বিজ্ঞান প্রযুক্তি

বিজ্ঞান ভাবনা(৮২): শিক্ষার শিখা জ্বলে উঠুক

– বিজন সাহা

এই যে আমরা হাজারে হাজারে স্বেচ্ছায় নিজ দেশ ছেড়ে বিদেশে চলে যাচ্ছি, বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আমরা যখন ইউরোপ আমেরিকায় পাড়ি জমাই আমাদের অন্য রকম স্বপ্ন থাকে। কিন্তু এসব দেশ বদলে গেছে, বদলাচ্ছে। সেটা আমরা কতটুকু গ্রহণ করতে রাজী আছি? রাশিয়ায় ইউরোপীয় সিস্টেম নিয়ে অনেকদিন থেকেই শুধু সরকারি ভাবেই নয় জনগণের মধ্যেও ক্ষোভ ছিল। আসলে সরকার নিজেই বোলন সিস্টেম চালু করে, জনতার মতামতে নয়। এখানে পশ্চিমা বিশ্বের সাথে যা নিয়ে সবচেয়ে বেশি দ্বিমত দেখা দেয় সেটা হল এলজিবিটি সোসাইটি। আমি সোভিয়েত আমলেও দেখেছি, এখনও দেখি সমাজের বিভিন্ন পর্যায়ে ভিন্ন যৌন চিন্তার মানুষেরা কৃতিত্বের সাথে কাজ করছেন, সরকারি পুরস্কার পাচ্ছেন। তবে তাদের ওপেনলি এসবের প্রোপ্যাগান্ডা করতে দেওয়া হয় না। আর অপ্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে এই প্রোপ্যাগান্ডা আইনত দণ্ডনীয়। এখানে ধর্মীয় বা অন্যান্য যুক্তির চেয়েও যেটা বেশি সামনে আসে তা হল লোকসংখ্যার অপ্রতুলতা। এখানে প্রতিটি সন্তান জন্মের জন্য ভালো অংকের টাকা দেওয়া হয়। আমাদের দেশে যেমন লোক সংখ্যা কমাতে উৎসাহিত করা হয়, এখানে তার উল্টো। তাই এরা যে এলজিবিটি প্রচারের বিরোধিতা করবে সেটাই স্বাভাবিক। বছর দেড়েক আগে প্রেসিডেন্ট বাইডেন গর্বের সাথে বললেন তাঁর প্রশাসনে সব চেয়ে বেশি এলজিবিটি সদস্য। আমার মনে হয় প্রশাসনের ভালোমন্দ যদি তার সদস্যরা কোন সোসাইটির সদস্য তার উপর নির্ভর করে তাহলে সে প্রশাসন সম্পর্কে ভালো কিছু বলা যাবে না। আমার মনে পড়ে নব্বুইয়ের দশকের প্রথম দিকের কথা। আমাদের রেক্টর ফ্যাকাল্টিতে এসেছেন, বক্তব্য রাখছেন ছাত্রদের সামনে। এক পর্যায়ে বললেন সেই সব ছাত্রদের কথা যারা তখন অর্থনৈতিক ভাবে সাফল্য লাভ করেছে, হয়েছে বিশাল বিশাল ব্যবসার মালিক। সেই সময় টাকাটাই আসল। টাকাই নির্ধারণ করছে সমাজে কার অবস্থান কোথায়। সোভিয়েত আমলে ছিলও ঠিক উল্টোটা। এর পর আমার বক্তব্য ছিল। আমি তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়ে বললাম, আমাদের প্রচুর আলুম্নাই বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালো ভালো পদে সম্মানের সাথে কাজ করছে। আপনি যদি তাদের কথা বলতেন আমরা আরও বেশি গর্ববোধ করতাম। হতে পারে, আমি হয়তো ততটা প্রগতিশীল