চলমান সংবাদ

শিক্ষকদের হত্যা-নির্যাতনের প্রতিবাদে চট্টগ্রামে মানববন্ধন-সমাবেশ

 

ধর্মঅবমাননার অভিযোগ এনে নড়াইলের অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসের গলায় জুতার মালা পরানো, সাভারের শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার হত্যাকান্ডসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিন্দু শিক্ষকদের নির্যাতনের প্রতিবাদে ‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম’র উদ্যোগে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

শুক্রবার (১ জুন) বিকেলে নগরীর চেরাগী পাহাড় চত্বরে অনুষ্ঠিত কর্মসূচিতে দলমত নির্বিশেষে সর্বস্তরের জনতা অংশ নেন। হিন্দু শিক্ষকদের হত্যা-নির্যাতনের একের পর এক এসব ঘটনা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিন্দু শিক্ষক শূন্য করার নীলনকশা বাস্তবায়নের অংশ মন্তব্য করেন বক্তারা।

তারা বলেন, ধারাবাহিকভাবে বেছে বেছে হিন্দু শিক্ষকদের টার্গেট করে অপমান, নিপীড়ন এবং হত্যার মধ্য দিয়ে চলমান ঘটনাসমুহকে অতীতের মতো আবারও হিন্দু শুন্য বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার নীলনকশার একটি অংশ। মানববন্ধনের মূখপাত্র হিসেবে তুষার কান্তি বসাক বলেন, অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে সসম্মানে স্বপদে ফিরিয়ে আনতে হবে তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। প্রভাষক উৎপল কুমার সরকারের হত্যাকারীর বয়স এজাহারে ১৬ স্থলে প্রকৃত বয়স ১৯ সংশোধন করে দ্রুত সময়ে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

মানববন্ধনে আরো উপস্থিত ছিলেন প্রকৌশলী সৌমেন দাশ, প্রকৌশলী সিঞ্চন ভৌমিক, মুস্তফা কামাল আক্তার, শিক্ষিকা সালমা জাহান মিলি, সাংবাদিক ওমর ফারুক সুজন, কবি আকতারী ইসলাম, আলোকচিত্রশিল্পী মহিমা আক্তার, শিক্ষিকা সাবিনা লীনা, প্রাবন্ধিক বিধুভূষণ দাশ বিধান, অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা চন্দন কুমার চৌধুরী, শিক্ষিকা সরচিতা পালিতসহ অনেকে। মানববন্ধনে সমন্বয়কারী হিসেবে ছিলেন মহুয়া ভট্টাচার্য।

এদিকে সারাদেশে শিক্ষক লাঞ্ছনার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে ছাত্র ইউনিয়ন, চট্টগ্রাম জেলা সংসদের উদ্যোগে শুক্রবার (১ জুন) বিকেলে নগরীর আমতল মোড়ে এক বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের জেলা সভাপতি এ্যানি সেনের সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক টিকলু দে’র সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলার কোষাধ্যক্ষ অয়ন সেনগুপ্ত, কোতোয়ালি থানার সাধারণ সম্পাদক এস এম নাবিল, হালিশহর থানার সহ-সভাপতি আশিক এলাহী, পাহাড়তলী থানার সাধারণ সম্পাদক নিশান রায় প্রমুখ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, সাভারে শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা করেছে তার নিজের ছাত্র। পুলিশের উপস্থিতিতে নিজের প্রতিষ্ঠানেই গলায় জুতার মালা পড়ানো হলো নড়াইলের শিক্ষক স্বপন কুমার বিশ্বাসকে। রাষ্ট্রীয় প্রশাসনের পাহারায় যখন শিক্ষককে হেনস্তা করার মতো ঘটনা ঘটে তখন আমরা এই রাষ্ট্রে কতটা নিরাপদ সেই প্রশ্ন উঠেছে সাধারণের মনে।

বক্তারা আরো বলেন, সারাদেশে চলমান সকল সহিংসতার পেছনে রয়েছে কিশোর গ্যাং। ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক স্বার্থে দীর্ঘদিন যাবত ব্যবহার করার জন্য কিশোর গ্যাং তৈরি করেছে। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য তারা আজ শিক্ষার্থীদের সন্ত্রাসী বাহিনীতে পরিণত করেছে। অসম্প্রদায়িক রাষ্ট্র বিনির্মাণের জন্য যে দেশ ১৯৭১ সালে স্বাধীন করা হয়েছিল, সে দেশকে সাম্প্রদায়িকতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে এই সরকার। ব্যক্তি স্বার্থ উদ্ধারে কেউ যেন ধর্মকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে না পারে সে বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সারাদেশে সাম্প্রদায়িক উস্কানি বন্ধে সকলকে একত্রে কাজ করতে হবে।

সমাবেশ শেষে একটা বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়।

# ০১.০৭.২০২২ চট্টগ্রাম #