চলমান সংবাদ

কোম্পানির ১০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে ছিনতাই নাটক কর্মচারীর, গ্রেপ্তার ২

কোম্পানির ১০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে ছিনতাইয়ের নাটক সাজিয়েও শেষ রক্ষা হলো না ক্লিফটন গ্রুপের পিয়ন আব্দুল রহিম রিপনের (৩৫)। অফিসের জন্য ব্যাংক থেকে ১০ লাখ টাকা তুলে আত্মসাতের পর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের অভিযোগ সাজিয়েছিলেন তিনি। অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ ওই কর্মচারিকে সন্দেহের বশে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিলে ফাঁস হয় চাঞ্চল্যকর এই তথ্য। এই কাজে সহযোগিতাকারী রিপনের বন্ধু মো. সেলিমকেও (৩১) গ্রেপ্তার করে কোতোয়ালী থানা পুলিশ। থাই গ্লাসের ব্যবসায় নেমে লোকসান পোষাতে রিপন কোম্পানির ১০ লাখ টাকা আত্মসাত করে বলে পুলিশ জানিয়েছে। কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন বলেন, রিপন ক্লিফটন গ্রুপের প্রধান কার্যালয়ে অফিস সহকারি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বিভিন্ন সময় বড় অংকের টাকা সে ব্যাংক থেকে তুলেছেন, আবার ব্যাংকে জমাও দিয়েছেন। গত ১২ সেপ্টেম্বর দুপুরে হিসাবরক্ষক মো. সাহেদের নির্দেশে রিপন ব্র্যাক ব্যাংকের একটি শাখা থেকে চেক মারফত ১০ লাখ টাকা উত্তোলন করেন। সেই টাকা নুপুর মার্কেট এলাকায় স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংকের শাখায় জমা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ব্র্যাক ব্যাংক থেকে টাকা তোলার পর থেকে মোবাইল বন্ধ করে লাপাত্তা হয়ে যান রিপন। এ ঘটনায় সাহেদ কোতোয়ালি থানায় ওইদিনই মামলা দায়ের করেন।’ কোতোয়ালি থানার এসআই মোমিনুল হাসান বলেন, ‘তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ১৩ সেপ্টেম্বর রাতে নগরীর মেহেদিবাগে ন্যাশনাল হাসপাতালে রিপনের অবস্থান শনাক্ত করি। সেখানে গিয়ে দেখি, রিপন প্রায় আধামরা অবস্থায় পড়ে আছেন। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার শরীরে অস্বাভাবিক কিছুই পাওয়া যায়নি। এতে আমাদের সন্দেহ হয়। আমরা রিপনকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করি। সে নানাভাবে অভিনয় করে আমাদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে। জিজ্ঞাসাবাদে রিপন দাবি করেন- ব্যাংক থেকে টাকা তোলার পর সে সিএনজি অটোরিকশায় টাকা জমা দিতে যাওয়ার সময় বিআরটিসি মার্কেট এলাকায় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে দুইজন গাড়িতে উঠে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে বলে ভয় দেখিয়ে তার ব্যাগ কেড়ে নেয়। তাকে নেশাজাতীয় পানীয় খাইয়ে অজ্ঞান করা হয়। ১৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় জ্ঞান ফিরলে সে নিজেকে লিংক রোড এলাকায় একটি ঝোপের মধ্যে পায়। তখন রিপন বুঝতে পারে তার কাছ থেকে ১০ লাখ টাকাভর্তি ব্যাগ, মোবাইল ও মানিব্যাগ ডিবি পরিচয় দেওয়া দুই জন নিয়ে গেছে। অসুস্থ অবস্থায় বাসায় ফেরার পর পরিবারের লোকজন তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে।’ এসআই মোমিন বলেন, রিপনের এসব বক্তব্য সন্দেহজনক হওয়ায় ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা শুরু করে পুলিশ। কিন্তু পিয়ন রিপনের কোন তথ্য মিল পায়নি। তাকে আদালতে সোপর্দ করে একদিনের রিমান্ডে নিয়ে ফের জিজ্ঞাসাবাদ করি। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সে স্বীকার করে যে- ব্যাংক থেকে উত্তোলন করা ১০ লাখ টাকা সে তার বন্ধু সেলিমের বাসায় রেখেছে। এরপর সেলিমের বাসায় অভিযান চালিয়ে ১০ লাখ টাকা, রিপনের মোবাইল ও মানিব্যাগ আমরা উদ্ধার করি এবং সেলিমকে গ্রেপ্তার করি। সেলিমও স্বীকার করেছে ১০ লাখ টাকা আত্মসাতের পরিকল্পনায় রিপনের সঙ্গে সেলিমও ছিল। জিজ্ঞাসাবাদে রিপন আরও জানিয়েছেন, কিছুদিন আগে রাজীব নামে এক বন্ধুর সঙ্গে থাই গ্লাসের ব্যবসা শুরু করে রিপন। সেই ব্যবসায় প্রায় ১০ লাখ টাকার মতো লোকসান হয়। সেই লোকসান পুষিয়ে নিতে ১০ লাখ টাকা আত্মসাতের চেষ্টা করেছিল রিপন।
# ১৬.০৯.২০২১ চট্টগ্রাম #