চলমান সংবাদ

ডেলটা প্ল্যানের আওতায় সারাদেশের খাল পুনঃখনন করা হলে পানির ধারণক্ষমতা বাড়বে- পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী

ডেলটা প্ল্যানের আওতায় সারাদেশে ৫১২টি খাল পুনঃখনন করা হচ্ছে জানিয়ে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক বলেন, ইতিমধ্যে প্রায় ৭২ শতাংশ কাজ হয়ে গেছে। আমরা আশা করছি ডিসেম্ববের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে পারবো। তারপর দ্বিতীয় ধাপে কাজ শুরু হবে, যেখানে তালিকায় রয়েছে ৪ হাজার ২৬টি খাল। দ্বিতীয় ধাপের কাজ শুরু করতে তিন-চার বছর সময় লাগবে। সব কাজ শেষ হলে বর্ষায় উজান থেকে আসা পানির ধারণক্ষমতা বাড়বে। তিনি বলেন, কর্ণফুলীর তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছিলাম। করোনার জন্য উচ্ছেদের কাজটা স্থগিত রেখেছি। করোনাকালে লোকজনের আয় ও উপার্জন সব থেমে গিয়েছিল বলে উচ্ছেদ বন্ধ রাখা হয়। শুধু কর্ণফুলী নয়, সারাদেশে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের কাজটা সাময়িক স্থগিত করে রেখেছি। করোনার প্রভাব কমে আসলে উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করবো। শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে কর্ণফুলী উপজেলায় শিকলবাহা খাল পুনঃখনন কাজ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী বলেন, শিকলবাহা খাল ছিল না, পুরোটাই ভরাট এবং অবৈধ স্থাপনা ছিল। স্যুয়ারেজ লাইন গেছে খালে। পাড় দখল করে বানানো হয়েছে গরুর ঘর। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পর পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ শুরু করে। খাল খনন ও ড্রেজিং করা হয়েছে। অনেকবার স্থানীয়দের সাবধান ও পরিবেশ অধিদফতর থেকে দখলদারদের জরিমানা করা হয়েছে। এরপরও দূষণ থেমে নেই। খননকাজ শেষ হলে এই খালের পানি লোকজন ব্যবহার করতে পারবে, শহরের সৌন্দর্য বাড়বে’। প্রতিমন্ত্রী বলেন, গত বছর একাধিকবার বন্যা হওয়ার পরও সেভাবে বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়নি। বাঁধ ভেঙ্গে যায়নি, বাঁধের পানি উপচে পড়েছে। যেখানে গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেখানেও বাঁধের ক্ষতি হয়নি। আমরা যদি ৬৪ জেলায় ছোট নদী ও খাল খননকাজ শেষ করতে পারি, বর্ষায় এসব নদী ও খালে পানি ধারণক্ষমতা বাড়বে। তখন গ্রাম প্লাবিত হবে না, ক্ষতির পরিমাণ কমে সহনীয় অবস্থায় আসবে। প্রকল্প জনগণের কল্যাণের জন্য, সেখানে জনগণের সহযোগিতা লাগবে। জনগণের সহযোগিতা ছাড়া প্রকল্পের কাজ শেষ করা যাবে না। একজন লোকের জন্য পাঁচ হাজার মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করা যাবে না। প্রতিমন্ত্রীর খাল পুনঃখনন কাজ পরিদর্শনকালে কর্ণফুলী উপজেলা চেয়ারম্যান মো.ফারুক চৌধুরী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিনা সুলতানা, পানি উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রাম পৌর বিভাগ-১’র নির্বাহী প্রকৌশলী তন্ময় কুমার ত্রিপুরা, কর্মকর্তা সিজেন চাকমা, মো. মানজুর এলাহী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। কর্মকর্তারা জানান, কর্ণফুলী উপজেলার শিকলবাহা, চরলক্ষ্যা, চরপাথরঘাটা ও জুলধা ইউনিয়নের ওপর দিয়ে প্রবহমান প্রায় ১২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে লেংগ্যা-শিকলবাহা-চৌমুহনী নয়াহাট খালটি কর্ণফুলী নদীর বাম তীরে ফিসারী ঘাটের নয়াহাট থেকে উৎপত্তি হয়ে ডায়মন্ড সিমেন্ট ফ্যাক্টরি এলাকায় পুনরায় কর্ণফুলী নদীতে পতিত হয়েছে। দীর্ঘদিন পুনঃখনন না হওয়ায় খালের বিভিন্ন অংশ ভরাট হয়ে বর্ষা মৌসুমে নিকটবর্তী এলাকাসমূহে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হতো। খালের কিছু অংশ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এছাড়া খালের নিকটবর্তী স্থানে অবস্থিত বিভিন্ন শিল্প কারখানা, বাজার এবং ডেইরি ফার্মের বর্জ্য সরাসরি খালে ফেলে দেওয়ায় খালের তলদেশ আবর্জনায় ভরাট হয়ে আশপাশের এলাকায় পানিপ্রবাহে বাধাগ্রস্ত হওয়াসহ পরিবেশেরও মারাত্মক বিপর্যয় ঘটে।

# ২১.০১.২০২২ চট্টগ্রাম #