চলমান সংবাদ

ভদ্রমানুষের মুখোশের আড়ালে মেহমান সেজে চুরি করে বেড়ান তারা

 ভদ্রমানুষের মুখোশের আড়ালে মেহমান সেজে চুরি করে বেড়ান তারা। যে ভবনে দারোয়ান থাকে না সাধারণত সেখানে তারা প্রবেশ করেন। তবে দারোয়ান থাকা অবস্থায়ও মেহমান সেজে হাতে চিপসের প্যাকেট নিয়ে ভবনে প্রবেশ করেন। যেসব বাসার দরজায় তালা লাগানো থাকে শুধুমাত্র সেসব বাসার তালা কেটে ভিতরে প্রবেশ করে চুরি করেন তারা। সংঘবদ্ধ এই চোর চক্রের হোতা মোহাম্মদ ইমন দীর্ঘ এক যুগে প্রায় ৪শ’ চুরি করেছে। চার বার গ্রেপ্তার হয়ে জামিনে বের হয়ে আবারও চুরির পথ বেছে নেয় সে। আত্মীয়-স্বজনের কাছে সে একজন স্বর্ণ ও সিএনজি ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। আবার যেখানে ভাড়া থাকে সেখানকার লোকদের ব্যবসা আছে বলে দাপটের সাথে পরিচয় দেয় সে। চুরিকৃত স্বর্ণালংকার বিক্রি করে ব্যাংকে জমা রাখে, আবার মাঝে মাঝে স্ত্রীর কাছেও জমা রাখে। এই চুরির টাকা দিয়ে চলছিল সৌখিন জীবনযাপন। তবে তার সৌখিনতার জীবন ও ভদ্র মুখোশের আড়ালে লুকিয়ে করা এসব অবৈধ কর্মকান্ডের ইতি ঘটিয়েছে কোতোয়ালী থানা পুলিশ। দীর্ঘদিন ধরে চুরি করে আসা এই সংঘবদ্ধ চোর চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে কোতোয়ালী থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃরা হলেন, মোহাম্মদ ইমন (৩২) ও তার স্ত্রী শাজাদা আক্তার প্রকাশ সাদিয়া (২০), মোহাম্মদ আশ্রাব (৩৫) ও আনিকা সুলতানা (১৯)। রোববার (২০ জুন) তাদের চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিনের আদালতে হাজির করে পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। আদালত দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পুলিশ জানায়, সম্প্রতি নগরের নন্দনকানন হরিশদত্ত লেইন, আন্দরকিল্লা রাজাপুকুর লেইন ও হেমসন লেইন এলাকার তিনটি বাসায় চুরি করে ইমন ও তার সহযোগীরা। এসময় তাদের কাছ থেকে ৭ ভরি স্বর্ণ ও নগদ ৭৮ হাজার ৯১৫ টাকা উদ্ধার করা হয়। ইমন নগরের বন্দর, হালিশহর, সদরঘাট, বাকলিয়া থানায় চুরির ঘটনায় ২০০৮, ২০১৫, ২০১৬ ও ২০২০ সালে গ্রেপ্তার হয়। তাদের দেয়া স্বীকারোক্তি মোতাবেক রোববার আরো ৯ ভরি স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়। কোতোয়ালী থানার ওসি মোহাম্মদ নেজাম উদ্দীন ভোরের কাগজকে বলেন, গ্রেপ্তার ইমন পেশাদার চোর। সে ১২ বছর ধরে চুরি পেশায় জড়িত। একটি চুরির পরে কিছুদিনের জন্য আরেকটি চুরির কাজ বন্ধ করে রাখে। শনিবার নগরের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। রোববার তাদের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিনের আদালতে হাজির করে পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। আদালত দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ওসি বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া আসামি আশ্রাব ইপিজেড থানা এলাকায় একটি তোয়ালে ফ্যাক্টরিতে চাকরি করে। চাকরির পাশাপাশি ইমনের যোগসাজশে চুরি করে। তারা প্রতি মাসের ৭-৮ তারিখের মধ্যে বেশ কয়েকটি চুরি সংঘটিত করে সপ্তাহখানেক কাজ বন্ধ রাখে। সপ্তাহ পর পুনরায় আবার চুরি করে। তিনি আরও বলেন, চুরির পাশাপাশি ইমন সিএনজি অটোরিকশা ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবসা করে। তার পরিবারের লোকজন তাকে চিনে স্বর্ণ এবং সিএনজি অটোরিকশা ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবসায়ী হিসেবে। অন্যদিকে আশ্রাবকে তার পরিবারের লোকজন চেনে একজন চাকরিজীবী হিসেবে। # ২০.০৬.২০২১ চট্টগ্রাম #