বিজ্ঞান প্রযুক্তি

বিজ্ঞান ভাবনা (৯২): পঞ্জিকা বিতর্ক

– বিজন সাহা

প্রতিবারের মত আবারও বাংলা দিনপঞ্জি নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। যতটা না দিনপঞ্জি তারচেয়ে বেশি কে এি পঞ্জিকা প্রবর্তন করল সেটা নিয়ে। ২০১৫ সালে চারদিনের এক সফরে আবুধাবি গেছিলাম, উদ্দেশ্য কসমোলজির উপরে কথা বলা। এর বছর কয়েক আগে খুব সম্ভবত সুইডেন থেকে এক পিএইচডি ছাত্রী চিঠি লেখে আমার এক পেপার সম্পর্কে। ওর নিজের থিসিসের কাজে সেটা কিভাবে ব্যবহার করা যায় সেটা জানতে চেয়ে। এরপর আর যোগাযোগ ছিল না। ২০১৪ সালে হঠাৎ করেই ওর মেইল পাই। ও আমাকে আমন্ত্রণ জানায় আবুধাবি নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটিতে চারদিনের সফরে। যাহোক, ওখানে গিয়ে জানতে পারি ও তুরস্কের। সেমিনারের পরে কোন রেস্টুরেন্টে সময় কাটানোর নিয়ম। অনেককেই বলল, কেউ রাজি হল না, শেষ পর্যন্ত আমরা দু’ জন গেলাম। পরে বুঝলাম সমস্যাটা কোথায়। ইউনিভার্সিটি শহরের বাইরে, তাই রাতে ফেরার সমস্যা। ও থাকতো শহরে। আমাকে তাই একা ফিরতে হবে। তবে কথা সেখানে নয়। খাবার ফ্রি, তবে পানীয় (!) নিজেদের।
– প্রফেসর, আমি ড্রিঙ্ক করেন? আমি নেব আপনার জন্য কিছু।
– ১০০ গ্রাম কনিয়াক।
আসলে ওটার দরকার ছিল না, তবে কেন যেন মনে হল আরব দেশে আবার কবে আসা হবে আর এখানে বিভিন্ন বাধানিষেধ, তাই বলছে যখন খাই। ওখানে ওর সাথে কথা বলতে বলতেই একটা ধারণা মাথায় এলো। সেটাও ওর এক প্রশ্নের জবাবে।
– আপনি ঈশ্বরে বিশ্বাস করেন?
– দেখ, বিশ্বাস আর অবিশ্বাস দুটই বিশ্বাস। আমি পদার্থবিদ – চেষ্টা করি সবকিছু গাণিতিক যুক্তি দিয়ে বুঝতে।

এই প্রথম আমার এই ব্যাখ্যাটা মাথায় এলো। আগে বলতাম না, বিশ্বাস করি না।
– আপনি কিছু উত্তর দিলেন না।
– দেখ, পদার্থবিদ হিসেবে আমাদের কাজ সৃষ্টির রহস্য উদ্ধার করা। সে অর্থে আমি বা আমরা সত্যসন্ধানী। ছোটবেলায় যখন ধর্মের বই পড়তাম, সেখানেও সেই সত্যকে আবিষ্কারের কথাই বলা হয়েছে।
– আপনি আবার এড়িয়ে যাচ্ছেন।
– না, আমি তোমাকে বোঝাতে চেষ্টা করছি তোমার বিশ্বাসে আঘাত না করে। ধর তুমি বা আমি অসুস্থ হলাম। ওষুধ কিনলাম। এখন আমাদের কোনটা বেশি প্রয়োজন – কে এই ওষুধটা আবিষ্কার করল সেটা, নাকি কিভাবে ওষুধটা ব্যবহার করতে হবে সেটা? যদি আবিষ্কারকের নাম জানি ভালো, কিন্তু না জানলেও মহাভারত অশুদ্ধ হবে না। কিন্তু ওষুধটা কিভাবে ব্যবহার করতে হবে সেটা না জানলে সমূহ বিপদের সম্মুখীন হতে হবে। কসমোলজির একজন ছাত্র হিসেবে এখন আমি বা আমরা চেষ্টা করছি মহাবিশ্ব কিভাবে কাজ করে সেটা জানতে, জানতে চাইছি কিভাবে সে বিবর্তিত হয়, এর স্ট্রাকচার কেমন, এর ভবিষ্যতই বা কি এসব প্রশ্নের উত্তর পেতে। এর উৎপত্তির কথা যে জানতে চাই না তা নয়। কিন্তু কে তৈরি করল সেই প্রশ্ন করি না। কারণ শেষের প্রশ্নের উত্তর না জানলেও চলবে, কিন্তু বাকি প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজেই কিন্তু আমরা আজকের পর্যায়ে এসেছি। তাই তোমাকে সবার আগে যে প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হবে তা হল – কেন? কিভাবে? এটাই পদার্থবিদ্যার মূল প্রশ্ন। কে? এটা ততটা গুরুত্বপূর্ণ নয়।

