মতামত

আইন মেনেই বলছি – উত্তর পুরুষ

সবাইকে নতুন বছরের জন্য শুভ কামনা জানিয়ে রাখি আগে ভাগেই , এবং ধরেই নিচ্ছি সবাই নতুন বছরে ভালই থাকবেন। তবে এটা ঠিক, বছরের প্রথম দিন সবার ভাল কেটেছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মানুষ বিভিন্ন ভাবে নতুন বছরকে বরণ করেছে। মানুষের বিশ্বাস নতুন বছর নতুন ভাবে জীবন রাঙ্গিয়ে দেবে। এই ভাল চিন্তা সবার মত আমিও করতে চাই। কিন্তু জানেন কি অনেক সময় যা আশা করি তা হয় না। ঐ যে গান শুনেছেন না -আশায় আশায় দিন যে গেল/ আশা পুরণ হইল না/ কারো আশার তরী হায় রে পায় খুঁজে কিনারা/ নিরাশারই আঁধার আমার করে শুধু ইশারা। যাক গে, এটা তো প্রেমের গান এখানে আশা নিরাশা থাকবেই। বিচ্ছেদও প্রেমের অংশ কি বলেন। যারা প্রেম করে বিয়ে করে দিন গুজরান করছেন, তারা বলবেন আরে পাগলের প্রলাপ। আবার যারা এক/দুই বার বিফল, তারা তো বলবেন এটাই প্রেমের মুল সুর। এই আলাপ বেশি না করাই ভাল। কেউ কেউ আবার আমকেই বলে বসবেন আরে মিঞা, নিজে প্রেমে ছ্যাঁক খেয়ে এখন বিচ্ছেদই প্রেমের মুল সুর বলছেন,  অন্য কথা বলেন। ঠিক আছে অন্য কথা বলি। 

