un

ফ্লাইওভারের প্রাণভোমরা খুলে নিচ্ছে মাদকাসক্ত চক্র: বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা

চট্টগ্রাম নগরীর ব্যস্ততম ফ্লাইওভার এলাকাগুলোর একটিতে চরম ঝুঁকিপূর্ণ ও উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। দুই নম্বর গেট মোড় এলাকায় মুরাদপুর–লালখানবাজার ফ্লাইওভারের গার্ডারে ব্যবহৃত বিশেষ স্টিলের নাট–বল্টু খুলে নিচ্ছে মাদকাসক্ত একদল ব্যক্তি। এসব বল্টু খুলে ভাঙারির দোকানে বিক্রি করে দিচ্ছে তারা।

চোখের সামনে, শত শত মানুষের উপস্থিতিতে, বানরের মতো ঝুলে তারা খুলে নিচ্ছে এই মূল্যবান ও ভারী বল্টুগুলো। এতে শুধু তাদের জীবনই হুমকির মুখে পড়ছে না, ফ্লাইওভারের স্থায়িত্ব ও নিরাপত্তাও মারাত্মকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মুরাদপুর থেকে লালখানবাজার পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ফ্লাইওভারটি নগরীর যানজট নিরসনে নির্মাণ করা হয়। এতে বায়েজিদ রোডের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে নির্মিত হয় দুটি র‌্যাম্প ও একটি লুব। বিশেষ বাঁকযুক্ত এই স্থাপনায় ব্যবহার করা হয়েছে চীন থেকে আমদানিকৃত উন্নতমানের স্টিল গার্ডার, যাতে স্থাপন করা হয়েছে কয়েক হাজার শক্তিশালী নাট ও বল্টু। প্রতিটি বল্টুর ওজন কয়েক কেজি এবং এগুলোর ওপর পুরো গার্ডার ও ফ্লাইওভারের ভারসাম্য নির্ভর করে।

এ বিষয়ে সিডিএ’র নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক মাহফুজুর রহমান জানান, “দু’বছর আগে এমন একটি পরিস্থিতির মুখে আমরা সব নাট–বল্টু পরীক্ষা করে টাইট করে দিয়েছিলাম। এখন ফ্লাইওভারটি সিটি কর্পোরেশনের রক্ষণাবেক্ষণে রয়েছে, তাই তারাই এখন দায়িত্বশীল।”

তিনি বলেন, “আমরা বিষয়টি সিটি কর্পোরেশনকে জানাচ্ছি। এটা একটি ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। নাট–বল্টু খুলে ফেলা মানে পুরো ফ্লাইওভারকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়া। হাজার হাজার মানুষের জীবনের ঝুঁকি এখানে জড়িয়ে আছে।”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘদিন ফ্লাইওভারের ওপর ভারি যানবাহন চলাচলের ফলে কিছু নাট–বল্টু ঢিলে হয়ে যায়। এই সুযোগ নিচ্ছে কিছু মাদকাসক্ত চক্র। স্থানীয়দের অনেকে দেখেও কিছু বলছেন না, যার ফলে অপরাধীরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে।

তড়িৎ ব্যবস্থা না নিলে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করছে নগরবাসী।

পড়ুন:  ইমারত নির্মাণ শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন ও রেশনিং ব্যবস্থার দাবি – ইনসাব চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত