চলমান সংবাদ

অনিরাপদবোধ করায় বাবুল আক্তারকে চট্টগ্রাম থেকে ফেনী কারাগারে স্থানান্তর

স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার আসামি সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ফেনী কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রিজনভ্যানে করে তাকে ফেনী কারাগারে নেয়া হয়। এর আগে গত মঙ্গলবার (২২ মার্চ) চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই মামলায় বাবুল আক্তারের হাতের লেখার নমুনা সংগ্রহের জন্য ফেনী কারাগার থেকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয় হয়। ঐদিন বাবুল আক্তারের আইনজীবী পুনরায় ফেনী কারাগারে বাবুল আক্তারকে প্রেরণ করার জন্য আবেদন করেন। আদালতের একটি সূত্র জানায়, আদালতের তলব মোতাবেক ফেনী কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বাবুল আক্তারকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়। যেহেতু বাবুল আক্তার পূর্বে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ-সিএমপি’র গোয়েন্দা বিভাগে কর্মরত ছিলেন এবং সেসময় বিভিন্ন দুর্ধর্ষ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছিলেন, তাই তিনি চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে নিরাপদবোধ করছেন না। বাবুল আক্তার শারীরিক ও মানসিক নিরাপত্তার প্রয়োজনে ফেনী কারাগারে অতিসত্তর পুনরায় প্রেরণের আবেদন জানানো হয়। একইদিন আদেশে আদালত, কারাবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে আদেশ দেন। এর আগে গত মঙ্গলবার (২২ মার্চ) বিকেলে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আবদুল হালিমের উপস্থিতিতে তাঁর খাস কামরায় বাবুল আক্তারের হাতের লেখার নমুনা সংগ্রহ করে মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই। গত ৭ মার্চ মামলার পিবিআই বাবুল আক্তারের হাতের লেখা পরীক্ষা করতে আদালতে আবেদন করেন। কথিত বান্ধবীর কাছ থেকে উপহার হিসেবে পাওয়া বইয়ে থাকা কিছু হাতের লেখা বাবুল আক্তারের লেখার সঙ্গে মেলে কি না, সেটা জানতেই তদন্তকারী কর্মকর্তা হাতের লেখা সংগ্রহের আবেদন করেন। প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে নগরীর পাঁচলাইশ থানার জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে বাসার অদূরে গুলি ও কুপিয়ে খুন করা হয় বাবুলের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে। স্ত্রী খুনের ঘটনায় বাবুল আক্তার বাদি হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন। মামলা তদন্তের দায়িত্ব প্রথমে নগর গোয়েন্দা পুলিশ-ডিবি’র কাছে থাকলেও ২০২০ সালের জানুয়ারিতে তদন্তভার পড়ে পিবিআই’র ওপর। গতবছরের ১১ মে বাবুল আক্তারকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পিবিআই। তদন্তে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় ১২ মে ওই মামলার তার বিরুদ্ধে ৫৭৫ পৃষ্ঠার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয় পিবিআই। একইদিন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন বাদি হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় বাবুল আক্তারসহ আটজনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় মোশাররফ অভিযোগ করেন, বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত এক নারীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের জেরে বাবুল আক্তার তার স্ত্রীকে হত্যা করে। এই মামলায় ওইদিনই বাবুল আক্তারকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পিবিআই’র দেয়া চার্জশিটের বিষয়ে বাবুল গত বছর আদালতে আপত্তি জানিয়ে অন্য কোন সংস্থার সিনিয়র কর্মকর্তা দিয়ে মিতু হত্যার ঘটনা পুনঃতদন্ত চান। শুনানি শেষে আদালত বাবুলের নারাজি আবেদন নামঞ্জুর করেন। আদালতের নির্দেশে এখন শুধুমাত্র বাবুল আক্তারের দায়ের করা মামলাটির অধিকতর তদন্ত চলছে।
# ২৪.০৩.২০২২ চট্টগ্রাম #