এই যে আশার কথা বলছিলাম সে কথাতেই আসি। বলছিলাম আশা করতে ভয় পাই কেননা অনেকেই বলে থাকেন ‘শেষ ভাল যার সব ভাল তার’। তো আমাদের শেষে কি এমন ঘটলো যে শেষ ভাল হল না? না না, সবই ভাল গেছে,  শেষে কোনটা খারাপ বলি, বলেন? তবে ঐ যে একটা খোঁজ কমিটির কথা হচ্ছিল তার কথাই বলছিলাম। নির্বাচন (?) কমিশনের মেয়াদ শেষ। শুনেন নির্বাচন এর পাশে প্রশ্নবোধক চিহ্ন দেখে আবার বলবেন না যে এই লোক এটা দিল কেন?নিশ্চয় নির্বাচন বিরোধী। দেখেন ভাই, এটা আমাকে বলে লাভ নাই। খোদ গণতন্ত্রের রপ্তানিকারী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প সাহেব নির্বাচন নিয়ে কত তেলেসমাতিই না করলেন। এর বেশি কিছু না বলাই ভাল। আকেলমান্দকে লিয়ে ইশারা ভি কাফি। কি একটা অবস্থা। কোন কথা বলতে গিয়ে কি বলে ফেলি। দোষ নিবেন না দয়া করে। তো ভাল কথা, মেয়াদ শেষ হতেই পারে। দোকানে গিয়ে যে কোন জিনিষ কেনার সময় আপনি দেখবেন কবে এর মেয়াদ শেষ হচ্ছে। সে হিসাবে কমিশন এর মেয়াদ শেষ। মেয়াদ উত্তীর্ণ জিনিষ কেউ পছন্দ করে না। এখন কথা হচ্ছে এই কমিশন কি ভাবে হবে? এই ব্যাপারে কোন আইন নাই। শুনে একটু অবাকই হলাম এত এত সরকার আসলো গেলো কেউ এই বিষয়টা নিয়ে ভাবলো না? সবাই কি তাহলে ‘তাল গাছটা আমার’মার্কা নির্বাচন করে ক্ষমতায় গেলো? কি জানি বাবা এতো সব কঠিন কথা বুঝি না। এই ব্যাপারে আমি একেবারেই দুধ-ভাত।যাই হোক এখন আইন যখন নাই তাহলে তো কিছু একটা করতে হয় নাকি? কমিশনে যারা থাকবেন তারা তো আর আমার মত লোক না যে রাস্তা ঘাটে পাওয়া যাবে। উনাদের খুঁজে বের করতে হবে । তাই একটা খোঁজ কমিটি করতে হবে। করেন,  কোন অসুবিধা নাই । এটা তো ভালই । সরকারি লোকজনের সময় কোথায় রাস্তায় রাস্তায় গিয়ে লোক খুঁজে বের করার। আবার এই কাজ করলে বিরোধীরা বলবে এটা সরকারি কমিশন । কাজেই মানি না, মানবো না। সরকারও তাই ঠিক করলো একটা খোঁজ কমিটি করবে। এই পর্যন্ত ঠিকই আছে। কথা হচ্ছে এই কমিটি  তো সরকার তৈরী করবে। তাহলে এই কমিটি যে সরকারের দালালী করবে না, নিরপেক্ষ হবে তার কি ঠিক আছে ? যৌক্তিক কথা, নিশ্চয় না। কিন্তু সরকারে যারা বসে আছেন তারা কি আমার মত গণ্ডমূর্খ নাকি। গনিতে একশতে একশ পাওয়া লোকজন। কত কষ্ট করে কত বড় বড় লোকদের পেছনে ফেলেই না এই পর্যন্ত এসেছেন। সবাই গুণধর ব্যক্তি। বুদ্ধিতে পাকা। তারা বললেন ঠিক আছে বাপু, আমরা কিছুই করব না, আসো বাৎচিত করে লোক ঠিক করি। এখানেই এসেই সরল অঙ্ক আবার জটিল হয়ে গেল। এবারেও বিরোধীরা রাস্তা ফাটিয়ে না , টেলিভিশন এর পর্দা ফাটিয়ে বলল হবে না, হবে না। এটা সরকারি চালাকি। কোন নিরপেক্ষ লোক এখানে নেয়া হবে না-এটা লোক দেখানো ব্যপার। দেশে হাজারে হাজারে নিরপেক্ষ লোক আছে সরকার তাদের না নিয়ে এই কমিটিতে নিজের লোক নিবেন। এইখানে একখান কথা বলে ফেলি, এখনকার বিরোধী নেত্রী একবার বলেছিলেন দেশে পাগল ছাড়া আর কেউ নিরপেক্ষ না। তাহলে নিশ্চয় এখন কিছু নিরপেক্ষ লোকের জন্ম হয়েছে।  হতেই পারে। আমরা তো আবার জন্ম নিয়ন্ত্রণে সফল-নাকি?  এখন কেউ কেউ এই বাৎচিতে যাচ্ছেন, সরকারকে সলা পরামর্শ দিচ্ছেন। আর কেউ যাচ্ছেন না। দেখা যাক কি হয়। আমি চাই আর না চাই হবেতো নিশ্চয় কিছু একটা। আরে ভুল বললাম আমি না, বিরোধীরা । অনেক বেশি কথা বলে ফেললাম। এটাই বুড়া মানুষের দোষ। এটাতো আমার বিষয়ই না। কে নিরপেক্ষ আর কে নিরপেক্ষ না -তা বিজ্ঞানীদের বিষয়। ল্যাবরেটরিতে  বসে গবেষনার বিষয়। টেলিভিশন অন করলেই দেখবেন তাদের গবেষনার ফলাফল। 

আসল কথাটাই বলতে ভুলে গেছি আবার। কিছুই মনে থাকে না। কিছু একটা বলতে গেলে আবল তাবোল কথা বলে ফেলি। শুনেন, আবার করোনা ভাইরাসের প্রকোপ বাড়ছে। ইউরোপ- আমেরিকায় তো বটেই দেশে ও বাড়ছে। এবারের নামটা ও বেশ সুন্দর -অমিক্রন । কি সুন্দর না? এর আগে ছিল ডেল্টা- এই নাম টা আমার পছন্দ হয় নি। আবার শয়তানও ছিল বেশি। নতুনটার নাম সুন্দর কিন্তু শয়তানি কম না। কাজেই সাবধান। সুন্দর হলেই তা যে ভাল তা কিন্তু বলা যাবে না। এই অমিক্রন নাকি বিদ্যুৎ গতিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে।  বাপরে বাপ, কি একটা অবস্থা।  কাজ কর্মের, লেখাপড়ার তো বারোটা বাজতে চলল । সব কিছুতেই অটো। চলতেই থাকবে। যাই হোক কি আর করা, এই আটোতেই চলতে হবে। কতদিন, তা একমাত্র ভাইরাস বাবাজি বলতে পারবে। তাই বলছি সবাই সাবধানে থাকেন । দেখেন নতুন বছরে এটা পালায় কিনা। তাহলে বছর শেষে বলতে পারব ২০২২ কেমন ছিল, বেশ ছিল, ভাল ছিল।