চলমান সংবাদ

আস্ত সেতু ভেঙে রড চুরি!

-পানছড়ির দুর্গম চেঙ্গী ও লোগাং ইউনিয়নে একে একে উধাও চারটি পাকা সেতু

খাগড়াছড়ির পানছড়িতে সরকারি অর্থায়নে নির্মিত চারটি পাকা সেতুর রড প্রকাশ্যে চুরি হয়ে গেছে। দিনে দুপুরে এসব সেতু ভেঙে রড খুলে নিয়ে গেলেও এখনো জড়িতদের খুঁজে বের করতে পারেনি প্রশাসন। দোষীদের খুঁজতে পানছড়ি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা।

সরেজমিনে দেখা যায়, খাগড়াছড়ির পানছড়িতে চেঙ্গী ও লোগাং ইউনিয়নে স্থানীয় বাসিন্দাদের যাতায়াতের জন্য ২০১৬–১৭ অর্থ বছরে ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে দুইটি পাকা সেতু নির্মাণ করে ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়। অন্য দুইটি করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড। সম্প্রতি এই এলাকায় সীমান্ত সড়ক নির্মিত হওয়ায় সেতুগুলো যোগাযোগের বিকল্প মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছিল। তবে চলতি মাসের শুরুতেই সরকারি অর্থায়নে নির্মিত এসব সেতু ভেঙে রড চুরি করে নিয়ে গেছে দুবৃর্ত্তরা। প্রকাশ্যে সেতু ভেঙে রড চুরি করে নিয়ে গেলেও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এই ঘটনায় হতবাক স্থানীয়রা।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কয়েকজন শ্রমিক সেতু ভেঙে রড নিয়ে গেছে। তাদের কাউকে চিনি না। সেতু ভাঙার কাজে খাগড়াছড়ি জেলা সদর থেকে শ্রমিকদের নিয়ে আসা হয়েছে। আমরা আরও মনে করেছিলাম সরকারি লোকজন এসে হয়ত সেতু সংস্কারে কাজ করছে। পরে দেখি পুরো সেতুই গায়েব, যারা ভাঙছিল তারাও লোহা–লক্কড় নিয়ে উধাও।

ঘটনার পর ঐ এলাকা পরিদর্শন করেছে উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। এই ঘটনায় পানছড়ি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছে পানছড়ি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুস সালাম। সেতু ভেঙে রড চুরি ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার দাবি করেছেন তিনি। আব্দুস সালাম জানান, ঘটনাটি শোনার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। যেহেতু কাউকে সনাক্ত করা যায়নি সেকারণে অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে গত ৯ মার্চ পানছড়ি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছি।

পানছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুনুর রশিদ বলেন, প্রকল্প কর্মকর্তার জিডির ভিত্তিতে আমরা আদালতের কাছে তদন্তের অনুমতি চেয়েছি। আদালত অনুমতি দিলে তদন্ত শুরু করব।

দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার নাঈমুল হক। সরকারি সম্পত্তি চুরি করার ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জেলা প্রশাসন মোহাম্মদ সহিদুজ্জামান। তিনি বলেন, বিষয়টি আমরা তদন্তের জন্য নির্দেশ দিয়েছি। যারা এর সঙ্গে জড়িত

থাকবে তাদের গ্রেপ্তার করা হবে। সেতু ভেঙে রড চুরি হওয়ার বিষয়ে স্থানীয় প্রভাবশালী ঠিকাদারদের একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট জড়িত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।