নই। তবে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের ওই বক্তব্য এক ধরণের দিক নির্দেশনা, কোন দিকে যাবে আমেরিকা সেটা জানানো। আজ এমনকি হলিউডে যেকোনো সিনেমায় শুনি নির্দিষ্ট সংখ্যক আফ্রো আমেরিকান, এলজিবিটি সদস্য এসব থাকতে হবে। মনে পড়ে এপেরথাইড শাসন থেকে মুক্তি পাবার পর দক্ষিণ আফ্রিকার কথা যখন কোটার কারণে অনেক যোগ্য হোয়াইট ক্রিকেটার দলে জায়গা পেত না। এটা সে দেশের ক্রিকেটে সংকট ডেকে আনে। গণতন্ত্র একসময় মানুষের মেধার সম্মান দিয়েছে। আমেরিকান ড্রীমের মূল মন্ত্র যে কারো সফল হবার সুযোগ। অবশ্যই সমাজের অবহেলিত মানুষদের উপরে ওঠার সুযোগ দিতে হবে, তবে সেটা কোটা করে নয়। সবাইকে তার মেধা অনুযায়ী গড়ে তুলতে হবে। যেটা সোভিয়েত ইউনিয়ন পেরেছিল। আজকাল আমেরিকা ও পশ্চিমা বিশ্ব সোভিয়েত ইউনিয়নের খারাপ দিকগুলো, যেমন অপছন্দের সংবাদ মাধ্যম ব্যান করা, আগ্রহভরে গ্রহণ করছে, অথচ সেখান থেকে শিক্ষণীয় জিনিষগুলো এড়িয়ে যাচ্ছে। আর বর্তমান বাস্তবতায় আমেরিকার যাওয়া মানে বিশ্বের যাওয়া। যেতে না চাইলেও ঘাড়ে ধরে নিয়ে যাবে। আজ আমাদের দেশের বাবা-মারা স্বপ্ন দেখেন তাদের ছেলেমেয়েরা ইউরোপ আমেরিকায় পড়াশুনা করছে, চাকরি করছে, সেখানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু আজকের ইউরোপ আমেরিকা আর আগের অবস্থায় নেই। এখন সেখানে ছেলেমেয়েরা চাইলেই নিজেদের লিঙ্গ নির্ধারণ করতে পারে। অনেকে হুজুগে নিজেদের লিঙ্গ বদলাচ্ছে কিন্তু বাবা মা হিসেবে আপনার কিছুই করার নেই। এক বা দুই জেনারেশন পরে আপনার উত্তরসূরি যখন নতুন হাওয়ায় পাল তুলে চলতে থাকবে সেটা আপনার ভালো নাও লাগতে পারে। তাই সব মিলিয়ে ভাবার সময় এসেছে কিভাবে নিজেদের প্রতিভা নিজ দেশেই ব্যবহার করা যায়। কিন্তু কেউ এর বিরুদ্ধে মুখ খুলছে না ভয়ে। কী ভয়? অন্যেরা কি বলবে। কিন্তু কেউ মুখ খুললে যে তার পেছনে বিশাল সমর্থন মেলে তার প্রমাণ কিছুদিন আগের এক ঘটনা। ফিলাডেলফিয়া হকি টীমের সদস্য ইভান প্রভরভ যখন এলজিবিটি আন্দোলনের সমর্থনে রংধনু পোশাক পরতে অস্বীকার করে প্রথমে সমালোচিত হলেও পরে প্রচুর সমর্থন পায়। এই রাশান হকি প্লেয়ারের জার্সি প্রচুর জনপ্রিয়তা লাভ করে। এই ঘটনার পরে নিউ ইয়র্ক রেঞ্জার্সের খেলয়াররা এ ধরণের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে অস্বীকার করে। এর অর্থ সমাজে ট্র্যাডিশনাল ভ্যালু এখনও সমাদৃত, কিন্তু শাসক শ্রেণী মানুষের উপর তাদের খামখেয়ালী চাপিয়ে দিচ্ছে।

আশির দশক। তখন মাঝে মধ্যে বিভিন্ন কাজে দূতাবাসে যেতাম। একদিন সেখানে গেলে এক কর্মচারী প্রচণ্ড আনন্দের সাথে জানালেন যে তার ছেলে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব পেয়েছে। এখনও অনেকেই ইউরোপ বা আমেরিকার পাসপোর্ট পাওয়াকে জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জনের একটা মনে করে। প্রতিটি না হলেও অনেক বাবা মা স্বপ্ন দেখেন তাদের ছেলেমেয়েরা এসব দেশের নাগরিক হচ্ছে। আর সেটাই যদি হয় দেশের উন্নয়ন দিয়ে তাদের কি হবে? আমরা যদি আমাদের ভবিষ্যৎ দেশের সাথে জড়াতে না পারি, বিদেশই যদি আমাদের ভবিষ্যৎ স্বপ্নভূমি হয় কি লাভ দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য কিছু করে? সমস্যা হল আমাদের অনেক বাবা মাই  ইউরোপ আমেরিকাকে সেই আগের মতই মনে করেন। তাদের কাছে এসব দেশ এখনও সভ্যতার ধারক ও বাহক। আমরা যে ইউরোপিয়ান কালচারের কথা বলি সেটা মূলত গড়ে উঠেছিল সামন্ত যুগে ও পুঁজিবাদের প্রথম যুগে। এর সাথে যোগ হয়েছিল আধুনিক বিজ্ঞান। রাজনীতি সেখানে উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করেছিল মাত্র। আজ যখন রাজনীতি ও প্রচার মাধ্যম এ সবই  বৃহৎ পুঁজির গোলাম তখন তাদের পক্ষে সহজ হচ্ছে সংস্কৃতিতে বিপ্লব আনতে। কিন্তু পয়সা দিয়ে তো সব হয় না। রুশ বা অন্য কোন সাহিত্য বা সংস্কৃতি আইন করে বাতিল করা যায়, কিন্তু ডিক্রি জারি করে তা সৃষ্টি করা যায় না। তাহলে তো পূর্ব পাকিস্তানের মুসলমান কবি সাহিত্যিকরা রবীন্দ্র সঙ্গীত রচনা করতে পারতেন পাকিস্তানি শাসকদের নির্দেশে। নিঃসন্দেহে আমাদের ফ্লয়েড হত্যার বিচার চাইতে হবে, তবে সেটা হবে বিচার বহির্ভূত হত্যার বিচার চাওয়া, সেটা হবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। তাই বলে তাকে আমরা আইকন বানাতে পারি না কারণ সেটা হবে মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রদের মত সত্যিকারের আইকনদের অবমাননা। সেটা হবে সমাজের অবক্ষয়। আর এটাই চলছে। তাই দেশ থেকে এসব দেশে মগজ পাচার করার আগে আমাদের ভাবতে হবে নিও লিবারেল ওয়েস্ট আমাদের জন্য সঠিক জায়গা নাকি ভালো হয় আমাদের নিজের দেশটাকেই ভালো ভাবে গড়ে তুললে। আমরা যদি আমাদের সন্তানদের গণতন্ত্রের, বাক স্বাধীনতার খোঁজে সুদূর বিদেশে পাঠাতে পারি অনেক ক্ষেত্রেই অনিশ্চিত ভবিষ্যতের পানে তাহলে আমরা কেন নিজেদের দেশেই গণতন্ত্রের জন্য, বাক স্বাধীনতার জন্য লড়াই করতে পারব না?

