চলমান সংবাদ

কুমিল্লায় বাংলাদেশ শান্তি পরিষদের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল

-সারাদেশে বিভিন্ন স্থানে পূজামন্ডপে হামলা ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসে শান্তি পরিষদের তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ

গতকাল  ২৩ অক্টোবর ২০২১ সকাল ১১ টায় বাংলাদেশ শান্তি পরিষদের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল কুমিল্লায় সাম্প্রদায়িক হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত নানুয়ার দীঘির পাড় এলাকার আক্রান্ত পূজামন্ডপ এবং মন্দিরসহ বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন এবং হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারসমূহের সঙ্গে কথা বলেন। এসময় বাংলাদেশ শান্তি পরিষদের সভাপতি জননেতা মোজাফফর হোসেন পল্টূ সারাদেশে বিভিন্ন স্থানে পূজামন্ডপে হামলা ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসে বাংলাদেশ শান্তি পরিষদের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং অবিলম্বে এইসব হামলাকারী ও তাদের নেপথ্য শক্তিকে আইনের আওতায় আনার জন্য সরকারের নিকট দাবী জানিয়েছেন। তিনি একইসাথে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবী জানিয়েছেন এবং নিরাপত্তা দিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে প্রশাসনের ব্যর্থতা ও দায়িত্বে অবহেলার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন। বাংলাদেশ শান্তি পরিষদের এই কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলে ছিলেন যথাক্রমেঃ

বাংলাদেশ শান্তি পরিষদের সভাপতি মোজাফফর হোসেন পল্টু,  সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও   বাংলাদেশ শান্তি পরিষদের সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য এডভোকেট হাসান তারিক চৌধুরী,   জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু এম পি,  গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক  ডাঃ শাহাদাত হোসেইন, সাবেক এম পি ও জাসদ সাধারণ সম্পাদক  নাজমুল হক প্রধান,   বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের প্রাক্তন চেয়ারম্যান বিচারপতি মমতাজ উদ্দিন আহমেদ,  বাংলাদেশ শান্তি পরিষদের  প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক রাষ্ট্রদূত মতাজ হোসেইন,  শান্তি পরিষদের উপদেষ্টা  সিনিয়র সাংবাদিক আবেদ খান, বিশিষ্ট গবেষক ডঃ বীণা শিকদার,  ন্যাপের কেন্দ্রীয় নেতা শ্রী পার্থ সারথি চক্রবর্তী,  বাংলাদেশ শান্তি পরিষদের সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য আসলাম খান,  জাহাঙ্গীর আলম ফজলু।

কুমিল্লা সফরকালে জেলা সার্কিট হাউসে এক সংক্ষিপ্ত প্রেস ব্রিফিংএ শান্তি পরিষদ নেতারা বলেন, ধর্মীয় উগ্রবাদী এবং কায়েমি স্বার্থবাদী মহলের সন্ত্রাস ও চক্রান্তের কারণে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষেরা এবছর তাঁদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান শারদীয় দুর্গাপূজা শান্তিপুর্ন ভাবে সম্পাদন করতে পারলেন না। এই ঘটনা প্রতিবেশী দেশগুলোতে এবং সারা বিশ্বে বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। সর্বোপরি, বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের মনে নতুন করে বিরাট নিরাপত্তাহীনতার জন্ম দিয়েছে।শান্তি পরিষদের নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, গত ১৩ অক্টোবর ভোররাতে কুমিল্লার নানুয়ার দীঘির পাড়ে এক পুজামন্ডপে ‘পবিত্র কোরান শরীফ অবমাননা’ করা হয়েছে বলে অপপ্রচার করে কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফেনী, মৌলভীবাজার, রংপরের পীরগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পুজামন্ডপে হামলা, প্রতিমা ভাংচুর, লুটপাট ও বাড়িঘরে হামলা করা হয়, যা গভীর ষড়যন্ত্রমূলক।  এবছর স্বাধীনতার সুবর্ন জয়ন্তীতে ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ সারাদেশে ধর্মীয় উগ্রবাদীদের তান্ডব এবং নানা ঘটনায় এর আগেও দেখা গেছে, নানা সময়ে ধর্মকে ব্যবহার করে পরিকল্পিতভাবে গুজব ছড়িয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে হামলা ও নৈরাজ্য সৃস্টি করে আমাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্য নষ্ট করার চেস্টা করা হয়েছে। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করা হয়েছে। ফলে এ হামলা শুধু ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপরই আঘাত নয়, এটি মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার উপরও বিরাট আঘাত। তাই দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষা করতে এধরনের  অপশক্তির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি  নিশ্চিত করা এবং দেশের সর্বত্র মুক্তিযুদ্ধের চার মূলনীতির পক্ষের সকল অসম্প্রদায়িক, গনতান্ত্রিক, প্রগতিশীল শক্তি, ব্যক্তি ও প্রকৃত ধর্মপ্রাণ মানুষদের সমন্বিত উদ্যোগ গড়ে তোলার জন্য শান্তি পরিষদ আহবান জানাচ্ছে।

# ২৩/১০/২০২১, কুমিল্লা #