চলমান সংবাদ

চাঁদাবাজির প্রতিবাদে বৈঠা নিয়ে সাম্পান মাঝিদের মানববন্ধন

 বাড়তি টাকা আদায়ের প্রতিবাদে নৌকার বৈঠা নিয়ে মানববন্ধন করেছে কর্ণফুলী নদীর মাঝি কল্যাণ সমিতি ফেডারেশন। বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, চট্টগ্রামের আড়াই হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী সাম্পান কর্ণফুলী থেকে চিরতরে বিলুপ্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। গত পাঁচ দিন ধরে নিজেদের ন্যায্য দাবিতে ইছানগর-বাংলাবাজার ঘাটে ধর্মঘট করছেন তিনশতাধিক সম্পানমাঝি। মাঝিদের ন্যায্য দাবির তোয়াক্কা না করে কর্ণফুলী ছাড়ার পরামর্শ দিয়েছেন ভূসম্পদ কর্মকর্তা জসীম উদ্দিন। যে কারণে মাঝিরা বৈঠাহাতে ঘাট ছেড়ে রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছে। ‘পাটনিজীবী নীতিমালা ২০০৩ ও উচ্চ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী একজন সাম্পান মাঝি ঘাটে থাকলেও তাকে ঘাঁট ইযারা দিতে হবে। কিন্তু সিটি কর্পোরেশন মাঝিদের ঘাট ইজারা না দিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালী কিছু ব্যক্তির মাধ্যমে গত পাঁচ মাস ধরে দুই টাকার পরিবর্তে পাঁচ টাকা টোল আদায় ও চাঁদাবাজি করে আসছে।’— বলেন বক্তারা। মানববন্ধনে কর্ণফুলী নদী গবেষক অধ্যাপক ইদ্রিস আলী, সাংবাদিক আলীউর রহমান, বাংলাবাজার সাম্পান সমিতির সভাপতি লোকমান বয়াল, চর পাথরঘাটা ব্রিজঘাট সাম্পান চালক কল্যাণ সমিতির সভাপতি জাফর আহম্মদ, বাংলাবাজার সাম্পান সমিতির সাবেক সভাপতি এনামুল হক, সাধারণ সম্পাদক মো. ইউছুফ, অর্থ-সম্পাদক জসিম উদ্দীন উপস্থিত ছিলেন। এর আগে গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট পালন করে আসছেন মাঝিরা। জানা গেছে, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ইজারা না দিলে একজন কর্মকর্তার মাধ্যমে জনপ্রতি ২ টাকা করে টোল আদায় করার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু চসিক তা না করে স্থানীয় লোক দিয়ে টোল আদায় করছে। তারা ২ টাকার স্থলে ৫ টাকা করে নিচ্ছেন। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মাঝিরা। এর পর থেকেই তারা আন্দোলনে নামেন। মাঝিদের অভিযোগ, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ঘাটটি ইজারা না দিয়ে স্থানীয় কিছু লোক দিয়ে জনপ্রতি ৫ টাকা করে আদায় করছে। এ বিষয়ে সিটি মেয়রকে ১৫ দিন আগে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। যার কারণে তারা ধর্মঘটের ডাক দেন। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের কারনে যাত্রীরা উপজেলা কর্ণফুলী উপজেলা ইউএনও এর কাছে অভিযোগ করলে গত ১২ আগস্ট উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (ভূমি) এসে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়কারীদের পরিবর্তে গরিব ইছানগর বাংলাবাজার ঘাটের মাজিদের ৫ হাজার টাকা জরিমানা করে এবং এই অবস্থা চলতে থাকলে আগামীতে অভিযান চালিয়ে জরিমানা ও জেল প্রদান করা হবে বলে নির্দেশ প্রদান করে। যে কারণে মাঝিরা নিরুপায় হয়ে গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে ঘাট বন্ধ করে লাগাতার ধর্মঘট শুরু করে। ধর্মঘট চলাকালে মাঝিরা চসিকের প্রধান রাজস্ব কর্মকতা ও ভূসম্পদ কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করলে তারা ঘাটে সাম্পানের পরিবর্তে ইঞ্জিন চালিত বোট চলবে জানিয়ে সাম্পান মাঝিদের ঘাট ছেড়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। # ১৬।০৯।২০২১ চট্টগ্রাম #