পাট, সুতা, বস্ত্রকল, শ্রমিক-কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদের সভায়

আধুনিকায়ন করে পাটকল চালু, বদলি শ্রমিকসহ সকলের বকেয়া পাওনা পরিশোধ, পিপিপি বা ব্যক্তিমালিকানার নামে লুটপাট বন্ধ, বিরাষ্ট্রীয়করণ বাতিলের দাবিতে আজ ১৯ জুন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে পাটকল শ্রমিক ও কর্মচারীরা সমাবেশ কর্মসূচি পালন করেছে।
সকাল ১১টায় পাট, সুতা, বস্ত্রকল, শ্রমিক-কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক শ্রমিকনেতা সহিদুল্লাহ চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে ঘোষণাপত্র পাঠ করেন শ্রমিকনেতা কামরূল আহসান, বক্তব্য রাখেন শ্রমিকনেতা আসলাম খান, শরিফুজ্জামান শরিফ, আব্দুল গাফ্ফার, হাসু বেগম প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। সমাবেশে সংহতি জানিয়েছে ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক দিপক শীল।
শ্রমিক নেতা সহিদুল্লাহ চৌধুরী বলেন, গত বছরের ২৮ জুন আকস্মিক এক ঘোষণার মধ্য দিয়ে সরকার অবশিষ্ট ২৫টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধ করেছিল। আজ এই জুন মাসে তা এক বছরে গড়ালো। এতে সেদিন স্থায়ী, বদলী ও ক্যাজুয়াল-সব মিলিয়ে প্রায় ৫১ হাজার পাটকল শ্রমিককে বেকার করে দেয়া হয়েছিল। পাটকল বন্ধ করার একবছর পেরিয়ে গেলেও তা বাস্তবায়নের কোন দৃশ্যমান লক্ষণ নেই। বন্ধকৃত মিলের শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধে শতকড়া ৫০ ভাগ নগদ অর্থ এবং বাকি ৫০ ভাগ সঞ্চয় স্কিমের মাধ্যমে তিন মাস অন্তর মুনাফা পাওয়ার যে ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছিল; শ্রমিকরা সেই অর্থ এখনো পায়নি। ইতিমধ্যে তাদের প্রাপ্ত নগদ টাকা সংসারের জন্য খরচের ফলে তা শুন্য হতে চলেছে। অন্যদিকে বদলী শ্রমিকদের কোন পাওনা পরিশোধ করা হয়নি। ফলে তারা মানবেতর জীবন অতিবাহিত করছেন। গত একবছর ধরে তারা তাদের পাওনার জন্য ধর্না দিয়ে বিফল হয়েছেন।
নেতৃবন্দ বলেন, সরকার ৬ লক্ষ কোটি টাকার অধিক বাজেট ঘোষণা করেছে। ঐ বাজেটে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল চালু ও শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের কোন দিকনির্দেশনা নেই। বিশেষ বরাদ্দও নেই । তাই শ্রমিক নেতারা রাষ্ট্রায়াত্ত পাটকল চালু, আধুনিকায়ন ও উন্নত প্রযুক্তির যন্ত্রপাতির সংযোজন এবং উপযুক্ত ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা ও শ্রমিক কর্মচারীদের সমুদয় বকেয়া পরিশোধের আহবান জানান। এজন্য তারা বাজেটে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা ও পর্যাপ্ত বরাদ্দেরও দাবী জানান ।
সমাবেশের ঘোষণায় অবিলম্বে পাট-সুতা বস্ত্রকলের শ্রমিকদের সমুদয় পাওনা পরিশোধ করা, পিপিপি বা লিজ পরিহার করে উন্নত ও আধুনিক প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি সংযোজন করে রাষ্ট্রায়ত খাতে পাটকল চালু করা, ১২০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে পাটকল আধুনিকায়ন করার দাবী জানানো হয়।
উপরোক্ত দাবীর সমর্থনে সচেতন দেশবাসীকে পাট, পাটকল, পাটশ্রমিক, পাটচাষী ও পাটশিল্প বাঁচানোর সংগ্রাম জোরদার করার আহবান জানানো হয়।