মতামত

আইন মেনেই বলছি 

– উত্তর পুরুষ

রস দিয়ে কত কিছুই না তৈরী হয়। রসগোল্লা, রসমালাই , রসবিলাস আরো কত কত মিষ্টি যে হয় এই রস দিয়ে তা বলার নয়। আবার ভাব রস, কাব্য রস এগুলোই তো রসের শাখা, নাকি? বই পত্রে আবার বলা হয়েছে ভাব রস চার প্রকার আর কাব্য রস আট প্রকার। ভাইরে, আপনারা ভাববেন না রস নিয়ে আপনাদের জ্ঞান দিতে আসছি। ঐ মুরোদ আমার নাই। আমি রস বলতে রসিক বুঝেই খালাস, তার বেশি কিছু না। আর রস নিয়ে গান হলেই আমার হল। “ ও আমার রসিয়া বন্ধুরে তুমি কেন কোমরের বিছা হইলা না”- আহা এমন করে যদি আমায় কেউ বলতো, ঠিকই কোমরের বিছা হয়ে যেতাম। মনের দুঃখ আর কি, বুঝলেন না। এটা নিয়ে কেউ আমাকে ভুল বুঝবেন না দয়া করে। ঘরের দিকে তাকিয়েই বললাম আর কি। 

যাকগে  ঐ সব কথা । যে কথা বলতে গিয়ে এত কথা বলে ফেললাম, সেটাই বলি। এই শীত কাল আসলেই আমাদের মনে যে কথাটা আগে আসে তা হল খেজুরের রস।রস না হলে কি পিঠা হয়? এই রস দিয়ে আবার গুড় হয়। আহা, খেজুরের রসের কথা বলাতে আবার নস্টালজিক হয়ে যাবেন না। এই আমাদের, বাঙ্গালীদের এক দোষ (?) বড় বেশি স্মৃতি কাতর। এখনই হয়তো ভাবতে বসে গেছেন- খেজুরের রস কেমন করে গাছ থেকে চুরি করে খেতেন,  কি ভাবে গুড় খেতেন। আবার কেউ ভাবছেন রসে ভিজা পিঠা কি ভাবে খেতেন । ভাবেন কোন অসুবিধা নাই। তবে কয়েকদিন আগে পত্রিকায় দেখলাম এই খেজুরের রস থেকে নিপা ভাইরাস ছড়ায়। কি ভাবে? খেজুরের রস সাধারণত সারা রাত ধরে হাঁড়িতে নেয়া হয়। মুখ খোলা হাঁড়িতে রাতের পাখি, বিশেষ করে বাদুর এসে মুখ দেয়। এই সময় বাদুর থেকে বিষ্ঠা- ময়লা রসের  হাঁড়িতে পরে। বাদুরের বিষ্ঠায় থাকে নিপা ভাইরাস। কাঁচা রস খেয়ে মানুষ নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়। তাহলে ভাবেন একবার, ছোট বেলায় চুরি করে কতবার কাঁচা রস খেয়েছেন। যাক যা খেয়েছেন, এখন তো আর বলে লাভ নাই, ভবিষ্যতে আর কাঁচা রস না খেলেই হল। কি জ্বালা দেখেন তো। একটু রস খাব তারও কোন উপায় নাই। থাক, মনে কষ্ট নিয়ে লাভ নাই। তার চাইতে চলেন সবাই মিলে ভবা পাগলার সাথে গলা মিলাই -” খেজুর গাছে হাঁড়ি বাঁধো মন/ ও গাছে জোয়ার আসিলে/ ও গাছ কাটো কুশলে/কোনার দড়ি ছিঁড়ে যেন পড়োনা তলে/ কত গ্যাছো গ্যাছে মরা/ নীচে পড়ে হয় মরন ।

আর একটা কথা বলি। মন দিয়ে শোনেন। আগামী ১৬ জানুয়ারী নাকি নারায়নগঞ্জে নির্বাচন হবে। মেয়র নির্বাচন । আরে আপনারা হাসেন কেন? আমোদ হচ্ছে ? হবেই তো । ছোট বেলায় নির্বাচন আসছে শুনলেই আনন্দে এক্কেবারে আত্মহারা হয়ে যেতাম । আমার ভাই তোমার ভাই…অমুক ভাই, অমুক ভাই। অমুক ভাইকে … মার্কায় ভোট দিন। অমুক ভাইকে দিলে ভোট শান্তি পাবে দেশের লোক । সাথে বিস্কুট আর লাল চা। আহা নির্বাচন মানে মজাই মজা। কি বললেন ? আজকাল দেশের লোক শান্তি পাবে কিনা জানেন না, আর ঐ মজা নাই? তা হলে কি আছে? ওহ , নির্বাচন মানেই হোন্ডা আর টাকা।  আরে ভাই, বুঝলেন না, এটা আধুনিক যুগ। আজকাল ডায়বেটিস রোগী ছাড়া কে আর লাল চা খায়, বলেন ? সবাই এখন কফি খায়। বিস্কুট এর জায়গায় বিরানী। রিক্সার জায়গায় হোন্ডা। কাজেই টাকা লাগে, টাকা। নির্বাচন করতে কোটি টাকা লাগে। ভোটার লাগে না। ফেল কড়ি মাখ তেল । টাকা থাকলেই কেল্লা ফতে। আবার সুশীল সমাজ নামে একটা দল আছে, বিরোধী দলের সাথে গলা মিলিয়ে তারা বলে ভোট তো আগের রাতেই হয়ে যায়। ভোটের আর কি দরকার। ভাইরে, এটা আমার কথা নয়, সুশীলের কথা।যেমন তেমন শীল না, পাক্কা সুশীল।  আমার ঘাড়ে কয়টা মাথা আছে যে এইসব কথা বলতে পারি? নাকি, সেই সব চায়নিজদের মত যারা ‘৭০ এর নির্বাচনের আগে বলছিল – ‘শালার বেটার জনগণ তোমরা কর নির্বাচন -আমরা চললাম সুন্দরবন’ বলতে পারি ? থাক থাক, ছোট মুখে বড় কথা। এইসব বলতে নাই। যে কথা বলছিলাম । নির্বাচন মানেই মজা।কারো কারো জন্য তো বটেই। মনোনয়নপত্র কিনতে টাকা, মিছিল করলে টাকা, ভোটের দিন টাকা । এখন ঢালো টাকা, এরপর তো আসতেই থাকবে। এক্কেবারে বানের পানির লাহান। ভাইরে ভাই, এইসব কথা না বলে চলেন ঘরে বসে জি বাংলার সিরিয়াল দেখি। তাহলে অন্তত কি ভাবে কূট কুচালি করতে হয় তা শিখে ফেলতে পারব আর ঘরের শান্তি (?) বজায় রাখতে পারব। নারায়নগঞ্জের নির্বাচনের কথা ১৬ তারিখের পর হবে। কি বলেন? যা বলার সবাই একসাথে বলেন।