যে কেউই প্রশ্ন করতে পারে যে তুমি তো ওসব দেশে থাকনা তাহলে কিভাবে জান আসলে কী ঘটছে ওসব দেশে। বা যা জান সেটা তো রুশ প্রোপ্যাগান্ডা হতে পারে। প্রশ্নগুলো অমুলক নয়। তাছাড়া আমার যে সমস্ত বন্ধুবান্ধব সেখানে থাকে তারা প্রায় সবাই উচ্চ শিক্ষিত, সংস্কৃতমনা, সমাজের উপরের তলার মানুষ। তবে এটাও তো ঠিক শুধু এদের দিয়েই সমাজ গঠিত নয়। শুধু এদের দেখেই যদি কোন বিদেশী বাংলাদেশকে জানতে চায় বা বাংলাদেশ সম্পর্কে কোন ধারণা পেতে চায় সেই বাংলাদেশ আর বাস্তবের বাংলাদেশ তো আর এক হবে না। এখানেও তাই। যদি আগে আমরা শুধু সরকারি বা সরকারি অনুমোদনপ্রাপ্ত রেডিও, টিভির মাধ্যমে কোন দেশ সম্পর্কে জানতাম তাহলে আজ ইন্টারনেটের কল্যাণে এর বাইরেও সাধারণ মানুষের জীবন সম্পর্কে অনেক কিছুই জানা যায়। অনেক খবর হয়তো অথেনটিক নয়, তারপরেও বিভিন্ন বিষয়ে বিভিন্ন লোকের প্রতিক্রিয়া দেখে সমাজ সম্পর্কে কমবেশি একটা ধারণা পাওয়া যায়। ইদানীং কালের মীটু, বিএলএম, এলজিবিটি এসব মুভমেন্ট কিছুটা হলেও জানতে দেয় সমাজের অবস্থা কেমন। মনে পরে ১৯৭১ সালে আকাশবাণীর পাশাপাশি আমরা বিবিসি আর ভোয়ার খবর শোনার জন্য উদগ্রীব হয়ে থাকতাম। তখন পশ্চিমা সব কিছুই ছিল বিশ্বাসযোগ্য। এরপর ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারির পরে সংবাদ মাধ্যম আরও বেশি করে মানুষের মনে স্থান পায়। মনে করা হত যে সংবাদ মাধ্যম সত্যের জন্য লড়াই করে। তারা নিরপেক্ষ। তাদের খবর অবজেক্টিভ। কিন্তু যখন থেকেই মাল্টি আর ট্র্যান্স ন্যাশনাল কোম্পানিগুলো সংবাদ মাধ্যমের নিয়ন্ত্রণ নিল তখন তারা আর সত্যের পথে না চলে স্বার্থের পথে গেল। প্রয়োজন অনুযায়ী তারা নিজেরাই খবর তৈরি শুরু করল। সেটা আমরা দেখেছি কলিন পাউয়েলের ক্ষেত্রে। সেখানে গোয়েন্দা সংস্থার পাশাপাশি সংবাদ মাধ্যম কম ভূমিকা পালন করেনি। ধর্মপুত্র যুধিষ্ঠির যেমন দ্রোণাচার্যকে অশ্বত্থামা হত বলে বিভ্রান্ত করেছিলেন এখনকার সংবাদ মাধ্যমগুলো তেমনি বিভিন্ন খবরের ভুল ইন্টারপ্রেশন করে জনগণকে বোকা বানায়। আসলে বর্তমানে সব কিছুর পেছনে ক্ষমতা আর অর্থের লোভ এমনভাবে কাজ করে যে মানুষ অনায়াসে অন্যায় করতে পারে। এখানে একটা কথা বলা দরকার। আমরা বলি একটা দেশ কতটুকু গণতান্ত্রিক সেটা জানতে হলে আমাদের দেখতে হবে সেসব দেশের বিভিন্ন মাইনরিটি গোষ্ঠী কতটুকু ভাল আছে। সেদিক থেকে সরকার বিএলএম, মীটু, এলজিবিটি এসব আন্দলনকে সমর্থন করবে তাতে খারাপের কিছু নেই। কিন্তু অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় সোভিয়েত ইউনিয়নে ছিল সর্বহারার একনায়কতন্ত্র আর পশ্চিমা বিশ্বে এখন বিএলএম, এলজিবিটি এদের একনায়কতন্ত্র। তবে সোভিয়েত ইউনিয়নে যেমন বলশেভিকরা সর্বহারার একনায়কতন্ত্রকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করেছিল, পশ্চিমা এস্টাব্লিশমেন্ট তেমনি বিএলএম, এলজিবিটির একনায়কতন্ত্রকে যত না এদের সমস্যার সমাধানের জন্য করছে তার চেয়ে বেশি করে করছে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ উদ্ধারের জন্য। এখানেই সমস্যা। আমাদের মনে রাখতে হবে আমরা প্রকৃতির অংশ এবং প্রকৃতিই ঠিক করে কে পুরুষ কে নারী। আমার মনে হয় আমরা একটা কথা ভুলে যাই আর তা হল এমনকি দুই জন মানুষও একে অন্যের মত নয়। যদি আমরা সমান অধিকারের কথা বলি তাহলে যে জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে প্রতিটি নাগরিক যাতে নিজের বিকাশে সমান অধিকার পায় সেটা নিশ্চিত করতে হবে। সবাইকে ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার বা খেলোয়াড় হতে হবে তা কিন্তু নয়, তবে প্রতিটি শিশু যাতে তার বিশেষ প্রতিভা বিকাশ করার সুযোগ পায় সেটা নিশ্চিত করতে হবে। সোভিয়েত ইউনিয়ন ব্যর্থ হলেও সে কিন্তু সমাজের এক বিশাল অংশের জন্য এই ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পেরেছিল। আসলে সমান অধিকারের কথা বললেই হবে না, সেটা প্রতিষ্ঠা করার জন্য সমাজে বৈষম্য দূর করতে হবে। আজ বিএলএম, মীটু বা অন্যান্য অনেক সমস্যার মূলে রয়েছে এই বৈষম্য, এই শোষণ। কিন্তু কেউই এসবের বিরুদ্ধে লড়াই করে না, এসব নিয়ে বলে না। ছেলে না মেয়ে এটা একজন শিশু নিজেই ঠিক করবে এটা আসলে আর কিছুই না, সমাজের বিভিন্ন বৈষম্য, বিভিন্ন সমস্যা থেকে মানুষের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে ঘুরানোর একটা ছল মাত্র। আমরা বাংলাদেশের উন্নয়নের ব্যাপারে প্রায়ই বলি অর্থনৈতিক উন্নয়নই শেষ কথা নয়, সেই সাথে সাথে যদি সামাজিক, নৈতিক উন্নয়ন না ঘটে তাহলে এই উন্নয়ন ভুয়া। আমার কেন যেন মনে হয় ক্ষমতা আর অর্থের ক্রীতদাস হয়ে পশ্চিমা সমাজ এখন অবক্ষয়ের দিকে যাচ্ছে। ক্ষমতার সামনে সবাই অক্ষম। আগে অর্থনীতির ভিত্তি ছিল উৎপাদন, ছিল পণ্য। এখন ফাইন্যান্স সব কিছুকে ছাড়িয়ে গেছে। মিথ্যা আশ্বাস বিক্রি করে একদল কোটিপতি হচ্ছে আর একদল এদের খায়েশ মেটাতে গিয়ে অন্যের যুদ্ধের বোঝা বয়ে বেড়াচ্ছে। আগে ওরা আফ্রিকা এশিয়া থেকে মানুষ ধরে এনে ক্রীতদাস হিসেবে বিক্রি করত। এখন আমরা নিজের দেশে নিজের খেয়ে পড়াশুনা করে ওখানে যাই নিজেকে বেশি দামে বিক্রি করার জন্য।

গবেষক, জয়েন্ট ইনস্টিটিউট ফর নিউক্লিয়ার রিসার্চ
শিক্ষক, রাশিয়ান পিপলস ফ্রেন্ডশিপ ইউনিভার্সিটি, মস্কো