চলমান সংবাদ

সিডিএ চেয়ারম্যানকে খোরশেদ আলম সুজন জলপ্রবণ এলাকাগুলোর প্রতিবন্ধকতা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অপসারণের অনুরোধ

জলপ্রবণ এলাকাগুলোর প্রতিবন্ধকতা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অপসারণের অনুরোধ জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রশাসক এবং চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন। মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট ২০২১ইং) দুপুরে সিডিএ সম্মেলন কক্ষে একগুচ্ছ প্রস্তাবনা নিয়ে সিডিএ চেয়ারম্যানের সাথে এক মতবিনিময় সভায় সুজন এ অনুরোধ জানান। এসময় তিনি বলেন, সিডিএর অধীনে নগরীতে হাজার হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কর্মকান্ড চলছে। তবে উন্নয়ন কর্মকান্ড চলমান থাকায় জনদুর্ভোগে চরমে উঠেছে। বিশেষ করে নগরীর বন্দরটিলা থেকে সল্টগোলা ক্রসিং এবং বারিক বিল্ডিং থেকে দেওয়ানহাট পর্যন্ত মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। ভাঙ্গা রাস্তাঘাটে যান এবং জনগনের চলাচল দায় হয়ে পড়েছে। এসব রাস্তাগুলো আপাতত চলাচল উপযোগী করে গড়ে তোলার জন্য চেয়ারম্যানের দৃষ্টি আকর্ষন করেন তিনি। তিনি আরো বলেন, নগরীতে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি যে জলাবদ্ধতার সুফল পেতে হলে নগরবাসীকে আরো বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। তবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যে সকল এলাকায় পানি জমে যেমন-২নং গেইট, মুরাদপুর এবং বহদ্দারহাটে জলজটের সৃষ্টি হয় সেসব এলাকার প্রতিবন্ধকতাসমূহ দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাপ্ত করার জন্য সিডিএ চেয়ারম্যানকে অনুরোধ জানান তিনি। সম্প্রতি জলাবদ্ধতায় নালায় পড়ে একজন ব্যক্তি নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করেন সুজন। এছাড়া মহেশখাল এবং চাক্তাইখালের স্লুইসগেটের কাজও যদি সঠিক সময়ে শেষ করা যায় তাহলে নগরবাসী জলাবদ্ধতা থেকে অনেকাংশে মুক্তি পাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তাছাড়া আউটার সার্কুলার রোডের কাজটি প্রায় সম্পন্ন হওয়ার ফলে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে প্রতিদিন প্রচুর পরিমানে পর্যটকের ভিড় হয়। ছুটির দিনে যে সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পায়। কিন্তু এতো বিপুল সংখ্যক পর্যটকের জন্য নেই কোন বিশ্রামাগার কিংবা শৌচাগারের ব্যবস্থা। পুরো এলাকাটি ময়লা আবর্জনায় ভর্তি। দেখে মনে হবে যেনো আবর্জনার ভাগাড়। অথচ বিপুল সংখ্যক অর্থায়নে সমুদ্র সৈকতটি আধুনিকায়ন করা হয়েছিলো। তাই সমুদ্র সৈকতটিকে পরিপূর্ণভাবে পরিস্কার, পরিচ্ছন্ন এবং নিরাপত্তার আওতায় আনার আহবান সুজনের। তিনি আরো বলেন চট্টগ্রাম বন্দর কেন্দ্রিক আমদানি রপ্তানি বৃদ্ধির ফলে প্রতিদিন নগরীতে প্রায় ৫-৬ হাজার ট্রাক, ট্রেইলর এবং কাভারভ্যান আসা যাওয়া করে। এছাড়া চট্টগ্রাম থেকে সারাদেশের প্রায় সবকটি জেলায় বাস যোগাযোগও রয়েছে। প্রতিদিন তাই বন্দর নগরীতে হাজার হাজার বাস, ট্রাক যাতায়াত করলেও তাদের জন্য নেই কোন টার্মিনাল। ফলে বিপুল সংখ্যক গাড়ীগুলো রাস্তায় এলোমেলোভাবে পার্কিং করে রাখার ফলে চট্টগ্রাম নগরীটি যানজটের নগরীতে পরিণত হয়েছে। তাই অতিসত্বর ভাটিয়ারিতে একটি টার্মিনাল স্থাপনের দাবী জানান তিনি। তাছাড়া চট্টগ্রাম শহরের ভিতরেও কোন পার্কিং স্পেস নেই। চট্টগ্রাম রেল ষ্টেশনের সম্মূখের যে জায়গাটি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে সে জায়গাটি রেলওয়ের সাথে আলোচনা করে যদি একটি বহুতল বিশিষ্ট পার্কিং নির্মাণ করা যায় তাহলে চট্টগ্রাম শহরের যানজট অনেকাংশে কমে আসতে পারে বলে মত প্রকাশ করেন তিনি। তিনি বড়পুল-চৌচালা সংযোগ সড়কটির কাজও দ্রুততম সময়ের মধ্যে শুরু করার আহবান জানান। এ রাস্তাটির কাজ সম্পন্ন হলে মূল শহরকে বাদ দিয়ে অনায়াসে বিমানবন্দর এবং ইপিজেডগামী যাত্রীরা শহরে প্রবেশ করতে পারবে। তিনি ইপিজেড এর সাথে লাগোয়া পরিত্যক্ত রেললাইনের জায়গাটিকে অধিগ্রহণ করে ইপিজেড বাইপাস সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্যও সিডিএ চেয়ারম্যানের সুদৃষ্টি কামনা করেন। সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে নেতৃবৃন্দের বক্তব্য শ্রবণ করেন। তিনি নেতৃবৃন্দের উপস্থাপিত প্রতিটি প্রস্তাবনার সাথে সহমত পোষন করেন। তিনি বলেন, জনদুর্ভোগের বিষয়টি মাথায় রেখে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ করোনাকালেও উন্নয়ন কর্মকান্ডসমূহ চলমান রেখেছে। উন্নয়ন কর্মকান্ড চলাকালীন যেসকল সমস্যা দেখা দিচ্ছে সেগুলো যাতে দ্রুত সমাধান হয় সেজন্য প্রকৌশলীদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করেন তিনি। এছাড়া জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজগুলিও যেখানে প্রতিবন্ধকতা আছে সেখানে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সমাধান করার বিষয়ে সুজনের সাথে একমত পোষন করেন। তিনি নগরবাসীকে আরেকটু ধৈর্য্য ধরে উন্নয়ন কর্মকান্ডসমূহ শেষ হওয়া পর্যন্ত সাময়িক কষ্ট স্বীকার করার জন্য সবিনয় অনুরোধ জানান। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নাগরিক উদ্যোগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হাজী মো. ইলিয়াছ, আব্দুর রহমান মিয়া, রুহুল আমিন তপন, সাইদুর রহমান চৌধুরী, নিজাম উদ্দিন, সদস্য সচিব হাজী মো. হোসেন, মোরশেদ আলম, মো. শাহজাহান, অনির্বান দাশ বাবু, জাহেদ আহমদ চৌধুরী, সমীর মহাজন লিটন, রকিবুল আলম সাজ্জী, মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি এম ইমরান আহমেদ ইমু প্রমূখ।
# ৩১.০৮.২০২১, চট্টগ্রাম #