চলমান সংবাদ

লিবিয়া থেকে ফিরছেন আরো ২৬৩ বাংলাদেশি

২৮ নভেম্বর লিবিয়া থেকে ফিরেছেন ১৪৩ অনিয়মিত বাংলাদেশি৷ ছবি: বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

লিবিয়ায় আটকাবস্থায় ও অনিয়মিতভাবে থাকা আরো ২৬৩ বাংলাদেশিকে ফেরাচ্ছে সরকার৷ বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই তথ্য জানিয়েছে৷

বিভিন্নভাবে লিবিয়ায় যাওয়ার পর অনিয়মিত হয়ে পড়া এবং দেশটির আটককেন্দ্রে থাকা বাংলাদেশিদের দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ চলছে৷ তার অংশ হিসেবে ৫ ডিসেম্বর আরেকটি দলকে ফেরানো হচ্ছে৷

রোববার বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানানো হয়৷ মন্ত্রণালয়ের বিকল্প মুখপাত্র মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, ‘‘পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ দূতাবাস, ত্রিপোলির প্রচেষ্টায় এবং আর্ন্তজাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম-এর আর্থিক সহযোগিতায় লিবিয়ায় আটকে পড়া বাংলাদেশিদের দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে৷ এর ধারাবহিকতায় আগামী ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে আরো ২৬৩ জন অনিয়মিত বাংলাদেশি নাগরিককে লিবিয়া থেকে বাংলাদেশে প্রত্যাবাসন করা হবে৷’’

এর আগে ২৮ নভেম্বর একই প্রক্রিয়ায় ত্রিপোলির আইনজেরা ডিটেনশন সেন্টারে আটক ১৪৩ জন অনিয়মিত বাংলাদেশি নাগরিককে ফেরত আনা হয়৷ ৩০ নভেম্বর আনা হয়েছে ১১০ জনকে৷ ত্রিপোলিভিত্তিক বুরাক এয়ারের চাটার্ড ফ্লাইটে তাদের দেশে প্রত্যাবাসন করা হয় বলে ব্রিফিংয়ে জানান মোহাম্মদ রফিকুল আলম৷ তিনি আরো জানান ফেরত আসাদের আইওএম এর পক্ষ থেকে জনপ্রতি ৫,৮৯৬ টাকা এবং খাবার দেয়া হয়৷

ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ রফিকুল আলম জানান পর্যায়ক্রমে লিবিয়ায় বন্দি সব বাংলাদেশিদের ফেরত আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে৷ ছবি: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ রফিকুল আলম জানান পর্যায়ক্রমে লিবিয়ায় বন্দি সব বাংলাদেশিদের ফেরত আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে৷ ছবি: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

কিভাবে লিবিয়ায় এত বাংলাদেশি?

অনিয়মিত পথে ইউরোপে পৌঁছানোর আশায় বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিকেরা বিভিন্ন উপায়ে লিবিয়ায় পাড়ি জমান৷ সেখান থেকে নৌকায় করে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইটালি পৌঁছানোর চেষ্টা করেন৷ আইওএম এর হিসাবে ২০২২ সালে লিবিয়া থেকে সমুদ্রপথে ইটালিগামীদের ১৪ শতাংশের বেশি ছিল বাংলাদেশি, যা দেশগুলোর মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ৷ বিভিন্ন সময়ে লিবিয়া থেকে ভূমধ্যসাগর পার হতে গিয়ে অনেক বাংলাদেশি মৃত্যুবরণও করেছেন৷

চলতি বছরের মার্চে প্রকাশিত আইওএম এর হিসাব বলছে, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ২১ হাজার ৬৫৩ জন বাংলাদেশি লিবিয়ায় ছিলেন৷ সে বছর চার হাজার ৪৪৮ বাংলাদেশিকে সমুদ্রযাত্রায় বাধা দেয়া হয়৷ গোটা বছর দুই হাজার বাংলাদেশি দেশটির বিভিন্ন আটক কেন্দ্রে বন্দি ছিলেন৷

মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, বাংলাদেশ থেকে ইমিগ্রেশন পেরুনো পর্যন্ত হয়ত তারা আইন ঠিকমতো অনুসরণ করেই যাচ্ছেন৷ পরে সমস্যা হয়ে যাচ্ছে ট্রানজিট পয়েন্ট বা লেন্ডিং পয়েন্ট যেটাই থাকুক না কেন ওখানে পৌঁছানোর পর তারা যেকোনভাবেই হোক ভিক্টিম হয়ে যাচ্ছেন৷

লিবিয়ায় কতজন অনিয়মিত বাংলাদেশি আটক আছেন সে তথ্য না জানালেও তাদের সবাইকে পর্যায়ক্রমে নিয়ে আসা হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি৷

বিভিন্ন গণমাধ্যম ও মানবাধিকার সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী মানবপাচারের শিকার হয়ে লিবিয়ায় আসা অভিবাসীরা অবর্ণনীয় দুর্ভোগের শিকার হন৷ বিভিন্ন সময়ে মানবপাচারকারীরা তাদের আটক করে নির্যাতন করার পাশাপাশি দেশে থাকা পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা করে৷ এছাড়াও দেশটির বিভিন্ন আটককেন্দ্রে অমানবিক পরিবেশে থাকতে হয়৷

এফএস/কেএম