চলমান সংবাদ

বিলস এর প্রতিবেদন

-চট্টগ্রামে ২০২৩ সালে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এবং সড়ক দুর্ঘটনায় ৫১.৬৯% শ্রমিক নিহত হয়

কর্মক্ষেত্রে নানা দুর্ঘটনায় প্রায় প্রতিদিনই শ্রমিক আহত বা নিহত হওয়ার খবর ছাপা হয় পত্রিকায়। সেসব খবর পর্যালোচনা করে ২০২৩ সালে চট্টগ্রাম জেলায় বিভিন্ন খাতে কর্মরত অবস্থায় বিভিন্ন দূর্ঘটনায় ১১৮ জন শ্রমিক নিহত ও ১৩৪ জন শ্রমিক আহত হওয়ার একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরে সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ-বিলস।

প্রকাশিত রিপোর্টে দেখা যায় সর্বাধিক ৩৩ জন নির্মাণ শ্রমিক,২৪ পরিবহন খাতের  ও ১১ জন কৃষি খাতের  শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এছাড়াও, ৬ জন অক্সিজেন কারখানার শ্রমিক , জন দোকান কর্মচারী, ৩ জন এনজিও কর্মী, ৩ জন নিরাপত্তা কর্মী, ২ জন ইপিজেড কর্মী, ১ জন কাগজ কারখানা শ্রমিক, ১ জন স্টিল মিল শ্রমিক, ৪ জন মৎস্য শ্রমিক, ১ জন জেটি সরকার, ২ জন চা শ্রমিক, ১ জন পোষাক শ্রমিক, ৭ জন জাহাজভাঙ্গা শ্রমিক ও ১১ জন অন্যান্য খাতের শ্রমিক নিহত হয়েছেন একই বছর।

রিপোর্ট পর্যালোচনা করে দেখা যায়, কর্মস্থলে সড়ক র্ঘটনা ও বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে শ্রমিকদের মৃত্যু হার সবচেয়ে বেশি। মোট নিহত ১১৮ জন শ্রমিকের ৩৩ জনই নিহত হয়েছেন বিভিন্ন সড়ক দুর্ঘটনায়। যা মোট মৃত্যুর ২৭.৯৭ শতাংশ। অন্যদিকে চট্টগ্রামে কর্মস্থলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু বরণ করেছেন ২৮ জন। যা মোট নিহতের ২৩.৭৩ শতাংশ।

এতে, শুধুমাত্র বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এবং সড়ক দুর্ঘটনায় ৫১.৬৯% শ্রমিক নিহত হয়।

রিপোর্টে আরো উল্লেখ করা হয়, কর্মস্থলে দূর্ঘটনায় সর্বোচ্চ ২৩ জন নিহত হয়েছেন চট্টগ্রাম নগরীতে। এরপরে ২২ জন শ্রমিকের মৃত্যু নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে শিল্প জোন হিসেবে বিখ্যাত সীতাকুণ্ড উপজেলা। ১১ শ্রমিকের মৃত্যু নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে হাটহাজারী উপজেলা। এছাড়াও, লোহাগড়ায় ১০ জন, আনোয়ারায় ৯ জন, রাউজানে ৮ জন, বাঁশখালীতে ৬ জন, মিরসরাইতে ৬ জন, বোয়ালখালীতে ৫ জন, সাতকানিয়ায় ৪ জন, পটিয়ায় ৪ জন, রাঙ্গুনিয়া ও পটিয়ায় ৩ জন করে শ্রমিক নিহত হয়েছেন।

বিলসের লেবার রিসোর্স অ্যান্ড সাপোর্ট সেন্টারের তথ্যমতে, শিল্পঘন এলাকা হওয়ার কারণে চট্টগ্রামে শ্রমিকদের কাজের পরিবেশ নিয়ে বরাবরের মত প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। মূলত ভারী ও ঝুঁকি শিল্প গড়ে ওঠার কারণে শ্রমিক মৃত্যু বা শ্রমিকের কর্মপরিবেশ নিয়ে আলোচনায় থাকে চট্টগ্রাম। শ্রমিকদের সুষ্ঠু কর্মপরিবেশ নিশ্চিতে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে বলে মনে করছে সংগঠনটি।

পেশাগত স্বাস্থ্য সুরক্ষা তথ্য কেন্দ্রের সমন্বয়ক ফজলুল কবির মিন্টু টিবিএসকে বলেন, শ্রমিকরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে
সেফটি নিয়ে কাজ করেন না। ভারী বা ঝুঁকিপূর্ণ কাজের জন্য শ্রমিকদের যেসব পোশাক দরকার সেগুলো সেই প্রতিষ্ঠানের সরবরাহ করার কথা
থাকলেও কিছু ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানগুলোর গাফিলতি থাকে। কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদেরও গাফিলতিও আছে। শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিত না হলে শ্রমিকদের কাজের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে না সেজন্য প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি শ্রমিকদেরও নিরাপত্তা নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে।’