শিল্প সাহিত্য

অশ্রুসিক্ত হবার জন্য বসো

– সৈয়দ আহমদ শামীম

দুনিয়ার সমস্ত সমাজ জুড়ে যারা থাকে
তারা জানে না যে ভাষা ভালোবাসে
যখন তার চারপাশের গাছের শেকড়পাতায় 

সুর ছড়িয়ে দেয় তারা ভাষারপ্রেমে পড়ে যায়
বাতাস হতে পাওয়া সুরের শোণিতে
যখন নদী সমুদ্র দিশাহারা হয়
তারা সেখানে গিয়ে বসে
তাদের চোখ অশ্রুসিক্ত হয়ে ওঠে
তারা ফলিয়ে তোলে মাছ, স্নান করে গোবাছুর
আনাজের ক্ষেত সুরলগ্ন গৃহের মাটি
ঈষৎ বিভ্রমের রেখা ধরে বুকের অচেনা সুরের
খুন করে হাওয়ায় মেলানো শরীর
অপার চক্রাবর্ত খুন হয়ে যাওয়ার সাধে
অমরতার খোঁজে মধুরতা চক্রাবর্ত ঘুরে।

অশ্রুসিক্ত  হবার  জন্য বসো।

প্রেম শব্দটিরে শত রুদ্ধ দুয়ার খুলে
নিত্য দুয়ারে পেলে
চক্রাবর্তে থেকে মানবসমাজে যারা আছে
সবাদের প্রেম রয়েছে
যৌবনে তারা বিভ্রমের মধুরতার সাথে গিয়ে 

কারুর  অশুভ হয়েছে 
কারো ঘোর কিংবদন্তি অঙ্গঅঙ্গ জুড়েছে,
সমাজের কারো ঘোর গ্রন্থিচ্যুতি ঘটেনি রসিক!

প্রকৃত অশ্রুসিক্ত হবার জন্য বসো।

মানুষ অমরতার বাসনা পেয়েছে

অমরত্বের জন্য সে স্বয়ম্ভু সুরের সাথে
প্রতিবার জন্মদাতার সাধ লভিয়াছে
শূন্য শব্দের সাথে সুরের লগ্নি ঘটিয়ে
কবি অভিহিত করেছে
শব্দ ও সুর গেঁথে দৃষ্টির মায়ার সাথে
নারীর জন্য ফাঁদ পাতিয়াছে।
শব্দ সুরের প্রকৃত আধিকারিকের সন্ধান বিনে
নারী তার অপার মুক্ত করে নিঃশেষিত হয়ে
অনন্ত তৃষ্ণার লোভের কাছে ফতুর হয়েও
সংসারে সমাজে থেকেছে।

সময় ফুরায় কাল মহাকাল পিঁপড়ের সারির মতো যায়
সভ্যতা বাড়িয়ে ক্লান্তি লাগে  কারুর, সমাজ বিচ্যুত হয় না
কালো কুচ্ছিত ধবধবে ফর্সা ফিরিঙ্গী তামিল এশীয় সুশ্রী
অভিহিত উত্তর ভারতী ঋজু নাসাগ্ররমণী কাদামাখা তেলঝা
আফ্রিকান বালিকা সবাই দেখেছ অবশেষে কিছুই ফুরায় না
লাইনচ্যুত একটা পিঁপড়ের মতো মৃত্যু ছিটকে
একটা আশা ঠিকরে বেরিয়ে পড়েছে অমরতার বাসনার দিকে।

যত ভারতবর্ষীয় কৃষ্ণমূর্তি আর বুদ্ধের বিগ্রহ হোক
প্রতীচ্য পুরোহিত লুকিয়ে রাখুক যীশুসংহিতা
অমর সত্তা জানে মানুষ ও সমাজ তার প্রকৃত
সত্তার সন্ধানে উন্মুখ রয়েছে নদীপাহাড়ের
নির্জনে পাতা পিঁপড়ের মতো ধ্যানে।


আগস্ট ১৭, ২০২১