চলমান সংবাদ

চমেক ডেন্টাল ইউনিটে অনির্দিষ্টকালের শাটডাউন ঘোষণা

-ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, দাবি—পূর্ণাঙ্গ ডেন্টাল কলেজ প্রতিষ্ঠা ও অবকাঠামো সংস্কার


নিজস্ব প্রতিবেদক | চট্টগ্রাম | ১৫ অক্টোবর ২০২৫

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ডেন্টাল ইউনিটে অবকাঠামোগত সংকট, যন্ত্রপাতির অভাব ও শিক্ষা-চিকিৎসার মান অবনতির প্রতিবাদে ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দিয়েছেন অনির্দিষ্টকালের জন্য ‘কমপ্লিট শাটডাউন’। মঙ্গলবার বিকেলে ইউনিটের সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা এ ঘোষণা দেন।

তবে রোগীদের ভোগান্তি কমাতে আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, শুধুমাত্র জরুরি বিভাগের সীমিত সেবা চালু থাকবে।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা অভিযোগ করেন, ডেন্টাল ইউনিটে রোগীর চাপ প্রতিদিন বাড়ছে, কিন্তু প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও অবকাঠামো সেই তুলনায় অনেক পিছিয়ে। তিন মাস আগে পর্যন্ত সিরিয়াল দিতে হয়, অথচ জীবাণুমুক্তকরণ ব্যবস্থা না থাকায় অনেক সময় একই যন্ত্রপাতি একাধিক রোগীর মুখে ব্যবহার করতে হচ্ছে—যা গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ।

ইন্টার্ন চিকিৎসক ফিরোজ আহমেদ বলেন, “ছয়টি ব্যাচের শিক্ষার্থীর জন্য শ্রেণিকক্ষ মাত্র চারটি। পর্যাপ্ত চেয়ার-টেবিল নেই, যন্ত্রপাতি সীমিত, জীবাণুমুক্ত করার উপযুক্ত ব্যবস্থা নেই। এতে শিক্ষা ও চিকিৎসা—দুটোই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।”

অন্য ইন্টার্ন চিকিৎসক আবরার আল ফয়সাল বলেন, “চট্টগ্রামে ডেন্টাল রোগী দিন দিন বাড়ছে, কিন্তু আমাদের যৌক্তিক দাবি দীর্ঘদিন উপেক্ষিত। আমরা রোগীদের কষ্ট বুঝি, কিন্তু এই আন্দোলন শেষ পর্যন্ত তাদেরই কল্যাণে।”

আন্দোলনকারীরা চার দফা দাবি জানিয়েছেন—
১. পূর্ণাঙ্গ ডেন্টাল কলেজ প্রতিষ্ঠা,
২. বর্তমান অবকাঠামোর সংস্কার,
৩. প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি বৃদ্ধি,
৪. জীবাণুমুক্তকরণ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন।

ডেন্টাল ইউনিটের প্রধান ডা. মনোজ কুমার বড়ুয়া আন্দোলনকারীদের দাবিকে যৌক্তিক বলে উল্লেখ করে বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তর বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে।”

এদিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। কলেজ প্রশাসনও বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে বলে জানা গেছে।

শিক্ষার্থী ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের অনড় অবস্থান, আর কর্তৃপক্ষের আশ্বাস—এ অবস্থায় চমেকের ডেন্টাল ইউনিটে কবে পুনরায় কার্যক্রম শুরু হবে, তা এখনো অনিশ্চিত।