাব ও পুলিশ। পরে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ শেষ হলে বেসরকারি ফলাফলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হাবিবুর রহমানকে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়।

হট্টগোলের ওই ঘটনায় হাবিবুর রহমান জানান, সকাল থেকে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ চলছিল। কিন্তু দুপুর ১টার দিকে বর্তমান চেয়ারম্যান নৌকার প্রার্থী আবু সাইদ জোয়ারদারের ছেলে সজীব ও তার সহযোগী রয়েল নামের দুই যুবক কেন্দ্রের ৭ নম্বর কক্ষ দখল করে প্রকাশ্যে নৌকার সিল মারতে থাকলে তার লোকজন এতে বাধা দেয়। এতে চরম হট্টগোল শুরু হয়। তারা আমাকেও গলাধাক্কা দেয়। পরে পুলিশ এলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে আমি পুলিশের কাছে কান্নাকাটি করেছি। প্রশাসনের কঠোর ও নিরপেক্ষ ভূমিকায় আল্লাহর অশেষ কৃপায় আমি নির্বাচিত হয়েছি।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম জানান, হট্টগোলের পর থেকে ঘটনাস্থলে তিনি নিজেই অতিরিক্ত পুলিশসহ অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছেন।