চলমান সংবাদ

ব্যস্ততা বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে সংক্রমণের শংকাও

গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই নেই

 কঠোর লকডাউনের বিধি-নিষেধ তুলে নেওয়ার পর বুধবার (১১ আগস্ট) থেকে চিরচেনা রূপে ফিরেছে বন্দরনগরী। বেড়েছে জনসমাগম, বেড়েছে কর্মব্যস্ততা। সড়কে অবাধে চলেছে গণপরিবহন। নগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে ছিল যানজট। কিন্তু করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি থাকার পরও বিধিনিষেধ তুলে দেওয়ায় সংক্রমণ বৃদ্ধির শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। বুধবার (১১ আগস্ট) নগরের আগ্রাবাদ, টাইগারপাস, লালখানবাজার, জিইসি, নিউমার্কেটসহ বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ঘুরে দেখা যায়, দীর্ঘ ১৯ দিনের কড়া লকডাউন শেষে প্রাণ সঞ্চার হয়েছে নগরের সকল প্রান্তে। বিধিনিষেধ না থাকায় মানুষের চলাচল বেড়েছে। সংক্রমণের ভয় কিংবা স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রবণতা নেই বললেই চলে। গাড়িতে ভিড়, গাদাগাদি করে বসেছে মানুষ। নেই কোন ফাঁকা আসন। সকাল থেকেই অফিসগামী ও গার্মেন্টসমুখী কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকরা গণপরিবহণের পেছনে ছুঁঁটেতে দেখা যায়। ধাক্কাধাক্কি করে গাড়িতে ওঠার পাশাপাশি বাড়তি ভাড়া আদায় নিয়ে বাগবিতন্ডার চিত্রও চোখে পড়েছে। সেই সাথে মাস্ক পরার অনীহা দেখা গেছে বাস চালক ও সহযোগীদের মধ্যে। অনেক যাত্রীও ছিলেন অসচেতন। সেই সাথে অধিকাংশ গণপরিবহণে চোখে পড়েনি স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা। গণপরিবহনের সংখ্যা কম থাকায় মানুষের ভোগান্তি ছিল চোখে পড়ার মতো। স্টপেজে একটি গাড়ি এসে দাঁড়ালে একসাথে অনেকে সেই গাড়িতে ওঠার চেষ্টা করেন। গাড়িতে ওঠার জন্য রীতিমতো হাঙ্গামা পোহাতে হয় অফিসগামীদের। ১০নং রুটের যাত্রী রহিম উদ্দিন বলেন, সকাল সকাল অফিস যাওয়ার জন্য বহদ্দারহাট টার্মিনালে এসে অপেক্ষা করছি। প্রায় আধ ঘণ্টা দাঁড়ানোর পর গাড়ি পাই। সড়কে চাহিদার তুলনায় গাড়ির সংখ্যা অনেক কম। ৩নং রুটের যাত্রী হাবিবুর রহমান বলেন, গণপরিবহণে স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বালাই নেই। গাড়ির হেল্পার নিজেই মাস্ক পরেনি, যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি কিভাবে নিশ্চিত করবে! তাছাড়া গাদাগাদি করে গাড়িতে লোক ওঠাচ্ছে। এসব তদারকি করার কেউ নেই। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম অঞ্চলের সভাপতি মো. মূছা বলেন, অনেকদিন পর বিধিনিষেধ তুলে গণপরিবহন চালু করা হয়েছে। লকডাউন থাকাকালীন আমাদের (শ্রমিক) মানবেতর জীবনযাপন করতে করেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলেও গণপরিবহন চলাচল করতে দেওয়ায় আমরা খুশি। তিনি বলেন, গণপরিবহন চালু করা হলেও সব শ্রমিকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, সকলে যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিবহন চালায়। কিন্তু নগরে গাড়ির তুলনায় যাত্রীর সংখ্যা অইেশ বেশি হওয়ায় তা মানা সম্ভব হচ্ছে না বলে তিনি জানান। গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি না মানার বিষয়ে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটের সমন্বয়ক ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. আবদুর রব মাসুম বলেন, সরকার করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যতটুকু সম্ভব চেষ্টা করছে। করোনার জন্য আমাদের পক্ষে ঘরবন্দী হওয়াও সম্ভব নয়। তাই সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে সীমিত পরিসরে সবকিছু চালু করেছে। এখন আমাদের সচেতনভাবে চলাফেরা করতে হবে। যদি স্বাস্থ্যবিধি মানা না হয়, পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হতে পারে। বর্তমানে হাসপাতালগুলোতে রোগীর জন্য জায়গা নেই। তাই নিজের জন্য, নিজের পরিবারের জন্য আমাদের সচেতন হতে হবে। # ১১.০৮.২০২১ চট্টগ্রাম