চলমান সংবাদ

কারাগারে বাবুলের কক্ষে ওসির ‘তল্লাশি’, নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন আদালতে

স্ত্রী হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে ফেনী কারাগারে বন্দি সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের কক্ষ তল্লাশির অভিযোগ তুলে তিনি জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে আদালতের কাছে আবেদন করেছেন। সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ জেবুন্নেছা বেগমের আদালতে বাবুল আক্তারের পক্ষে তার আইনজীবী গোলাম মওলা মুরাদ এ আবেদন দাখিল করেন। আদালত আবেদনটি বাবুল আক্তারের দাখিল করা আরেকটি আবেদনের সঙ্গে নথিভুক্ত করে আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর শুনানির জন্য সময় নির্ধারণ করেছেন। বাবুলের আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ বলেন, ‘আবেদনে অভিযোগ করা হয়েছে- গত ১০ সেপ্টেম্বর দুপুরে ফেনী মডেল থানার ওসি নিজাম উদ্দিন ফেনী কারাগারে প্রবেশ করে বাবুল আক্তারের কক্ষে দীর্ঘ সময় ধরে তল্লাশি চালান। হেফাজতে রেখে নির্যাতনের অভিযোগে বাবুল আক্তার যে ছয় পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেছেন, তাদের নির্দেশে ও প্ররোচনায় এ তল্লাশি চালানো হয়েছে। কারাগারে ফেনী মডেল থানার ওসির প্রবেশের বিষয়টি সিসি ক্যামরার ফুটেজ যাচাই করলে নিশ্চিত হওয়া যাবে।’ বাবুলের আবেদনে বলা হয়েছে, আইন-আদালতের তোয়াক্কা না করে বাবুল আক্তারের জীবনের ক্ষতিসাধন ও মানসিকভাবে দুর্বল করার জন্য ওসি এভাবে কারাগারে প্রবেশ করেন। জেল কোড অনুসরণ না করেই, বন্দির কক্ষ তল্লাশির নামে জীবনের ক্ষতি সাধনের চেষ্টায় এ যাত্রায় সফল না হলেও আসামিরা যে কোনো সময় বাদী ও তার পরিবারের জীবননাশসহ যে কোনো ধরনের ক্ষতি করতে পারে। কারাগারে বাবুল আক্তারের কক্ষে ওসি’র প্রবেশের তদন্ত এবং তার জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ফেনীর জেলা সুপারকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফেনী মডেল থানার ওসি নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘আমি অন্য একটি মামলার তদন্তের কাজে কারাগারে গিয়ে জেল সুপারের সঙ্গে সাক্ষাত করেছি। আমি বাবুল আক্তারের কক্ষে যাইনি। উনি (বাবুল) যে ফেনী কারাগারে আছেন, সেটি আমার স্মরণেও ছিল না। আদালতের অনুমতি ছাড়া তো ওনার কক্ষে যাবার সুযোগ আমার নেই।’ এর আগে, গত ৮ সেপ্টেম্বর হেফাজতে নিয়ে ‘নির্যাতনের’ অভিযোগে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান অতিরিক্ত আইজি বনজ কুমার মজুমদারসহ ছয় পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের আদালতে একটি মামলার আবেদন করেন সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের পক্ষে তার আইনজীবী। নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন ২০১৩ এর ১৫ (১) এবং ৫ (২) ধারায় দাখিল করা এ মামলার আবেদনে আরও যাদের অভিযুক্ত করা হয়েছে তারা হলেন- পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার মো. নাজমুল হাসান, মেট্রোর পুলিশ সুপার নাঈমা সুলতানা, পিবিআইয়ের সাবেক পরিদর্শক বর্তমানে খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোষ কুমার চাকমা ও বর্তমানে সহকারী পুলিশ কমিশনার (পাহাড়তলী জোন) একেএম মহিউদ্দিন সেলিম এবং পিবিআইয়ের জেলা পরিদর্শক কাজী এনায়েত কবির। মামলার আবেদনে বাবুল আক্তার অভিযোগ করেছেন, রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের নামে বনজ কুমার মজুমদারের নির্দেশে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তারা তার সঙ্গে নিষ্ঠুর ও অমানবিক আচরণ করেছেন। মহানগর পিপি বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী বলেন, বাবুল আক্তারের পক্ষে ৬ জনকে আসামি করে গত ৯ সেপ্টেম্বর একটি আবেদন দেওয়া হয়। সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) আরও একটি আবেদন দেওয়া হয়েছে। আদালত আগামি ১৯ সেপ্টেম্বর উভয় আবেদনের শুনানির দিন ধার্য করেছেন। ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে নগরীর জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। # ১২.০৯.২০২২ চট্টগ্রাম #