চলমান সংবাদ

লাথি মেরে গর্ভের সন্তান হত্যা করে প্রতিবেশী কারাগারে

আট বছর বয়সী সন্তানকে আঘাতের প্রতিবাদ করায় মাকেও মারা হলো লাথি। সেই লাথিতে নষ্ট হলো চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা সালমা বেগমের অনাগত সন্তান। সেই সালমা বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে লড়ছেন শংটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসাধীন। লাথি মেরে সন্তান নষ্টের অভিযোগে মো. সোহেল (৩৫) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার (২৬ জুলাই) গ্রেপ্তার সোহেলকে আদালতে সোপর্দ করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এ ঘটনায় সালমা বেগমের স্বামী রিকশা চালক মো. ইসমাইল হোসেন বাদী হয়ে বায়েজিদ বোস্তামি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ২৩ জুলাই বিকেলে সালমার আট বছর বয়সী বড় ছেলে ইমন খেলতে যায়। সেখানে সোহেল শিশু ইমনকে মারধর করে। ইমন এসে বিষয়টি তার মাকে জানালে সালমা সেখানে গিয়ে ছেলেকে মারার ারণ জানতে চান। তখন কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে সোহেল সালমার তলপেটে লাথি মারে। সোহেলের লাথিতে ঘটনাস্থলেই রক্তক্ষরণ শুরু হয় সালমার। তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন জড়ো হতে দেখলে সোহেল ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। বিষয়টি সালমার স্বামী ইসমাইলকে ফোনে জানালে তিনি ঘটনাস্থলে ছুটে যান। স্ত্রীর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ দেখে স্থানীয়দের পরামর্শে থানায় নিয়ে যান। থানায় গিয়ে সালমা অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান। পুলিশ তাকে দ্রুত চমেক হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। সালমার গর্ভে থাকা ৪ মাসের সন্তানটি নষ্ট হয়ে গেছে বলে জানান কর্তব্যরত চিকিৎসক। সালমা বেগম বর্তমানে চমেক হাসপাতালের ৮০ নম্বর ওয়ার্ডের ৩৬ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। পরে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত সোহেলকে আটক করে পুলিশ আদালতে পাঠায়। সোহেল ওই এলাকার মো. হানিফের ছেলে। এদিকে সালমা বেগমের বাড়ি নোয়াখালীর সুবর্ণচর নোঙ্গলিয়ার ভূঁইয়া গ্রামে। দুই ছেলে-মেয়ে নিয়ে বায়েজিদ এলাকায় সাড়ে ৩ হাজার টাকা ভাড়ায় একটি বাসায় থাকেন। রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি। বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি মো. কামরুজ্জামান বলেন, সোহেল নামে এক যুবকের লাথিতে আহত অন্তঃসত্ত্বা সালমা বেগম গত ২৩ জুলাই বিকালে থানার কম্পাউন্ডে এসে অজ্ঞান হারান। আমরা তাৎক্ষণিক তাকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করাই। চিকিৎসকরা রক্ত প্রয়োজন বলায় আমাদের ফোর্স রক্ত দিয়েছে। চিকিৎসকরা অনাগত সন্তানকে বাঁচাতে আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সম্ভব হয়নি। তিনি আরও জানান, সালমাকে হাসপাতালে পাঠিয়ে আরেকটা টিম গিয়ে সোহেলকে আটক করে। সোহেলকে আদালতে সোপর্দ করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। সালমার সর্বশেষ অবস্থা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সালমার অবস্থা ভালোর দিকে হলেও চিকিৎসকরা এখনও তিনি আশঙ্কামুক্ত নন বলে জানিয়েছেন। সুস্থ হলে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাবেন। আমরা তার চিকিৎসায় সহযোগিতা করছি।
# ২৬.০৭.২০২১ চট্টগ্রাম #