চলমান সংবাদ

মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ অস্বীকার এমপি পদ নিয়ে ষড়যন্ত্র দেখছেন মোছলেম

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ অস্বীকার করে কোনো ধরনের অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িত নন বলে দাবি করেছেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন আহমেদ। মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগের নেপথ্যে তার এমপি পদ নিয়ে চক্রান্ত চলছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমার মনে হচ্ছে, আমি এমপি হওয়ার পর আমার জায়গায় কেউ আসতে পারে কি না, এজন্য আমার বিরুদ্ধে অপবাদ তৈরির জন্য একটা হীন চক্রান্ত করছে কেউ অগোচরে। এই ধরনের অভিযোগের পেছনে কারও কোনো ইন্ধন দিচ্ছে কিনা, তাকে কেউ গিনিপিগ হিসেবে ব্যবহার করে আমার রাজনৈতিক জীবন ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে কিনা, এটা আমি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থাকে খুঁজে বের করার অনুরোধ করছি। আমার ন্যুনতম যদি কোনো অপরাধ থাকে, আমি যে কোনো শাস্তি মাথা পেতে নেব। কারণ অনৈতিক কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা আমার নেই, দৃঢ়তার সঙ্গে আমি বলতে পারব।’ চট্টগ্রাম দক্ষিণের বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে নানা বিতর্কের পর বুধবার (১২ জানুয়ারি) সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণের জ্যেষ্ঠ নেতারাও ছিলেন। মোছলেম উদ্দিন বলেন, কেউ এককভাবে মনোয়ন দিতে পারে না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ড আছে। সেখানে জাতীয় নেতারা থাকেন। আমরা জেলা থেকে শুধু সুপারিশ করতে পারি। মনোনয়ন বোর্ড চূড়ান্ত মনোনয়ন নিশ্চিত করে। এবার একটি নিয়ম করে দিয়েছে কেন্দ্র থেকে- তৃণমূলের কমিটি ও জেলা পর্যায় বসে কমপক্ষে তিনজনের তালিকা কেন্দ্রে প্রেরণ করবে। আমরা তৃণমূল পর্যায়ে সভা করেছি। প্রত্যেক প্রার্থীর বক্তব্য নিয়েছি, শপথ করানো হয়েছে। মনোনয়ন না পেলেও দলের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করবে, আমাদের কাছে ভিডিও রয়েছে। জেলা সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, উপজেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষর গ্রহণ করা হয়েছিল। সেই তালিকা কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। আমাদের মনোনয়ন দেওয়ার কোনও সুযোগ নেই। গত ৬ জানুয়ারি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সহ-আইনবিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন অভিযোগ করেন, দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার সোনাকানিয়া ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নের জন্য উপজেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এম হোসেন কবির সাংসদ মোছলেমের নামে ১৫ লাখ টাকার চেক নেন। স্ট্যাটাসে কামাল উদ্দিন সোনালী ব্যাংক কোর্ট হিল শাখার ১৫ লাখ টাকার একটি চেকের ছবিও যুক্ত করে দেন। কামাল উদ্দিন চট্টগ্রাম জজ আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি। ফেসবুকে তার পোস্ট নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়। এর জেরে তাকে যুবলীগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। সাংসদের পক্ষে সাতকানিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সোহরাব হোসেন চৌধুরী। ১০ জানুয়ারি এম হোসেন কবির ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কামাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এদিকে চট্টগ্রামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণের পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে মোছলেম উদ্দিন আহমেদের ছবি প্রকাশিত হচ্ছে না বলে তিনি উষ্মা প্রকাশ করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে মোছলেম উদ্দিন বলেন, ‘সিআরবিতে একটি হাসপাতাল নির্মাণের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের ভিত্তিতে একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। আমরা সরকারের পক্ষের লোক, আমাদের তো সরকারের সিদ্ধান্তকেই সমর্থন করা স্বাভাবিক। আবার কারও এটার বিরোধিতা করারও অধিকার আছে। কেন আমরা এটার পক্ষে থেকেছি, সেজন্য যদি পত্রিকাগুলো আমাদের বর্জন করে, ছবি ছাপাতে না চায়, তাহলে আমাদের ওপর অবিচার হয়ে যায়। আমি জননেত্রী শেখ হাসিনার কর্মী, সরকারের অংশ। আমি প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের পক্ষেই তো অবস্থান নেব, সরকারের পক্ষেই অবস্থান নেব, এটাই তো স্বাভাবিক।’ প্রসঙ্গত, গতবছরের জুলাই থেকে সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণর বিরুদ্ধে নাগরিক আন্দোলন শুরু হলে সাংসদ মোছলেম উদ্দিন আহমেদ সিআরবিতে হাসপাতালের পক্ষে অবস্থান নিয়ে আন্দোলনকারীদের ‘একহাত’ নেন।
# ১২.০১.২০২২ চট্টগ্রাম #