আপনাদের মনে হতে পারে আমি কেন ভান ভানতে শিবের গীত গাইছি। কোথায় পঞ্জিকা আর কোথায় কসমলজি। ভুল। পঞ্জিকার ধারণা কসমোলজির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আমরা যদি কে বাংলা পঞ্জিকার প্রচলন করেছিলেন সেই প্রশ্ন না করে কেন সেটা করা হয়েছিল, সেই প্রশ্ন করি সমস্যা অনেক কমবে আর আমরা সত্যের পথে আরও দুই কদম এগিয়ে যেতে পারব। এটা অনেকটা আমাদের সমাজে কে স্বাধীনতার ঘোষণা করেছিলেন সেই প্রশ্নের মত। এটা দুই পক্ষের অনুসারীদের জন্য, এমনকি দেশের ইতিহাসের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সবচেয়ে বড় যে সত্যটা এর পেছনে লুকিয়ে আছে তা হল – স্বাধীনতা ঘোষণা ছিল অবজেক্টিভ রিয়ালিটি, পরিস্থিতি বাধ্য করেছে বাংলার মানুষকে স্বাধীনতার জন্য অস্ত্র হাতে নিতে, ঘোষণাটা ছিল সময়ের দাবি। আর আজকের স্বাধীন বাংলাদেশ সেই আকাঙ্খার ফসল। সেই অর্থে বাংলার আপামর জনতা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিল আর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাড়ে সাত কোটি মানুষের মুখপাত্র হয়ে সেই বাণী উচ্চারণ করেছিলেন। কথা প্রসঙ্গে বলে রাখি নিউটনের মাথার আপেল পড়ার আগেও সব আপেল তো বটেই অন্যান্য সব কিছুই মাটিতে পড়ত, অনেকের মাথায় এর আগেও অনেক কাঁঠাল পড়েছে আর অন্যেরা মহা আনন্দে সেই কাঁঠাল খেয়েছে, তবে নিউটন প্রথম ব্যাখ্যা করেছেন কেন আপেল তাঁর মাথায় পড়েছিল। একই ভাবে প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকেই পৃথিবী সূর্যের চারিদিকে ঘুরে, শীত, বসন্ত, গ্রীষ্ম, হেমন্ত আসে। সেটা শুধু মানুষের জন্যই নয়, অন্যান্য প্রাণীর জীবনেও। তবে ওরা এসব নিয়ে ভাবে না, কারণ ওরা নিজেদের খাদ্যের জন্য সম্পূর্ণ ভাবে প্রকৃতির উপর নির্ভর করে। আদিম মানুষ সেটাই করত। কিন্তু যখন থেকেই সে চাষাবাদ শুরু করল, তার দরকার হল পর্যাপ্ত সূর্যের আলো, বৃষ্টির জল – ফলে সে বাধ্য হল প্রকৃতির এই পরিবর্তনগুলো খেয়াল করতে। এভাবেই তৈরি হল ক্যালেন্ডার। প্রথম ক্যালেন্ডারের খবর পাওয়া যায় প্রাচীন মিশরে, আসেরিয়ায়,  ব্যবিলনে। চীনে ও ভারতে মনে হয় কিছুটা পরে। হয়তো বা মায়া বা অ্যাজটেক সভ্যতার ক্যালেন্ডারগুলোও অনেক প্রাচীন, তবে এ ব্যাপারে আমার জ্ঞান খুবই কম। তাছাড়া এখানে আমি ক্যালেন্ডারের ইতিহাস নিয়ে যতটা না চিন্তিত তারচেয়ে বেশি কেন ক্যালেন্ডার দরকার হল সেটা দেখতে ব্যস্ত। আর যেহেতু শশাঙ্ক বা আকবরের অনেক আগে থেকেই এই ভূমিতে মানুষের বসবাস ছিল, ছিল চাষাবাদ – তাই এখানে যে পঞ্জিকার ধারণা ছিল সেটা বলাই বাহুল্য। উল্লেখ করা যেতে পারে যে রামায়ণ বা মহাভারতের মত প্রাচীন গ্রন্থে বিভিন্ন বার ও মাসের উল্লেখ আছে। অথবা ধরুন রামের চৌদ্দ বছরের বনবাসের কথা আছে। রাম ঐতিহাসিক ব্যক্তি কিনা সেটা বড় কথা নয়, বড় কথা যে সেই মহাকাব্যে বছরের ধারণার কথা আছে। কোন কোন গ্রীক ঐতিহাসিকের মতে সপ্তর্ষি পঞ্জিকার বছর গননা শুরু খ্রিস্টপূর্ব ৬৬৭৬ সাল থেকে। বিক্রমাদিত্যের সম্মানে করা বিক্রম পঞ্জিকার শুরু খ্রিস্টপূর্ব ৭৬ সালে। তাই ভারতবর্ষ নামক এই ভূখণ্ডে যে পঞ্জিকার ধারণা অনেক আগেই ছিল সেটা পরিষ্কার। আমরা যদি মনে রাখি যে সময়ের শুরু প্রায় ১৩৮০ কোটি বছর আগে, আর পৃথিবীর জন্ম ৪৫০ কোটি বছর আগে, মানব সভ্যতার ইতিহাস হাজার হাজার বছরের – তাহলে আর শশাঙ্ক আকবরের বিতর্ক থাকবে না। রাজারা আইন করেন নিজেদের শাসন, শোষণকে খাজনা আদায়ের মাধ্যমে পাকাপোক্ত করার জন্য, জনগণ পঞ্জিকা তৈরি করে ফসল ফলানোর জন্য। আমার ছোটবেলায়ও দেখেছি গ্রাম বাংলার কৃষক আকাশের মেঘ আর বাতাসের গতি দেখেই বলে দিত কোন মাস আর কি ফসল বুনতে হবে। তারা লোকনাথ ডাইরেক্টরি পঞ্জিকার ধার ধারত না। সেদিক থেকে দেখলে অফিসিয়াল পঞ্জিকার পাশাপাশি লোক পঞ্জিকা থাকে আর সেটা নির্ভর করে একান্তই সাধারণ মানুষদের উপর।

