জঙ্গল সলিমপুরের ভূমিদস্যু সন্ত্রাসী ও পাহাড়খেকো ইয়াসিন গ্রেপ্তার

 কয়েকবছর আগে নোয়াখালী থেকে চট্টগ্রামে এসে প্রথমে কিছুদিন সিএনজি অটোরিক্সা চালাতেন মো. ইয়াসিন। এরপর আমিন জুট মিলে কর্মচারী হিসেবে চাকরি করেন। চট্টগ্রাম এসে প্রথমে একটি ভাড়াঘরে বসবাস করেন কিছুদিন। এরপর সীতাকুন্ডের সলিমপুর ইউনিয়নের জঙ্গল সলিমপুরের পাহাড়ি এলাকার একটি ভাড়া ঘরে বসবাস শুরু করে ইয়াসিন ও তার এক ভাই ফারুক। প্রথমে নোয়াখালীর চিহ্নিত কিছু সন্ত্রাসী ও দাগী আসামিদের এনে আশ্রয় দেন সেখানে। পরবর্তীতে পার্শ্ববর্তী দুর্গম পাহাড়ের একটি অংশ কেটে বিক্রি করা শুরু করেন তারা। এতেই কোটিপতি বনে যায় ভূমিদস্যু সন্ত্রাসী ও পাহাড়খেকো ইয়াসিন ও তার ভাই। পাহাড়ের বিশাল একটা অংশের নাম দেন আলীনগর। নিজেদের রাজা ঘোষণা করেন দুই ভাই। আলীনগরকে যেন অনেকটা বিচ্ছিন্ন করে নেন বাংলাদেশ থেকে। সেখানে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষেধ করেন। এমনকি ভিতর থেকেও কেউ বাইরে যেতে হলে তাদের অনুমতি নিতে হয়। ইয়াসিনের বিরুদ্ধে নামে হত্যা, গুম, সরকারি জায়গা দখলসহ নানা অভিযোগের ভিত্তিতে অসংখ্য মামলা থাকলেও সে ছিল ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। অবশেষে তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সম্প্রতি গাড়ি বহর থেকে সরকারি অফিসারদের নামিয়ে ইউপি সদস্যকে মারধর করে ইয়াসিনের সন্ত্রাসী বাহিনী। সেই ঘটনায় সোমবার (১৮ জুলাই) দুপুরে গ্রেপ্তার হলেন আলীনগরের সেই স্বঘোষিত রাজা মো. ইয়াসিন। নগর গোয়েন্দা পুলিশের সহায়তায় নগরীর কোতোয়ালী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের একটি দল। গত ১৫ জুলাই শুক্রবার সীতাকুন্ডের সলিমপুর এলাকায় সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন উদ্যোগে সমন্বিত প্রাথমিক সমীক্ষার অংশ হিসেবে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পরিদর্শনে যান। স্থানীয় সরকার চট্টগ্রাম বিভাগের উপ-পরিচালক বদিউল আলম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নাজমুল আহসান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এলএ) মাসুদ কামাল, সীতাকুন্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহাদাত হোসেন, রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর (আরডিসি) মং মারমা ও সীতাকুন্ড উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশরাফুল আলম ও সলিমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন আজিজ আলীনগর পরিদর্শনে যান। পরিদর্শন শেষে ফেরার পথে চেয়ারম্যানের গাড়ি থেকে নামিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আরিফকে বেধড়ক মারধর করে ইয়াসিন বাহিনীর সন্ত্রাসীরা। এ সময় সবার সামনে মেম্বার আরিফের বুকে আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে মারধর করে তারা। এ ঘটনায় আরিফ মেম্বারের ছোট ভাই আবদুল আলীম বাদী হয়ে ইয়াসিন, ফারুকসহ ৬ জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন। সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সামনে জনপ্রতিনিধিকে মারার ঘটনা হতবাক করে দেশবাসীকে। এর আগে সরকারিভাবে হওয়া জনশুমারী ও গৃহ গণনার সময়ও সরকারি লোকদের প্রথমে এরা আলীনগরে প্রবেশে বাধা দেয়। পরবর্তীতে সার্বক্ষণিক নিজেদের লোকের পাহারায় ভিতরে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়। কিন্তু শর্ত দিয়ে দেয় গণনাকারী মহিলা হতে হবে। # ১৮.০৭.২০২২ চট্টগ্রাম #