চলমান সংবাদ

চট্টগ্রামে গান-কথামালায় শ্রমিকের অধিকার আদায়ে সংস্কৃতির সংগ্রাম জোরদারের আহ্বান

গান, নৃত্য, আবৃত্তি, নাটক, আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে মে দিবস উদযাপন করেছে চট্টগ্রামের প্রগতিশীল বিভিন্ন গণসংগঠনের সম্মিলিত মোর্চা ‘মে দিবস উদযাপন পরিষদ’। এই কর্মসূচি থেকে শ্রমজীবীদের অধিকার আদায়ে সংস্কৃতির সংগ্রাম জোরদারের আহ্বান জানানো হয়েছে। সোমবার (০১ মে) বিকেলে নগরীর চেরাগি চত্বরে অনুষ্ঠিত কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন পরিষদের আহবায়ক ডা. চন্দন দাশ। বক্তব্য রাখেন শ্রমিক নেতা নুরুচ্ছাফা ভূঁইয়া ও চট্টগ্রাম ফিল্ম ইনস্টিটিউটের সভাপতি শৈবাল চৌধুরী। নুরুচ্ছাফা ভূঁইয়া বলেন, ‘দেশে চোখ ধাঁধানো নানা উন্নয়ন প্রকল্প হচ্ছে। দেশ নাকি উন্নত হচ্ছে, এগিয়ে যাচ্ছে। বাস্তবতা হচ্ছে, উন্নয়নের গল্প যত দীর্ঘ হচ্ছে, শোষণ-বঞ্চনাও তত বাড়ছে। দেশ যদি উন্নত হয়, তাহলে এখনও কেন শ্রমিকদের মজুরির জন্য রাজপথে নামতে হয় ? কেন পুনর্বাসন ছাড়া হকারদের উচ্ছেদ করা হয় ? কেন আজ দেশে শ্রমজীবী মানুষ আরও গরীব হচ্ছে আর পুঁজিপতিরা আরও বড়লোক হচ্ছে ? মালিক কেন শ্রমিকের ন্যায্য পাওনা দেয় না ? গরীব মানুষ মেরে বড়লোক হওয়ার এই প্রবণতা, দেশকে উন্নত করার এই প্রবণতা রুখতে হবে। ইতিহাস বলে, রাজপথের লড়াই-সংগ্রাম ছাড়া কখনও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। লড়াই-সংগ্রামের মধ্য দিয়েই অধিকার আদায় করতে হবে।’ চন্দন দাশ বলেন, ‘আমরা গানের মধ্য দিয়ে, কবিতার মধ্য দিয়ে, সংস্কৃতির মধ্য দিয়ে এদেশের মেহনতি মানুষকে সংগ্রামের ডাক দিয়ে যাচ্ছি। এদেশের একজন মানুষও যাতে তার ন্যায্য অধিকারটুকু পায়, প্রতিটি শ্রমজীবী মানুষ যাতে একজন সুনাগরিকের মর্যাদা নিয়ে বাঁচতে পারে, সেজন্য সংগ্রামের প্রয়োজন। সেই সংগ্রাম হতে হবে সংস্কৃতির সংগ্রাম। সংস্কৃতি ছাড়া রাজনীতি অর্থহীন। মানুষের মধ্যে সাংস্কৃতিক চেতনাবোধ জাগ্রত করতে না পারলে লড়াই-সংগ্রাম বেগবান হবে না।’ শৈবাল চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চার মূলনীতি ছিল গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতা। এই মূলমন্ত্রে দেশের গরীব-মেহনতি, মধ্যবিত্ত, ধনী সবার কথা আছে। শোষণ-বঞ্চনা থেকে মুক্তির মূলমন্ত্র মুক্তিযুদ্ধের চার মূলনীতি। আমরা একটি সাম্যের বাংলাদেশ চেয়েছিলাম, যেখানে ধনীরা গরীবের ওপর নির্যাতন-জুলুম করবে না, যেখানে ধর্মের নামের মানুষের ওপর নির্যাতন হবে না। মুক্তিযুদ্ধের ধারায় যদি দেশকে নিয়ে যেতে হয়, তাহলে মানুষের ওপর মানুষের শোষণ থাকতে পারবে না।’ বোধন আবৃত্তি পরিষদের সহ সাধারণ সম্পাদক মাইনুল আজম চৌধুরীর সঞ্চালনায় পরিষদের পক্ষ থেকে সম্মিলিত গণসঙ্গীতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মে দিবসের আয়োজন। আলোচনা সভার পর পরিষদভুক্ত সংগঠন বোধন আবৃত্তি পরিষদের শিল্পীরা বৃন্দ ও দলীয় আবৃত্তিতে অংশ নেন। ফেইম সদস্যরা ম্যাক্সিম গোর্কি রচিত ‘মা’ নাটকের অংশবিশেষ পরিবেশন করেন। ‘ওড়িশি অ্যান্ড টেগোর ড্যান্স মুভমেন্ট সেন্টার’ ও ‘কৃত্তিকা নৃত্যালয়’র শিল্পীরা সম্মিলিত নৃত্যে অংশ নেন। সম্মিলিত সঙ্গীতের অংশ নেন জেলা সাংস্কৃতিক ইউনিয়নের শিল্পীরা।

# ০৩/০৫/২০২৩, চট্টগ্রাম