পড়ুন:  বিজ্ঞান ভাবনা (৯১): নববর্ষ -বিজন সাহা

এই যে আজ আমরা বিভিন্ন আবিষ্কার নিয়ে গর্ব করি কিন্তু সেই সব আবিষ্কার কি সম্ভব হত যদি না আমাদের পূর্বপুরুষেরা পাথরের অস্ত্র তৈরি করতে না শিখত, আগুন জ্বালাতে না শিখত? আজকের আমরা আসলে আমাদের হাজার হাজার বছরের অতীতের আমরার যোগফল। অতীতের হাত ধরেই আমরা বর্তমানে আসি আর আমাদের বর্তমান ধীরে ধীরে অনাগত, অনিশ্চিত ভবিষ্যতকে গ্রাস করে অতীতের গর্ভে হারিয়ে যায়। আমাদের অতীত একমাত্র বাস্তব, বর্তমান ক্ষণস্থায়ী আর ভবিষ্যৎ স্বপ্নময় যার বাস্তব রূপ নেই। আগামীকাল যেমন কোন দিনই আসে না, তেমনি আসে না ভবিষ্যৎ। ভবিষ্যৎ শুধু মুহূর্তের জন্য বর্তমান হয়ে অতীতে হারিয়ে যায় যাকে আর কখনই ফিরে পাওয়া যায় না। এটাকে আপনি স্রোতস্বিনী নদীতে এক নৌকার সাথে কল্পনা করতে পারেন। আপনি উজান বেয়ে চলছেন নৌকায় বেয়ে। সামনের বিস্তীর্ণ জলরাশি ভবিষ্যৎ, কিন্তু আপনি সেখানে যেতে পারছেন না, স্রোতের টানে আপনি একই জায়গায় ঠায় দাঁড়িয়ে আছেন, আর সামনের জলরাশি প্রচণ্ড বেগে পেছনে চলে যাচ্ছে। ঠিক এভাবেই সময় অনবরত অতীত হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কতক্ষণ আমরা এই স্রোতের সাথে যুদ্ধ করে এগিয়ে যেতে পারব সেটা নির্ভর করে অতীতের উপর। তাই অতীতকে অস্বীকার করা মানে ভবিষ্যতকে অস্বীকার করা। জীবন মানে অভিজ্ঞতা। অভিজ্ঞতা আমাদের শিক্ষা দেয়, আমাদের পথ দেখায় – তবে সেটা পুরোটাই নির্ভর করে আমরা সেই অতীতকে কিভাবে নেব, তার উপর। অতীতকে অস্বীকার করা মানে অতীত থেকে শিক্ষা না নেয়া। শিক্ষা না নেয়া মানে অজ্ঞ থাকা, অন্ধকারে থাকা। আজ যারা সাময়িক সন্তুষ্টির জন্য অতীতকে সিলেক্টিভ ভাবে নেয় তারা আসলে নিজেদের সার্বিক অস্তিত্বকে বিপদের মুখে ঠেলে দেয়।

 

