চলমান সংবাদ

অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারসাজি অবৈধভাবে মজুদ করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি

-এবার গুদাম থেকে ১৫ হাজার লিটার সয়াবিন তেল জব্দ

পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকার পরও হঠাৎ করে বাজার থেকে ঊধাও হয়ে গেছে সয়াবিন তেল। খুচরা থেকে পাইকারি, কোথাও মেলেনি সয়াবিন তেলের দেখা। বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির লক্ষ্যে অবৈধভাবে সয়াবিন তেল মজুদ করে রেখেছে অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। দোকানে-গুদামে-ফ্যাক্টরিতে ভোজ্যতেল সয়াবিন থাকা সত্বেও কোনো দোকানি তেল বিক্রি করতে চাইছেন না ক্রেতাদের কাছে। অতিরিক্ত মুনাফার লোভে কৃত্রিম সংকট সুষ্টি করে ভোক্তার পকেট কাটছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। গত দুইদিনে অবৈধভাবে মজুদ করে রাখা প্রায় ২০ হাজার লিটার সয়াবিন তেল উদ্ধার করেছে প্রশাসন। সোমবার (৯ মে) দুপুরে নগরীর পাহাড়তলী বাজারে সিরাজ স্টোর নামে একটি দোকানের তিন গুদামে মজুত অবস্থায় ১৫ হাজার লিটার সয়াবিন তেল পেয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। বাজারে তেলের সংকটের মধ্যে ওই দোকানি বোতলজাত সয়াবিনগুলো বিক্রি না করে গুদামে তালাবদ্ধ করে রেখেছিল বলে জানিয়েছেন অধিদফতরের কর্মকর্তারা। অভিযান চালিয়ে ১৫ হাজার লিটার সয়াবিন তেল জব্দ করে দোকান মালিক মো. সিরাজকে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এর আগে রোববার (৮ মে) দুপুরে চট্টগ্রামে অবৈধভাবে মজুদ করে রাখা প্রায় সাড়ে তিন হাজার লিটার সয়াবিন তেল উদ্ধার করে প্রশাসন। নগরের চৌমুহনীতে সিডিএ কর্ণফুলী মার্কেটের একটি গুদাম থেকে ১ হাজার ৫০ লিটার সয়াবিন তেল এবং চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে হানা দিয়ে মজুদ করে রাখা ২ হাজার ৩২৮ লিটার সয়াবিন তেলের উদ্ধার করে ভ্রাম্যমান আদালত। অধিদফতরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ফয়েজউল্লাহ বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পাহাড়তলীতে সিরাজ সওদাগরের মুদি দোকানে অভিযান চালানো হয়। সেখানে সামান্য তেল বিক্রির জন্য রাখা হয়েছিল। আমরা তার তিনটি গুদাম একে একে পরিদর্শন করি। তালাবদ্ধ গুদামগুলো থেকে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বোতলজাত ১৫ হাজার লিটার সয়াবিন তেল জব্দ করি। বাজার পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে এসব তেল মজুদ করে রাখা হয়। সরকারিভাবে সয়াবিন তেলের নতুন দর নির্ধারণের দুই-তিনদিন আগে জব্দ করা এসব তেল কিনে গুদামজাত করা হয়েছিল বলে অভিযুক্ত দোকানি স্বীকার করেছেন। ফয়েজউল্লাহ জানান, জব্দ করা তেলগুলো খুচরা দোকানিদের কাছে বিক্রি করে দেয়া হচ্ছে। এছাড়া তেল মজুদ করায় সিরাজ সওদাগরকে এক লাখ ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঈদের আগে আগে হঠাৎ করে বাজারে সয়াবিন তেলের চরম সংকট দেখা দেয়। দাম বাড়ানোর ঘোষণার পর চট্টগ্রামের বিভিন্ন বাজার থেকে শুরু করে পাড়া-মহল্লার দোকানেও মিলছে না সয়াবিন তেল। হঠাৎ করে প্রয়োজনীয় এই পণ্যের সংকট হওয়ায় বিপাকে পড়েন সাধারণ ভোক্তা। তেলের সরবরাহ সংকটের বিষয়ে পাইকারি ব্যবসায়ীদের অজুহাত, বিপুল পরিমাণ আমদানি হলেও মিল মালিকরা তেল সরবরাহ করছে না। কিন্তু মিলাররা বলছেন, বাজারে সয়াবিনের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। ডিলার ও পাইকারি বিক্রেতারা কারসাজির মাধ্যমে সংকট সৃষ্টি করেছেন। একে অপরের দোষারোপে পিষ্ট সাধারণ ভোক্তা। কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ক্যাব’র কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, বাজার থেকে হুট করে সয়াবিন ঊধাও হয়ে যাবে কেন ? বাজারে সয়াবিন তেলের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির লক্ষ্যে অবৈধভাবে সয়াবিন তেল মজুদ করে রেখেছে অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। বাজারে চলমান এই সংকট, আমদানিকারক ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা যোগসাজশ করে কৃত্রিমভাবে তৈরি করেছে। সাধারণ ভোক্তাকে জিম্মি করে মুনাফা লুটেছে এই অসাধু সিন্ডিকেট। # ০৯.০৫.২০২২ চট্টগ্রাম #