চলমান সংবাদ

আন্তর্জাতিক নার্স দিবস আজ

আন্তর্জাতিক নার্স দিবস আজ

আধুনিক নার্সিংয়ের জনক ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলের জন্মদিন আজ। তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রতিবছর ১২ মে আন্তর্জাতিক নার্স দিবস উদযাপন করা হয়। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘আমাদের নার্স, আমাদের ভবিষ্যৎ।’

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও নানা আয়োজনে দিবসটি পালন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় এবারও নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদফতর কেন্দ্রীয়ভাবে দিবসটি পালন করবে। এছাড়াও বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন, সোসাইটি ফর নার্সেস সেফটি অ্যান্ড রাইটসসহ নার্সদের অন্যান্য সংগঠনও দিবসটি উপলক্ষে শোভাযাত্রাসহ নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

দিবসটিকে ঘিরে সোসাইটি ফর নার্সেস সেফটি অ্যান্ড রাইটসের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নার্সিং একটি আন্তর্জাতিক মহৎ পেশা। বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিল কর্তৃক নিবন্ধিত রেজিস্টার্ড নার্সরা স্বাস্থ্যখাতে নিজেদের নিয়োজিত রাখছেন। বিশেষকরে করোনা মহামারি মোকাবিলা, শতভাগ ভ্যাকসিন প্রদানসহ দেশের যেকোনো সংকটকালে নার্সরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। করোনা রোগীর সেবা দিতে গিয়ে ৩৩ জন নার্স মৃত্যুবরণ করেছেন। আক্রান্ত হয়েছিলেন প্রায় ৬ হাজার নার্স। নার্সদের এই অসামান্য ও কঠোর পরিশ্রমে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাত আজ বিশ্বের দরবারে প্রশংসনীয়।

এতে আরও বলা হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুযায়ী একজন চিকিৎসকের বিপরীতে তিনজন রেজিস্টার্ড নার্স প্রয়োজন। বাংলাদেশে মোট ১ লাখ ৩৬ হাজার নিবন্ধিত চিকিৎসকের বিপরীতে নার্স রয়েছে মাত্র ৭৭ হাজার ৮৩৮ জন। দেশের প্রেক্ষাপটে চিকিৎসকের অনুপাতে বর্তমানে নার্স থাকার কথা ৪ লাখ ৮ হাজার জন। কিন্তু দুঃখের বিষয় চিকিৎসকদের অনুপাতে নার্সের ঘাটতি ৩ লাখ ৩০ হাজার ১৬২ জন। এরমধ্যে সরকারি হাসপাতালে কর্মরত নার্সের সংখ্যা মাত্র ৪২ হাজার ৩৩০ জন। যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী, প্রতি ১০ হাজার জনসংখ্যার বিপরীতে ২৩ জন নার্স থাকার কথা। যদিও বাংলাদেশে এই সংখ্যা মাত্র ২ জন। এ অবস্থায় আন্তর্জাতিক নার্স দিবসের প্রতিপাদ্য ধারণ করে বাংলাদেশে নিরবচ্ছিন্ন স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে সরকারিভাবে অধিক সংখ্যক নার্স নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে সোসাইটি ফর নার্সেস সেফটি অ্যান্ড রাইটসসহ বিভিন্ন নার্স সংগঠন। নার্সিং শিক্ষা ও এই সেক্টরকে আধুনিকায়ন করাসহ বিশেষ এই পেশায় নিয়োজিতদের সকল দাবি পূরণের দাবি জানিয়েছে তারা।

উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক ধাত্রী পরিষদ বা ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অব নার্সেস (আইসিএন) ১৯৬৫ সাল থেকে আন্তর্জাতিক নার্স দিবস উদযাপন করে আসছে। ১৯৫৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও কল্যাণ বিভাগের একজন কর্মকর্তা ডরোথি সাদারল্যান্ড তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোয়াইট ডি আইজেনহাওয়ারে কাছে ধাত্রী দিবস ঘোষণা করার প্রস্তাব করেন। তবে তিনি তা অনুমোদন করেননি।

পরবর্তীতে ১৯৭৪ সালের জানুয়ারি মাসে, ১২ মে দিনটিকে নার্স দিবস হিসেবে উদযাপনের জন্য নির্বাচন করা হয়। কারণ, এই দিনে আধুনিক নার্সিংয়ের প্রতিষ্ঠাতা ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলের জন্মবার্ষিকী। ১৮২০ সালের এই তারিখে আধুনিক নার্সিং পরিষেবার পথপ্রদর্শক ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলের জন্ম হয়েছিল। এই দিবস পালনের মাধ্যমে সম্মান জানানো হয় সেই নারীকে যিনি তার কর্মের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা করেছেন- নার্সিং একটি পেশা নয়, সেবা।