চলমান সংবাদ

চট্টগ্রামে করোনায় শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছেই

স্বাস্থ্যবিধি না মানার মাশুল গুনছেন সাধারণ মানুষ চট্টগ্রামে করোনায় শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছেই। ঈদ উপলক্ষে লকডাউন শিথিল থাকায় স্বাস্থ্যবিধি না মানার মাশুল গুনছেন মানুষ। সরকারি হিসেবে চট্টগ্রামে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় ৮৪৮ জনের শরীরে করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে, এই সময়ে করোনা আক্রান্ত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। চলতি জুলাইয়ে রেকর্ড সংখ্যক করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। চলতি মাসের ২৬ দিনে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১৭ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। মৃত্যু হয়েছে ১৮৪ জনের। কয়েক মাস আগে করোনায় সংক্রমণ হার ছিল ১০ থেকে ১৩ শতাংশ। জুন মাসের সংক্রমণের হার ২০ থেকে ৩০ শতাংশ থাকলেও জুলাইয়ে ৩৪ থেকে ৩৮ শতাংশের বেশি থাকছে। প্রতিদিন যে হারে করোনা রোগী বাড়ছে, তাতে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। চট্টগ্রামে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে করোনা শয্যা সংকট দেখা দিয়েছে। হাসপাতালের দ্বারে দ্বারে করোনা রোগীর স্বজনরা একটি বেড পেতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। করোনায় সংকটনাপন্ন রোগীর জন্য নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র- আইসিইউ যেন সোনার হরিণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আইসিইউ শয্যার হাহাকার। নগরের প্রথমসারির বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে এখন আইসিইউ শয্যার জন্য মোটা টাকার সঙ্গে লাগছে সিরিয়ালও। সোমবার (২৬ জুলাই) জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সবর্শেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এর আগের ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামের বিভিন্ন ল্যাবে দুই হাজার ২৮২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে ৮৪৮ জনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। এর মধ্যে নগরীর ৫৮০ জন এবং ২৬৮ জন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা। সংক্রমণের হার ৩৭ দশমিক ১৬ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ১২ জনের মধ্যে ৪ জন নগরীর এবং ৮ জন উপজেলার বাসিন্দা। চট্টগ্রামে এখন পর্যন্ত ৭৬ হাজার ৩২৬ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে নগরীর বাসিন্দা ৫৬ হাজার ৫৮৯ জন এবং বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা ১৮ হাজার ৭৩৭ জন। করোনায় চট্টগ্রামে মারা গেছেন মোট ৮৯৭ জন। এর মধ্যে নগরীর বাসিন্দা ৫৪৭ জন এবং বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা ৩৫০ জন। এদিকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের সাবেক উপ-পরিচালক অধ্যাপক ডা. এজেএম শামসুদ্দিন চৌধুরী। গত রোববার (২৫ জুলাই) দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রবীণ এ চিকিৎসকের মৃত্যু হয়। সোমবার (২৬ জুলাই) দুপুরে চট্টগ্রামের জামালখান বাইলেইনের শতদল ক্লাবের সামনে একদফা এবং পরে হাটহাজারী উত্তর মার্দাশা এলাকায় দ্বিতীয় দফা জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। জানাজায় চট্টগ্রামের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বিপুল সংখ্যক মানুষ উপস্থিত ছিলেন। বিএমএ চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক ডা. ফয়সাল ইকবাল চৌধুরী বলেন, ‘ডা. এজেএম শামসুদ্দিন চৌধুরী কয়েকদিন আগে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। রবিবার রাতে নগরের ম্যাক্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তিনি চমেকের দ্বিতীয় ব্যাচের ছাত্র ছিলেন। তিনি চমেক হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগের প্রধান ছিলেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। স্ত্রী, এক পুত্র, পুত্রবধূ, কন্যা, জামাতাসহ ৪ নাতি-নাতনি ও অসংখ্য গুনগ্রাহী রয়েছে তাঁর। তাঁর স্ত্রী লেখিকা নিলুফার শামসুদ্দিন চট্টগ্রাম মহিলা কলেজের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপিকা ছিলেন। # ২৬.০৭.২০২১ চট্টগ্রাম #