শিল্প সাহিত্য

লীলাবতী’র কবিতা

দুঃখী জোনাকি 

ধীরে  ধীরে  আমি আমার প্রতিপক্ষ বৃস্টিকে উপেক্ষা করে চলেছি,

আমি যোগদানে এগিয়ে যাচ্ছি দেবদারুদের মিছিলে,

লাল চোখ স্তিমিত আলোতে,

ঠাহর করে চলেছে আনকোড়া অবয়ব।

পেখম মেলে দেয়া বর্ষা কদমের অশ্রু মোচনে ব্যস্ত,

এখানে পুকুর ব্যাপি ব্যাঙ আর মাছেদের স্নান উৎসব,

একটি ঘুরপাক নিয়ে আমি আবারও পূর্বের  স্থানে,

লন্ঠনের আগুনে ভিড় করেছে কয়েকটি  দুঃখী  জোনাকি,

রাতভর সবুজ আলোয় বৃস্টিস্নান করছে রাত পরীরা।

এ জীবনে অসংখ্যবার চা পানে আমি তৃপ্ত হতে পারিনি,

আক্ষেপ আর লোভে পুড়েছে পাপী অন্তর,

আমি পুষে রেখেছি সুদৃঢ় আলিঙ্গন এর অভিলাষ,

শতাব্দী ব্যাপি চুম্বনের বাসনা,

আষাঢ়, মেঘমালা, বৃষ্টি পাতে, আমি ঝড়েছি,

চাঁদের  মতো একাকী  একটি  বাসনা,

লালন  করে নিক্ষিপ্ত একটি লোভী  অন্তর

তলিয়া গেছে জলের অতলে..

 

প্রকৃতি কথা রাখতে জানে…

তুমি বরং ভুলেই যেয়ো,

ভালোবাসাকে করো নাকো সংকীর্ণ,

লেনদেন বাড়িয়ে আমিও চাই না বানিজ্যিক  প্রেম।

মধ্যরাতের কথার শপথ,অপূর্ণ  অংগিকার,

রেখে দিও আক্ষেপের  কৌটায়,

আমাকে ছোট  হতে দিওনা অনুজীবের মতোন,

বরং মধ্যরাতকে উন্মুক্ত  করো,

প্রেমিকা,বেশ্যা উভয়ের জন্য,

উষ্ণতম প্রহর হিসেবে।

একদিন আমার হাহাকারে,

তোমার বাগানে ফুটবেনা ফুল,

আসবেনা কাজল কালো ভ্রমর,

তথাকথিত  প্রেমিকারা খোপায় গুজবে,

নাম না জানা বিদেশী  ফুল,

যাদের রঙ হবে ইষৎ গোলাপি।

তোমার বাগান,বাঁশের বেড়া,

ঘাসে আর আগাছায় পড়ে থাকবে শুন্যতা,

কেবলই  শুন্যতা,নিরেট শুন্যতা।

যে আষাঢ় আমাকে এনেছিলো,

তুমি যেতেও চাইলে সে আষাঢ়ে,

জন্ম নিলো আমার বৃষ্টিবিহীন আষাঢ়,

আকালে পড়লো বাদলদিন,

পৃথিবীর  যে অভিমানী  ফুল দোলনচাঁপা,

সে আর ফুটবেনা,

মেলে দেবেনা পাখি হয়ে সাদা পাপড়ি,

মানুষ  অধিকার ছিনিয়ে নেয় নিঃশব্দে,

অথচ প্রকৃতি  কথা রাখতে জানে…

 

২৩/৬/২০২১