চলমান সংবাদ

বাতাস থেকে অক্সিজেন নিয়ে হাসপাতালে সরবরাহ মিনিটে দেবে ৫০০ লিটার অক্সিজেন, জেনারেল হাসপাতালে বসল প্ল্যান্ট

বন্দরনগরীর কেন্দ্রে আন্দরকিল্লায় অবস্থিত চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালটিতে প্রতিষ্ঠার পর থেকে উন্নয়নের তেমন ছোঁয়া লাগেনি। ২৫০ শয্যার হাসপাতাল হলেও চিকিৎসাসেবার সুযোগ-সুবিধা বাড়েনি দীর্ঘদিন ধরে। কিন্তু করোনা মহামারির প্রকোপ চট্টগ্রামে পড়তেই স্বাস্থ্যসেবার গুরুত্বপূর্ণ স্থান হয়ে ওঠে এই হাসপাতালটি। করোনাকালে চিকিৎসাসেবায় অনন্য অবদান রাখে এই হাসপাতাল। এরপর থেকে কাঠামোগত উন্নয়ন ও সুযোগ-সুবিধাও বাড়তে থাকে দ্রুততার সাথে। এরই ধারাবাহিকতায় হাসপাতালটিতে এবার বসানো হয়েছে একটি অত্যাধুনিক অক্সিজেন প্ল্যান্ট, যা বাতাস থেকে অক্সিজেন সংগ্রহ করে প্রতি মিনিটে ১০ লিটার করে ৫০ জনকে সরবরাহ করবে। অর্থাৎ আধুনিক এ জেনারেটরের মাধ্যমে বাতাস থেকে মিনিটে ৫০০ লিটার অক্সিজেন পাওয়া যাবে। ইতোমধ্যে জেনারেটরটি স্থাপন কার্যক্রম শেষ করে পরীক্ষামূলক চালুও করা হয়েছে। সব কিছু ঠিক থাকলে চলতি মাসের শেষ দিকে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করা হবে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আধুনিক এ যন্ত্র স্থাপনের ফলে অক্সিজেনের সংকট যেমন কাটবে, তেমনি বেসরকারিভাবে অক্সিজেন ক্রয়ও ধীরে ধীরে কমে আসবে। পাশাপাশি জরুরি মুহুর্তে মুমূর্ষ রোগীদের চাহিদাও মেটানো সম্ভব হবে বাতাস থেকে সরাসরি পাওয়া অক্সিজেনের মাধ্যমে। চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক (উপ-পরিচালক) ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, আমাদের হাসপাতালে বাতাস থেকে অক্সিজেন তৈরির একটি প্ল্যান্ট বসানো হয়েছে। যা মিনিটে সর্বোচ্চ ৫০০ লিটার অক্সিজেন সরবরাহ করতে পারে এ প্ল্যান্টটি। সোমবার (১৬ মে) পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হয়। ব্যবহারিকভাবে আমরা মিনিট প্রতি ২০০ লিটার অক্সিজেন পেয়েছি। আরও কয়েকদিন পরীক্ষামূলক চালানো হবে। পাশাপাশি অক্সিজেন জেনারেটরটি পরিচালনার জন্য তিনদিনের প্রশিক্ষণ কার্যক্রমও শুরু হয়েছে। তিনি জানান, এ অক্সিজেন জেনারেটর চালু থাকলে তরল অক্সিজেনের চাহিদা কমবে। তরল অক্সিজেন তৈরিতে খরচ বেশি। এতে তরল অক্সিজেনের ওপর চাপ যেমন কমবে তেমনি খরচও কমে আসবে। তবে পাশাপাশি জরুরি প্রয়োজনের কথা বিবেচনা করে আমাদের স্পেক্ট্রা অক্সিজেন লিমিটেডের সেন্ট্রাল তরল অক্সিজেনের যে ব্যবস্থা রয়েছে তা-ও রাখতে হবে। যাতে দুইটি সোর্সের মধ্যে একটি দিয়ে জরুরি সেবা নিশ্চিত করা যায়। হাসপাতাল সূত্র জানায়, এ প্ল্যান্টে উৎপাদিত অক্সিজেন হাসপাতালের সেন্ট্রাল অক্সিজেনের সাহায্যে পাইপ লাইনের মাধ্যমে রোগীর কেবিনে বা বেডে নেওয়া হবে। ট্যাংকে সরবরাহ করা তরল অক্সিজেনের তুলনায় নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহের জন্য ছোট ছোট অক্সিজেন প্ল্যান্ট অনেক বেশি কার্যকর। তাই তরল অক্সিজেন আমদানি, পরিবহন খরচ যেমন সাশ্রয় হবে তেমনি সংকটে আস্থাও বাড়বে। জানা যায়, করোনাকালীন সময়ে দেশে অক্সিজেনের মারাত্মক সংকট দেখা দেওয়ার পর অক্সিজেন উৎপাদনের উদ্যোগ নেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এরমধ্যে সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালের জন্য ৩৯টি অক্সিজেন জেনারেটর ক্রয়ও করে অধিদপ্তর। যারমধ্যে একটি জেনারেটর চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। এরমধ্যে চলতি বছরের শুরুতে বরাদ্দ পাওয়া অক্সিজেন জেনারেটর স্থাপনের কাজ শুরু হয় চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে। যা চলতি সপ্তাহে স্থাপনের কাজ পুরোপুরি শেষ করে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এনিফকো হেলথ কেয়ারের প্রকৌশলীরা। # ১৭.০৫.২০২২ চট্টগ্রাম #