চলমান সংবাদ

কুমিল্লার পূজামণ্ডপে কোরআন রাখার সাথে জড়িত এক ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়েছে: পুলিশ

 

কুমিল্লায় নানুয়াদীঘির পাড়ের পূজা মণ্ডপ
কুমিল্লায় নানুয়াদীঘির পাড়ের পূজা মণ্ডপে ভাঙচুরের পরের দৃশ্য – অষ্টমীর দিনে তোলা ছবি বিবিসিকে দেয়া হয়।

বাংলাদেশে পুলিশ বলছে কুমিল্লার একটি পূজামণ্ডপে কোরআন শরীফ রাখার সাথে জড়িত এক ব্যক্তিকে তারা শনাক্ত করেছেন।

পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তাকে চিহ্নিত করা হয়েছে।

তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। এজন্য অভিযান চলছে বলে তারা জানিয়েছেন। বাংলাদেশে গত এক সপ্তাহ ধরে হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির-পূজামণ্ডপ-বাড়িঘরে হামলা ও সহিংসতার সার্বিক ঘটনা নিয়ে দেয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ বলছে – এসব ঘটনায় মোট সাত জন মারা গেছে। কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান ও পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ দু’জনেই বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, কোরআন রাখার বিষয়ে তারা একজনকে শনাক্ত করেছেন তারা এবং তাকে ধরার জন্য অভিযান চলছে। তবে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার দু’জনের কেউই শনাক্ত হওয়া ব্যক্তির নাম পরিচয় বলতে রাজী হননি, যদিও বাংলাদেশের গণমাধ্যমে পুলিশ সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে এক ব্যক্তির নাম প্রকাশ করা হয়েছে। এমনকি সিসিটিভি ফুটেজের দৃশ্যও অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করছেন – যেখানে দেখা যাচ্ছে গভীর রাতে এক ব্যক্তি হাতে কিছু একটা নিয়ে মন্দিরে প্রবেশ করছেন এবং ফেরার সময় তিনি হনুমানের গদা নিয়ে ফিরে আসছেন। গত ১৩ই অক্টোবর দুর্গাপূজার মহা অষ্টমীর দিন বুধবার ভোরে কুমিল্লা শহরের নানুয়াদীঘির একটি পূজামণ্ডপে কোরআন পাওয়া যায়।

পরে একদল লোক কোরআন শরীফ অবমাননার অভিযোগ তুলে ওই পূজা মণ্ডপে হামলা ও ভাঙচুর চালায়।

নানুয়াদীঘির পাড়ে পুলিশের প্রহরা।
নানুয়াদীঘির পাড়ে পুলিশের প্রহরা।

এই ঘটনার জের ধরে সেদিনই চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে কিছু মন্দিরে হামলা চালানো হয়। সহিংসতার সময় পুলিশ গুলি চালালে পাঁচজন নিহত হয়। আহত হয় আরো বেশ কয়েকজন। পুলিশ ১৩ই অক্টোবর কুমিল্লায় যা ঘটেছে সেটি থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত যা যা হয়েছে এবং সে প্রেক্ষাপটে তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে সেসব তুলে ধরে আজ বুধবার একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। সেখানে তারা বলেছে কুমিল্লা, চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ, রংপুরের পীরগঞ্জ ছাড়াও কক্সবাজার, সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও গাজীপুরসহ কয়েকটি জায়গায় হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় সারা দেশে সাত জন মারা গেছে যার মধ্যে দুজন হিন্দু সম্প্রদায়ের ও বাকীরা মুসলিম। এছাড়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে আহত হয়েছে অর্ধশতাধিক পুলিশ সদস্য। এই বিজ্ঞপ্তিতে কুমিল্লার ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলা হয়েছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সর্বোচ্চ সতর্কতা ও প্রচেষ্টা সত্ত্বেও দেশের বিভিন্ন স্থানে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ বলছে ১৯শে অক্টোবর পর্যন্ত মোট ৭২টি মামলা হয়েছে সারাদেশে এবং এসব ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে ৪৫০ জনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার রহস্য উদঘাটনে পুলিশের বিশেষ ইউনিটগুলোকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ও উস্কানি রোধে সাইবার মনিটরিং কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে তারা গুজব, উস্কানি বা বিভ্রান্তিকর তথ্যে বিভ্রান্ত বা উত্তেজিত না হয়ে পুলিশকে সহায়তার জন্য নাগরিকদের প্রতি অনুরোধ করেছে।

সূত্রঃ বিবিসি বাংলা