চলমান সংবাদ

যৌতুকের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া স্ত্রীকে মারধর করে হত্যা, আইনজীবী স্বামী কারাগারে

নগরীতে বিশ্ববিদ্যালয় পড়–য়া স্ত্রীকে হত্যার দায়ে আনিসুল ইসলাম (৩২) নামের এক আইনজীবীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরোয়ার জাহানের আদালতে এ আদেশ দেন। এর আগে যৌতুক না পেয়ে স্ত্রী মাহমুদা খানম আঁখি (২১)কে মারধর করে হত্যার অভিযোগ তুলে নিহত আঁখির বড়ভাই রোববার রাতে আনিসুল ইসলামসহ তিনজনকে আসামি করে চান্দগাঁও থানায় মামলা দায়ের করেন। থানা সূত্রে জানা গেছে, চান্দগাঁও থানার পাঠানিয়া গোদা শওকত আবাসিকের একটি ভবনের তৃতীয় তলায় ফ্লাটের ভাড়া বাসায় যৌতুকের দাবিতে মাহমুদা খানম আঁখিকে মারধর করা হয়। এতে পেটে আঘাতের ফলে খাদ্যনালী ছিঁড়ে যায়। গত ১৩ ডিসেম্বর নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে পুনরায় অন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় তিনি মারা যান। এই ঘটনায় নিহতের ভাই মিজানুর রহমান বাদী হয়ে চান্দগাঁও থানায় নিহতের স্বামী আনিসুল ইসলাম (৩২) ও তার মা ফরিদা বেগম (৫০) এবং বোন হামিদা বেগম (৩৪)সহ অজ্ঞাতনামা তিন-চারজনকে আসামি করে মামলা করেন। নিহত মাহমুদা খানম আঁখি নগরের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সাউদার্ন ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের তৃতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী ছিলেন। আনিসুল ইসলাম চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য। তিনি বাঁশখালী থানার উত্তর জলদী পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে। ঘটনার পর রোববার রাতেই আনিসুল ইসলামকে আটক করা হয়। চান্দগাঁও থানার ওসি মঈনুর রহমান চৌধুরী বলেন, চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, মাহমুদার খাদ্যনালি ক্ষডুগ্রস্ত হয়েছে। যার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। নির্যাতনের কারণে এমনটা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের জন্য মাহমুদার মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর আঁখির মৃত্যু কারণ আরও স্পষ্ট হবে। স্ত্রী হত্যার অভিযোগে আনিসুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরোয়ার জাহানের আদালতে হাজির করা হয়েছিল। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। নিহতের পরিবারের অভিযোগ, দুইবছর আগে আনিসুলের সঙ্গে মাহমুদার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই তাকে নির্যাতন করে আসছিলেন স্বামী। নিহতের ভগ্নিপতি আবুল কালাম বলেন, যৌতুকের দাবিতে আঁখিকে মারধর করতেন তার স্বামী। গত ১৩ ডিসেম্বর রাত আনুমানিক ১০টার দিকে তাকে ব্যাপক মারধর করেন আনিসুল। মারধরের কারণে আঁখির নাড়িভুঁড়ি ছিঁড়ে যায়। রোববার সন্ধ্যার দিকে তার মৃত্যু হয়। আমরা এই ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচার দাবি করছি।
# ২০.১২.২০২১ চট্টগ্রাম #