চলমান সংবাদ

চুরি করা মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন-চেসিস নম্বর পাল্টে বিআরটিএ’র জাল কাগজপত্র বানিয়ে বিক্রি করত চক্রটি

চট্টগ্রামের হাটহাজারীর চৌধুরীহাট এলাকায় মোটর গ্যারেজে কাজ করতেন আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাঁচা মিয়া (২২)। সেখানে মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় হাতেনাতে ধরার পর স্থানীয়রা পিটিয়ে এলাকা ছাড়া করেন। এলাকা বদলালেও স্বভাব বদলায়নি তার। নগরের কদমতলী কেন্দ্রিক গড়ে তুলে মোটরসাইকেল চোর চক্র। চক্রটি চুরি করা মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন নম্বর ও চেসিস নম্বর বদলে বিআরটিএ থেকে আগে রেজিস্ট্রেশন হওয়া নম্বর প্রতিস্থাপন করতো। এরপর বিআরটিএ’র জাল কাগজপত্র বানিয়ে ক্রেতাদের কাছে পুরানো গাড়ি হিসেবে বিক্রি করতো। নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানা এলাকা থেকে চুরি যাওয়া একটি মোটরসাইকেল উদ্ধারে নেমে অবশেষে বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাতে নগরীতে মোটরসাইকেল চুরির এই চক্রের সক্রিয় তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত তিনজন হলো- আবুল কালাম আজাদ (২২), মো. সাকিব (২২) ও দোলন দাশ (২৩)। বায়েজিদ বোস্তামি থানার ওসি মো. কামরুজ্জামান জানান, গত ৬ জানুয়ারি রাতে নগরীর বালুছড়া এরাকা থেকে একটি মোটরসাইকেল চুরি হয়। এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় তদন্তে নেমে তিনজনকে শনাক্ত করে পুলিশ। বুধবার রাতে সীতাকুন্ড থেকে আবুল কালাম ও সাকিবকে এবং নগরীর ধনিয়ালাপাড়া থেকে দোলনকে গ্রেপ্তার করা হয়। সাকিবের কাছ থেকে চুরি করা মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করা হয়। তিনি বলেন, গ্রেপ্তার আবুল কালাম পেশাদার মোটরসাইকেল চোর। সে হাটহাজারী উপজেলার ফতেয়াবাদ চৌধুরীহাট এলাকায় একটি গ্যারেজে মোটরসাইকেল মেকানিকের কাজ করতো। একটি মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় গণপিটুনির শিকার হয়ে সে এলাকা ছাড়া হয়। এরপর সীতাকুন্ড উপজেলার জলিল টেক্সটাইল গেট এলাকায় অবস্থান করে চোরাই মোটরসাইকেল কেনাবেচায় জড়িয়ে পড়ে। তখন তার সঙ্গে যোগ দেয় আরেক মেকানিক সাকিব। দোলন নগরীর কদমতলী এলাকার একটি মোটরসাইকেল গ্যারেজের মেকানিক। চোরাই গাড়ির ইঞ্জিন ও চেসিস নম্বর পরিবর্তন করে জাল কাগজপত্র তৈরিতে পারদর্শী দোলন। বিআরটিএর জাল কাগজপত্র বানিয়ে ক্রেতাদের কাছে পুরানো গাড়ি হিসাবে বিক্রি করতো। আবুল কালাম এর আগে খুলশী, হাটহাজারী এবং রাঙ্গামাটি থানার মামলায়ও গ্রেপ্তার হয়েছিল। ওসি কামরুজ্জামান বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা জানায়, বালুছড়া থেকে চুরি করা মোটরসাইকেলটি আবুল কালামের কাছ থেকে সাকিব ৫ হাজার টাকায় কিনে নিয়েছিল। তবে এর আগে দোলন আট হাজার টাকার বিনিময়ে সেটির ইঞ্জিন ও চেসিস নম্বর বদলে আসল নম্বর বসিয়ে বিআরটিএ’র জাল নথিপত্র তৈরি করে দেয়। মোটর সাইকেল চুরির পর এরা দ্রুততার সঙ্গে ইঞ্জিন ও চেসিস নম্বর পাল্টে ফেলে। সেখানে বসিয়ে দেয় আসল মোটরসাইকেলের নম্বর। তখন চুরি যাওয়া মোটরসাইকেলটি শনাক্ত করতে বেগ পেতে হয়। মামলা হলেও সেটি উদ্ধার করা অনেকসময় সম্ভব হয় না। আধুনিক প্রযুক্তি এবং সোর্সের মাধ্যমে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। # ০৩.০২.২০২২ চট্টগ্রাম #