চলমান সংবাদ

বৃষ্টি-জোয়ারের কারণে চট্টগ্রাম নগরীর বেশির ভাগ সড়কেরই বেহাল অবস্থা

টানা বৃষ্টি আর জোয়ারের কারণে চট্টগ্রাম নগরীর বেশির ভাগ সড়কেরই বেহাল অবস্থা। অল্প বৃষ্টিতেই তলিয়ে যাচ্ছে পথঘাট। জোয়ারের পানিতেও ডুবে যায় নিম্নাঞ্চল। নগরীর প্রধান প্রধান সড়কজুড়ে ব্যাপক খানাখন্দ। বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়ে পানি জমে থাকে প্রতিটি সড়কে। দেখলে মনে হবে যেন গ্রামীণ কোনো মেঠো পথ। সৌন্দর্যের নগরী চট্টগ্রাম শহর এখন হতশ্রী। সিটি কর্পোরেশন ও নগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের হিসেবে, চট্টগ্রাম নগরীর অর্ধেকের কাছাকাছি সড়ক সড়ক চলাচলের প্রায় অনুপযোগী অবস্থায় আছে। এসব সড়কে যানবাহন চলাচল দায় হয়ে পড়েছে। তাই ৬০ লাখ মানুষের এই শহরে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে নগরবাসীকে। সরেজমিন দেখা যায়, বৃষ্টি আর জোয়ারের কারণে চট্টগ্রাম নগরীর প্রধান প্রধান সড়কজুড়ে ব্যাপক খানাখন্দ। কোথাও কোথাও বড় বড় গর্ত। নগরীর এক্সেস রোড, পোর্ট কানেকটিং সড়ক, ডিটি রোড, বহদ্দারহাট, ঈদগাহ, চকবাজারসহ প্রতিটি সড়কে খানাখন্দকের সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া মুরাদপুর থেকে বহদ্দারহাট অংশের রাস্তায় বড় বড় গর্ত। তাতে কাদাপানি জমে যানবাহন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। নগরীর পাহাড়তলী, অলঙ্কার, সাগরিকা, বন্দর, ফকির হাট, নিউমার্কেট, আন্দরকিল্লা, চকবজার, কালামিয়া বাজারসহ প্রায় সব এলাকায় সড়কের বেহাল দশা। ভাঙাচোরা সড়ক আর বড় বড় গর্তের কারণে পানি জমে থাকায় চলাফেরা করতে চরম বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে মানুষজনকে। ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে গাড়ি চালকদেরও। গর্তের কারণে বারবার গাড়ি নষ্ট হচ্ছে। ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। যানজটে আটকা পড়ে কর্মজীবীদের নিত্য দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এই দুর্ভোগকে আরও কয়েকগুন বাড়িয়ে দিয়েছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ কাজ। এ প্রকল্পের কাজের জন্য শহরের মূল সড়ক শেখ মুজিব রোডের মাঝখানটায় টিন দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। বৃষ্টির কারণে সর্বনাশ হয়েছে নগরীর রাস্তাঘাটের। সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, চলমান বর্ষায় নগরীর ৪০-৫০ কিলোমিটারের মতো সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কর্পোরেশনের সড়ক সংস্কারের কাজ সারা বছরই চলমান থাকে। করোনার লকডাউনের কারণে এবং এতদিন বৃষ্টির জন্য সংস্কার কাজ করা সম্ভব হয়নি। যেসব সড়কে বড় বড় গর্ত হয়েছে সেখানে জরুরি সংস্কার কাজ চলছে। এরমধ্যেও বৃষ্টির ফাঁকে ফাঁকে সংস্কার কাজ চলেছে। আর কিছুদিন পর থেকে পুরোদমে সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু হবে। আশাকরি দ্রুততম সময়ের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত সব সড়ক ঠিক করা হবে। এদিকে নগরীর লাইফ লাইন বলে পরিচিত পোর্ট কানেক্টিং সড়কের বেহাল দশায় কয়েক লাখ মানুষকে প্রতিদিন নরক যন্ত্রণা পোহাতে হচ্ছে। বন্দরের আমদানি-রপ্তানির পণ্য পরিবহনের অন্যতম সড়ক হওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। পাঁচ বছরেও এই সড়কের উন্নয়ন কাজ শেষ হয়নি। বন্দরের মালামাল পরিবহনের অতি গুরুত্বপূর্ণ নগরীর সদরঘাট থেকে বারিক বিল্ডিং মোড় পর্যন্ত চট্টগ্রামের স্ট্যান্ড রোডটির অবস্থাও করুণ। এই সড়কে কিছুদূর পর পর এমন অসংখ্য গর্তের দেখা মিলে। এমন সড়কের উপর দিয়েই দুর্ভোগ নিয়ে নিয়মিত চলাচল ১০-১২ চাকার লরির। বাংলাবাজার, মাঝিরঘাট, সদরঘাট ও মাদারবাড়ীর হাজার হাজার ব্যবসায়ী ও বসবাসরত জনগণকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন বলছে, লকডাউন ও ভারী বৃষ্টির কারণে রাস্তার সংস্কার কাজ করা যাচ্ছে না। পরিস্থিতি ঠিক হলে দ্রুত রাস্তা সংস্কার করা হবে। কনজ্যুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ক্যাব’র কেন্দ্রীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন জানান, ‘নগরীর প্রায় অর্ধেকের বেশি সড়কে যানবাহন চলাচল কিংবা যানজট নিয়ন্ত্রণ দুরূহ হয়ে পড়েছে। রাস্তায় খানাখন্দকে ভর্তি। নগরীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোর মধ্যে অন্যতম পোর্ট কানেকটিং সড়ক। এছাড়া আরেক ব্যস্ততম সড়ক হচ্ছে বহদ্দারহাট মুরাদপুর সড়ক ও স্ট্যান্ড রোড। জরুরি ভিত্তিতে সড়ক সংস্কার করা দরকার।
# ০৫.০৮.২০২১ চট্টগ্রাম #