চলমান সংবাদ

গৃহশ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আইএলও কনভেনশন ১৮৯ অনুসমর্থনের আহ্বান

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ-বিলস্ এর উদ্যোগে ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা-আইএলও’র সহযোগিতায় আজ ২৯ জুন ২০২১ (মঙ্গলবার) বিলস্ সেমিনার হলে অনুষ্ঠিত “গৃহশ্রমিকদের জন্য শোভন কাজ সংক্রান্ত আইএলও কনভেনশন-১৮৯ অনুসমর্থনে সুপারিশমালা প্রণয়ন ও ভবিষ্যৎ করণীয়” শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা দেশে ও বিদেশে নির্যাতনের শিকার গৃহশ্রমিকদের সুরক্ষা এবং তাদের অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় গৃহশ্রমিকদের শোভন কাজ সংক্রান্ত আইএলও কনভেনশন ১৮৯ অনুসমর্থনের আহ্বান জানিয়েছেন।
অনুষ্ঠানে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য শামসুন্নাহার ভূঁইয়া, এমপি বলেন, বর্তমানে শ্রম বাজারে নারী শ্রমিকের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এদের অনেকে গৃহশ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন। তাদের জন্য নীতিমালা বা আইএলও কনভেনশন অনুস্বাক্ষর করলেই হবে না, তাদেরকে শ্রম আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। সকল পক্ষ আন্তরিক হলেই এটি সম্ভব। এসময় তিনি বলেন, প্রবাসী নারী শ্রমিকরা কি পরিমান রেমিট্যান্স দেশে পাঠায় এবং আমরা তাদের জন্য কি করছি সেগুলো খতিয়ে দেখা দরকার। তিনি শ্রমিক পাঠানো এবং গ্রহণকারী দেশের জন্য একটি নীতিমালা প্রণয়নের উপর গুরুত্বারোপ করেন।
শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরামের আহ্বায়ক ড. হামিদা হোসেন বলেন, গৃহশ্রমিকদের অভিযোগ জানানোর বিষয়ে একটি সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়া থাকা দরকার, যাতে তারা নির্যাতনের শিকার হলে অভিযোগ জানাতে পারেন। তিনি আইএলও কনভেনশন ১৮৯ অনুসাক্ষরে বেশি বেশি প্রচারণার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপসচিব শেখ মোঃ রেফাত আলী বলেন, আইএলও কনভেনশন অনুসমর্থনের চেয়েও বেশি প্রয়োজন হচ্ছে গৃহশ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। এসময় তিনি গৃহশ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন।
কোভিড-১৯ এর কারনে লক্ষ লক্ষ গৃহশ্রমিক তাদের কাজ হারিয়েছে উল্লেখ করে স্বাগত বক্তব্যে বিলস্ মহাসচিব ও নির্বাহী পরিচালক নজরুল ইসলাম খান বলেন, গৃহশ্রমিকদের নিয়োগ পত্র নেই, নির্দিষ্ট কর্মঘন্টা নেই, নির্দিষ্ট মজুরি নেই, ফলে প্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের মত তারা কোন সুযোগ সুবিধা পান না। এগুলো বিবেচনা করে গৃহশ্রমিকদের শোভন কাজ সম্পর্কিত আইএলও কনভেনশন-১৮৯ অনুসমর্থন করা প্রয়োজন বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।
সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, গৃহশ্রমিকদের কাজের স্বীকৃতি না দিলে নারীদের কাজের স্বীকৃতি আসবে না। তাদের কাজের স্বীকৃতি দিলে সামাজিক মূল্যবোধ তৈরি হবে, আর সে সামাজিক মূল্যবোধ তৈরি করতে এই কনভেনশনটি অনুসমর্থন করা দরকার। তিনি গৃহশ্রমিকদের প্রশিক্ষণের জন্য প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট গঠনের আহ্বান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে বিলস্ চেয়ারম্যান মোঃ হাবিবুর রহমান সিরাজ বলেন, আইএলও কনভেনশন-১৮৯ যে সম্মেলনে গৃহিত হয় সেখানে সভাপতিত্ব করে বাংলাদেশ। যেহেতু এ কনভেনশনের পক্ষে বাংলাদেশ ভোট দিয়েছে সেহেতু এটি অনুস্বাক্ষর করা জরুরি।
বিলস্ নির্বাহী পরিষদ সদস্য শাকিল আকতার চৌধুরীর সঞ্চালনায় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন জাতীয় শ্রমিক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নূর কুতুব আলম মান্নান, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন সভাপতি কামরূল আহসান, এনসিসিডব্লিউই সদস্য সচিব নইমুল আহসান জুয়েল, গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্কের ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়কারী আবুল হোসাইন, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) উধ্বতন পরিসংখ্যান কর্মকর্তা মাসুদ রানা, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার চাইল্ড লেবার রিজিওন্যাল প্রজেক্টের ন্যাশনাল প্রজেক্ট কোঅর্ডিনেটর সৈয়দা মুনিরা সুলতানা, বিলস্ পরিচালক নাজমা ইয়াসমীন প্রমুখ।