নতুন বাংলাদেশ: আমাদের কাংখিত স্বপ্ন ও চ্যালেঞ্জ

৫ আগস্ট নতুন বাংলাদেশ গঠনের স্বপ্নের সূচনা করেছে। এটি একটি দুর্নীতিমুক্ত, মানবিকতা ও সুশাসনের প্রতীক হিসেবে গড়ে উঠতে চায়। আমরা প্রত্যাশা করছি এমন একটি বাংলাদেশ, যেখানে সকল নাগরিকের অধিকার সুরক্ষিত থাকবে এবং সামাজিক সমতা প্রতিষ্ঠিত হবে।

সম্প্রতি বন্যার সময় ছাত্রদের পক্ষ থেকে ত্রাণের জন্য যে সহযোগিতার ডাক দেওয়া হয়েছিল, তার প্রতি সমাজের সাড়া ছিল নজিরবিহীন। প্রায় ১২ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হয়, কিন্তু সেই টাকা বণ্টনের ক্ষেত্রে যে অনিয়ম ও প্রশ্ন উঠেছে, তা আমাদের সমাজের ন্যায়ের অনুভূতির উপর বড় ধরনের আঘাত করেছে। সমন্বয়কদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা জমা রাখার ঘটনা আমাদের সকলের জন্য একটি ভাবনার বিষয়। এটি একদিকে যেমন আমাদের সঠিক পথ অনুসরণের প্রয়োজনীয়তা নির্দেশ করে, তেমনি আমাদের সতর্ক হতে উদ্বুদ্ধ করে।

নতুন বাংলাদেশের পথচলায় আমাদের সঠিক নেতৃত্বের প্রয়োজন। যখন সাহায্যের টাকার সঠিক ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন উঠবে, তখন সমাজের সচেতন নাগরিকদের কণ্ঠস্বর উঠতে বাধ্য। ত্রাণ তহবিলে জমা থাকা ৮ কোটি টাকা অবশেষে প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে দেয়ার ঘোষণা দেয়া হলেও, এই ঘটনা আমাদের মনে করে দেয় যে, নেতৃত্বের কাজ-কর্মে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা অপরিহার্য।

নতুন বাংলাদেশ গঠনের এই যাত্রায় আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যদি একসাথে কাজ করি, তবে নতুন বাংলাদেশ আমাদের স্বপ্ন নয়, বাস্তবতায় পরিণত হবে। কিন্তু এই যাত্রায় আমাদের ভুল বোঝাবুঝি এবং অনিয়মের পথ ত্যাগ করতে হবে।

এছাড়া, অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রম নিয়েও সমাজের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। যদিও দুই মাস সময় অল্প, তবুও কার্যকর উদ্যোগের অভাব হতাশার জন্ম দিচ্ছে। সকালের সূর্যের আলো দেখে বোঝা যায় পুরো দিন কেমন যাবে—অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রমে দ্রুততা ও দৃশ্যমানতার অভাব দেশের মানুষের মনে চরম অস্থিরতা সৃষ্টি করছে।

নতুন বাংলাদেশের জন্য আমাদের যে স্বপ্ন তৈরি হয়েছে, তা বাস্তবায়নের জন্য নেতৃত্বের ওপর আমাদের আস্থা ও প্রত্যাশা বজায় চাই। এই যাত্রা যেন আমাদের সমাজের জন্য এক নতুন ভোরের সূচনা করে, যেখানে সকলের নিরাপত্তা ও উন্নয়ন হবে অগ্রাধিকার।

আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা একদিন অবশ্যই একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলবে—যা হবে আমাদের কাংখিত স্বপ্নের প্রতিফলন।

(লেখাঃ সংগঠক, টিইউসি, কেন্দ্রীয় কমিটি)