চলমান সংবাদ

আজ কৃষক নেত্রী কমরেড অনিমা সিংহের ৪১তম প্রয়াণ দিবস

কমরেড অনিমা সিংহের আজ ৪১তম প্রয়াণ দিবস। ১৯৮০ সালে এক সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্মকভাবে আহত হওয়ার পর ২ জুলাই  মাত্র ৫২ বছর বয়সে তিনি মৃত্যু বরন করেন। তিনি সুনামগঞ্জের এক মধ্যবিত্ত পরিবারে ১৯২৮ সালের ২১ ফেব্রুয়ারী জন্মগ্রহণ করেছিলেন।  তিনি বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা কমরেড মণি সিংহের সহধর্মিনী।  তাঁর বাবার নাম ছিল অন্নদা প্রসন্ন দাস, তিনি পেশায় একজন চিকিৎসক ছিলেন।  মায়ের নাম ছিল আশালতা দাস।   তখনকার সামাজিক প্রেক্ষাপটে মেয়েদের রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করাটা সহজ ছিলনা। তথাপি তিনি মায়ের সহযোগিতায় সামাজিক ও পারিবারিক বাধাকে অতিক্রম রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তার মা একজন প্রগতিশীল চিন্তার অধিকারী এবং বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনের সমর্থক ছিলেন।

তিনি সিলেট মেডিক্যাল কলেজে পড়ার সময় সক্রিয় রাজনীতির সাথে যুক্ত হন। পরবর্তীতে  কমিউনিস্ট পার্টির সংস্পর্শে আসেন এবং কৃষকদের সংগঠিত করার কাজে নিজেকে যুক্ত করেন। তিনি হাজং কৃষকদের গৌরবোজ্জ্বল টংক প্রথার বিরোদ্ধে লড়াইয়ে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন।

তিনি আত্মগোপন অবস্থায় নানান প্রতিকুলতার মধ্যেও  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় বি.এ এবং ইতিহাসে এম.এ ডিগ্রি লাভ করেন। বিগত শতাব্দীর ৫০ এবং ৬০ এর দশকে কমরেড মণি সিংহ সহ আত্মগোপন অবস্থাতেই কাটান। মহান মুক্তিযুদ্ধেও  তিনি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। তিনি বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরের সংগঠকের ভূমিকা পালন করেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর কৃষক সমিতির সম্পাদিকা নির্বাচিত হন। জীবনে অনেক প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে কাটালেও মার্কবাদের শিক্ষায় তিনি নিজেকে একজন সত্যিকারের বিপ্লবী চেতনার মানুষ হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন।  আমৃত্যু তিনি গ্রামে গ্রামে ঘুরে কৃষকদের সংগঠিত করা ও তাদের ন্যায্য অধিকারের লড়াই এবং শ্রমিক-মেহনতি মানুষের শোষণমুক্ত সমাজ গড়ার জন্য নিবিদিত ভাবে কাজ করে গেছেন।

১৯৭৩ সালে মস্কোতে আয়োজিত বিশ্ব শান্তি সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে অংশগ্রহণ করেন।

# ২ জুলাই ২০২১, প্রগতির যাত্রী ডেস্ক#