চলমান সংবাদ

রানিং স্টাফদের আন্দোলনে বিভিন্ন রুটে ট্রেনের যাত্রা বাতিল হচ্ছে

ট্রেনচালক ও গার্ডরা অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন না করায় বিভিন্ন রুটের ট্রেনের যাত্রা বাতিল করতে বাধ্য হচ্ছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। আগের নিয়মে বেতন-ভাতা দিতে অর্থমন্ত্রণালয় রাজি না হওয়ায় রানিং স্টাফরা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। রানিং স্টাফ বলে পরিচিত ট্রেন চালক, টিটিসহ বিভিন্ন কর্মীরা গত কয়েকদিন যাবত ধারাবাহিক আন্দোলন করছে। যার ফলে গতকাল বৃহস্পতিবার ও আগেরদিন বুধবারও আট ঘন্টার বেশি কাজ করেননি তারা। যার ফলে ১১টি মেইল, লোকাল, শাটন ট্রেন চলাচল চরমভাবে ব্যাহত রয়েছে। এদিকে বৃহস্পতিবার লোকোমাস্টার ও গার্ড সংকটের কারণে নাজিরহাটগামী ট্রেনের যাত্রা বাতিল করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এর আগে গত বুধবার থেকে চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ে চলাচল করা সাত জোড়া শাটলের মধ্যে তিন জোড়া শাটল ট্রেন অনির্দিষ্টকালের জন্য এখনও বন্ধ রয়েছে। বাকি তিন জোড়া শাটল ও এক জোড়া ডেমু ট্রেন চলাচল করছে। রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা আনছার আলী ভোরের কাগজকে বলেন, বৃহস্পতিবার নাজিরহাটগামী একটি কমিউটার ট্রেনের যাত্রা বাতিল হয়েছে। বিশ^বিদ্যালয়ের তিন জোড়া ট্রেন এখনও চলাচল বন্ধ। তবে অন্যান্য রুটের ট্রেন চলাচল এখনও স্বাভাবিক আছে। অন্যদিকে রেলওয়েতে চলমান মাইলেজ রীতিতে বেতন-ভাতা প্রদান বাতিল করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের দেয়া প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার এবং ১৬০ বছর ধরে চলমান মাইলেজ সুবিধা অব্যাহত রাখার প্রজ্ঞাপন জারি করার দাবিতে ধারাবাহিক কর্মসূচির পাশাপাশি গত মঙ্গলবার থেকে পূর্ণাঙ্গ বিশ্রাম নিয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেন ট্রেন চালকরা। এতে প্রতিদিন ট্রেন চালক ও গার্ড সংকটে পড়েছে রেলওয়ে। রানিং স্টাফরা জানিয়েছেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এমন কর্মসূচি চলবে। পাশাপাশি আগামী ৩১ জানুয়ারি থেকে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে রেলওয়ে রানিং স্টাফরা। বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান মুজিব জানিয়েছেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন বাতিল করা না হলে আগামী ৩১ জানুয়ারি থেকে কোনো ট্রেন চলবে না। গত নভেম্বর থেকে মাইলেজ নীতি নিয়ে আলোচনা চলছে। কিন্তু কোনধরনের সুরাহা হয়নি। মাইলেজ পদ্ধতিতে বেতন-ভাতা না পেলে কেউ ট্রেন চালাবে না। প্রসঙ্গত রেলওয়ের যাত্রা শুরুর কাল থেকে রেল কোডের বিধান অনুযায়ী রানিং ভাতা হিসেবে ট্রেন চালক (লোকোমাস্টার), সহ-চালক, গার্ডরা ৮ ঘণ্টা কাজের জন্য বা প্রতি ১০০ মাইলের বেশি ট্রেন চালালে ১ দিনের মূল বেতনের সমপরিমাণ অতিরিক্ত মাইলেজ (ভাতা) পেয়ে আসছেন। এ হিসাবে ৬ থেকে ৮ হাজার মাইল ট্রেন চালালে মাসিক বেতনের সঙ্গে ৫০ থেকে ৬০ দিনের মাইলেজ দেওয়া হতো। কিন্তু আইবাস প্লাস সিস্টেমে (বেতন হিসাবের সফটওয়্যার) ৩০ দিনের বেশি মাইলেজের ব্যবস্থা রাখা হয়নি। গত ৪ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন দিয়ে এ সুবিধা আর বলবৎ থাকবে না বলে জানায়। এরপর থেকে রানিং স্টাফরা আন্দোলন করে আসছে। তারা বলছেন, এতে ট্রেনচালকরা অতিরিক্ত পরিশ্রম করেও প্রাপ্য ভাতা থেকে বঞ্চিত হবেন। এই প্রজ্ঞাপন বাতিল করা না হলে তারা কঠোর আন্দোলনের পথ বেছে নিবে।
# ২৭.০১.২০২২ চট্টগ্রাম #