চলমান সংবাদ

বৃষ্টিতে চট্টগ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, চরম দুর্ভোগ অটোরিকশা খালে পড়ে দুইজনের মৃত্যু

বৃষ্টিতে চট্টগ্রামের নিম্নাঞ্চলে হাঁটুপানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। নালা ও খালে বাঁধ থাকায় পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে। করোনার সংক্রমণ রোধে লকডাউনে একদিকে নেই গণপরিবহন, অন্যদিকে আষাঢ়ী বর্ষণে সড়কে হাঁটু পানি। এতেই অফিস কিংবা জরুরি কাজে বের হওয়া মানুষ পড়েন চরম ভোগান্তিতে। সড়ক-নালা-খালের পানিতে একাকার হয়ে যাওয়ায় রিকশা উল্টে বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনাও ঘটেছে। রাস্তায় জলাবদ্ধতার কারণে পাশের খাল শনাক্ত করতে না পারায় সিএনজি অটোরিকশা খালে পড়ে গিয়ে চালকসহ দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। একই দুর্ঘটনায় আরও তিনজন আহত হয়েছেন। বুধবার (৩০ জুন) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর পাঁচলাইশ থানার ষোলশহর দুই নম্বর গেট এলাকার চশমা খালে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- অটোরিকশার চালক মো. সুলতান (৩৫) ও যাত্রী খাদিজা বেগম (৬৫)। বুধবার (৩০ জুন) ভোর থেকে চট্টগ্রামে থেমে থেমে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এতে তলিয়ে যায় নগরের বিভিন্ন এলাকা। পুলিশ জানায়, চালক ও চার জন যাত্রী নিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশাটি নগরীর চশমা হিল এলাকা দিয়ে যাচ্ছিল। বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে সড়কে আর খালের পানিতে একাকার হয়ে যায়। সিএনজি অটোরিকশা চালক খালের পাড় শনাক্ত করতে না পারায় অটোরিকশা খালে পড়ে যায়। এতে বৃষ্টির পানির ¯্রােতে গাড়িটি খালে তালিয়ে চলে যায় প্রায় এক কিলোমিটারের মতো। তিন যাত্রী সিএনজি থেকে বের হয়ে আত্মরক্ষা করতে পারলেও এক নারী যাত্রীসহ সিএনজিচালক নিহত হন। পরে দুপুরে পাঁচলাইশ এলাকা থেকে সড়কের পাশের খাল থেকে দুটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত চালক সুলতানের বাসা নগরীর কসমোপলিটন আবাসিক এলাকায়। কর্ণফুলী থানার বাসিন্দা খাদিজা বেগম মেয়রগলি এলাকায় ভাইয়ের বাসায় বেড়াতে এসেছিলেন। বেড়ানো শেষে বাড়ি ফিরছিলেন। স্থানীয় লোকজন ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা মিলে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। ফায়ার সার্ভিসের চট্টগ্রামের উপ-সহকারি পরিচালক নিউটন দাশ বলেন, ‘বড় নালাটি চশমা খাল হিসেবে পরিচিত। সকালে টানা বৃষ্টির পর নালায় পানির ¯্রােত ছিল। নিয়ন্ত্রণ হারানো অটোরিকশাটি সেখানে পড়ে ডুবে যায়। পরে আমাদের টিম গিয়ে পাঁচজনকে উদ্ধার করে। এদের মধ্যে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। আগ্রাবাদসহ অন্য তিন ইউনিটের কর্মীদের সঙ্গে ডুবুরিরা এসে উদ্ধার কাজ পরিচালনা করেন। নগরীর বিভিন্ন এলাকা সরেজমিন দেখা যায়, বৃষ্টিতে নগরের বহদ্দারহাট, দুই নম্বর গেইট, মুহাম্মদপুর, মুরাদপুর, ষোলশহর, কাপাসগোলা, চাক্তাই, বাকলিয়া, ডিসি রোড, রহমতগঞ্জ, কালামিয়া বাজার, হালিশহর, চান্দগাঁওয়ের বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। ডিসি রোডে হাঁটুসমান পানি ওঠে। এদিকে বৃষ্টিপাত ও সড়কে গণপরিবহন না থাকায় চট্টগ্রামে কর্মস্থলগামী মানুষ পড়েন চরম ভোগান্তিতে। চকবাজার থেকে ইপিজেড কারখানার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়া পোশাককর্মী দিদারুল ইসলাম বলেন, আমাদের কারখানা খোলা। কিন্তু কোম্পানির পক্ষ থেকে কোনো গাড়ি দেয়নি। ভিজে ভিজে এখন রিকশা দিয়ে যাচ্ছি। অফিসগামী আসিফ বলেন, নগরের বহদ্দারহাট এলাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি জমে যায়। আমার অফিস নগরের জিইসি এলাকায়। বহদ্দারহাট থেকে সেখানে যেতে মুহাম্মদপুর, মুরাদপুর, দুই নম্বর গেইট এলাকার ময়লা পানি মাড়িয়ে অফিসে যেতে হয়। রিকশা পাওয়া যায় না, পেলেও ভাড়া দ্বিগুণ।

# ৩০.০৬.২০২১ চট্টগ্রাম #