যদি আমরা দিনপঞ্জির গোঁড়ার ইতিহাসে চলে যাই, দেখব সেটা তৈরি হয়েছে সাধারণ মানুষের দ্বারা, তাদের জীবিকার কারণে। এভাবেই এসেছে চান্দ্র ও সৌর ক্যালেন্ডার। সভ্যতার শুরুতে, যখন মানুষ মূলত শিকারি ছিল তখন তাদের জন্য চন্দ্র, গ্রহ, নক্ষত্র ছিল বাতিঘরের মত। চাঁদ বলত জোয়ার ভাঁটার গল্প।  রাতের আঁধারে এরা তাদের পথ দেখাত। কিন্তু যখন থেকে মানুষ শিকার বাদ দিয়ে চাষাবাদ করতে শিখল, অচিরেই টের পেল  জোয়ার ভাঁটার চেয়েও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ঋতু পরিবর্তন আর সেটা নির্ভর করে সূর্যের অবস্থানের উপর। তখন মানুষ  তৈরি করল সৌর পঞ্জিকা। এ সবই তৈরি হয়েছিল প্রাচীন মিশরে, আসিরিয়া আর ব্যাবিলনে। আসলে আমরা সব সময়ই ইতিহাস লিখতে চাই কোন রাজা বাদশাহকে কেন্দ্র করে। মহাবিশ্ব সৃষ্টির পেছনে যেমন সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের হাত দেখি, তেমনি যেকোনো কাজের পেছনে দেখি শক্তিশালী কোন লোককে। আর তিনি নিঃসন্দেহে হবেন রাজা বা বাদশাহ। অথচ আমরা জানি ইতিহাস তৈরি করে জনগণ, সাধারণ মানুষ। সব দেশে, সব যুগে। সেখানে ক্ষনজন্মা মানুষ তা তিনি লেনিন হন, গান্ধী, জিন্নাহ বা শেখ মুজিব হন – এরা কাজ করেন ক্যাটালিস্ট হিসেবে। যখন থেকে আমরা মানুষকে তাদের প্রাপ্য পাওনা দেব, দেখবেন শাশাঙ্ক, আকবর এসব প্রশ্ন আসবে না। তাছাড়া এই বিতর্ক আর যাই হোক বাঙালি জাতির মর্যাদা বাড়ায় না। শশাঙ্ক নিজে বাঙালি ছিলেন কিনা জানি না, তবে তিনি এই অঞ্চলের শাসক ছিলেন। আকবর মুঘল সম্রাট, সমরখন্দের উজবেক জাতির, দিল্লির সম্রাট। কিন্তু এ নাম গুলো আসছে মূলত ধর্মীয় প্রেক্ষাপট থেকে। আগেই বলেছি, প্রাচীন মহাকাব্যগুলো সাক্ষ্য দেয় যে বার আর মাসের নাম আকবরের আমদানি করা নয়, অনেক আগে থেকেই এ এলাকায় এসব নাম প্রচলিত ছিল। এ এলাকায় নিজস্ব পঞ্জিকা ছিল আগে থেকেই, হয়তো বা লিখিত নয়। আকবর যেটা করেছেন তা হল নিজের খাজনা আদায়ের স্বার্থে স্থানীয় পঞ্জিকা ব্যবহার করেছেন আর বর্ষ গননা শুরু করেছেন হিজরি সনের শুরু থেকে। সম্রাট আকবর ৯৬৩ হিজরী সালে দিল্লির সিংহাসনে আরোহণ করেন। ১৪৩০ থেকে ৯৬৩ বিয়োগ করে পাই ৪৬৭ বছর। চান্দ্র ও সৌর বছরের পার্থক্য ১০ – ১১ দিন। একটু হিসেব করলে দেখা যায় ৩২ সৌর বছর ৩৩  চান্দ্র বছরের সমান। এর মানে ৪৬৭ সৌর বছরে অতিরিক্ত ১৪,৫ চান্দ্র বছর। খেয়াল করলে দেখবেন এখন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ১৪৪৪ হিজরী সাল। তাই বর্তমান বর্ষ গণনা আকবরের সময়ে শুরু হবার সমূহ সম্ভাবনা আছে, যদিও সেটা কোন মতেই প্রমাণ করে না যে রাজা শশাঙ্ক কোন পঞ্জিকা প্রবর্তন করেন নাই বা তার আগেও এ ভূখণ্ডে কোন পঞ্জিকা ছিল না। খ্রিস্টীয় পঞ্জিকায় ডিসেম্বর মানে দশ। এ থেকে বোঝা যায় কোন এক সময় মার্চ মাসে হয়তোবা নতুন বছরের শুরু হত। মার্চ বসন্তের প্রথম মাস, নব জীবনের শুরু। তাছাড়া ২১ থেকে ২৩ মার্চ বসন্ত অয়নকাল – একটা গুরুত্বপূর্ণ মহাজাগতিক দিন। সেটাও মার্চ মাসে নববর্ষের পক্ষেই বলে। তাই পঞ্জিকা থাকলেও শাসক বা যাজকেরা যে সেটা বদলান তার প্রমাণ অনেক। জুলিয়ান ও গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার তার জ্বলন্ত উদাহরণ। আমরা পরের পর্বে এ নিয়ে আলোচনা করব।

গবেষক, জয়েন্ট ইনস্টিটিউট ফর নিউক্লিয়ার রিসার্চ, দুবনা
শিক্ষক, গণ মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয়, মস্কো, রাশিয়া