চলমান সংবাদ

কর বাড়ানো হবে না, আদায় পরিধি বাড়ানো হবে

-চসিক মেয়র

নতুন করের হার বৃদ্ধি হবে না আশ্বস্ত করে কর আদায়ের আওতা ও পরিধি বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) চসিক’র ৬ষ্ঠ পরিষদের পঞ্চম সাধারণ সভায় মেয়র একথা বলেন। চসিক কর বৃদ্ধি করেছে বলে গণমাধ্যমের আলোচনা-সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করে মেয়র রেজাউল করিম বলেন, নতুন করের হার বৃদ্ধি হবে না। কর আদায়ের আওতা ও পরিধি বাড়ানো হবে। কোন ভবন যদি দুই তলা থাকা অবস্তায় যে কর দিত এখন যদি তিন তলা, চার তলা বা বহতল হয়ে যায় তা হলে বর্ধিত অংশের জন্য কর ধার্য কোনভাবে অযৌক্তিক হয় না। মেয়র আরো বলেন, চসিককে নগরবাসীর কর দিয়ে চলতে হয় কিন্তু এই আয় দিয়ে সেবার পরিধি বাড়ানো কিছুতেই সম্ভব নয়। তাই নিজস্ব ভূ-সম্পত্তিতে আয়বর্দ্ধক প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কোন এলাকায় কি ধরণের আয়বর্দ্ধক প্রকল্প করা যায় সে-জন্য কাউন্সিলরদের মতামতকে প্রাধান্য দেয়া হবে। চসিকের অব্যবহৃত ভূ-সম্পত্তিতে একাধিক বিনিয়োগ প্রস্তাবনা এসেছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই প্রস্তাবনা যথাযথ কিনা তা বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে যাচাই-বাচাই করে সুনির্দ্দিষ্ট নীতিমালার মাধ্যমে প্রকল্প বাস্তবায়নের অনুমতি দেয়া হবে। চট্টগ্রামে আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্তাপনার ও বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎসহ নিত্য ব্যবহার্য পণ্য রূপান্তরেও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান আগ্রহ দেখিয়েছেন। তাদের প্রস্তাব বিবেচনাধীন। চসিকের দু’টি টেন্সিং গ্রাইন্ড আছে। এগুলো এখন পাহাড়সমান স্তূপে পরিণত হয়েছে। ফলে পরিবেশ দুষিত হচ্ছে। এখানকার স্তুূপ অপসারণে উদ্যোগী একাধিক প্রতিষ্ঠান প্রস্তাব দিয়েছে। এগুলোও বিবেচনাধীন। চলমান জলাবদ্ধতা প্রকল্প বাস্তবায়নকালে নগরীতে সৃষ্ট জলজটে নগরবাসীর দুর্ভোগে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, এর দায় সিডিএ কে নিতে হবে। কারণ পুরো প্রকল্পটি তাদের হাতে এবং বাস্তবায়ন করছে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে। আমরা সিডিএ কে অনুরোধ করেছিলাম, বর্ষার আগেই খালগুলোর যে অংশে বাধ দিয়ে পানি প্রবাহ পথ অটকানো হয়েছে তা অপসারণ করা হোক। কিন্তু কথা দিয়েও সিডিএ কর্তৃপক্ষ কথা রাখেনি। এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, সিডিএ খালের দু’পাশের যে অংশে রিটার্নিং ওয়াল তুলেছে সেখানে খালের মাঝেই মাটির স্তূপ করেছেন এবং এই মাটি না সরিয়ে দিয়ে স্কেভেটর দিয়ে সমান করায় খালের মধ্যে রাস্তা হয়ে গেছে। সিডিএ বলেছে তারা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। ব্যবস্থাপনা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের। কিন্তু প্রকল্পই যখন বাস্তবায়ন হয়নি তখন ব্যবস্থাপনার কথা আসে কেন? সম্পূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করে বুঝিয়ে না দেয়ার আগে ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নিতে পারি না। মেয়র প্রশ্ন করেন, প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ আরো তিন বছর বাড়ানো হলেও এই সময় নগরীকে জলজট থেকে মুক্ত করার কোন পথ সিডিএ করছে কি? তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের উন্নয়নে অনেকগুলো মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছেন। পরিবহণ সেক্টর ও যোগাযোগ অবকাঠামো ও ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়ন না হলে মেগা প্রকল্পগুলোর সুফল পাওয়া যাবে না বলে মন্তব্য করে মেয়র বলেন, নগরীতে মেট্রোরেল ও মনোরেল করার প্রস্তাব এসেছে। মেট্রোরেলের ব্যাপারে একটা জরীপ আমাদের আছে, কিন্তু মনোরেলের ব্যাপারে কোন ধারণা নেই। মনোরেলের প্রস্তাবটি যাচাই-বাছাই করতে বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এটা সত্য যে, একটি আধুনিক শহরের জন্য দু’টি রেল সিস্টেম খুবই কার্যকর। মেয়র আরো বলেন, ওয়ার্ড কাউন্সিল কার্যালয়কে আয়বর্দ্ধক করতে হবে। তাই কার্যালয় ভবনে কমিউনিটি সেন্টার সহঅন্যান্য স্থাপনা থাকবে। তিনি আসন্ন কোরবানী ঈদের দিনে ১২ ঘন্টার মধ্যে পশুর বর্জ্য মুক্ত করতে হবে। এ জন্য পরিচ্ছন্ন ও যান্ত্রিক বিভাগকে তৈরী থাকার নির্দেশ দেন। মেয়র চট্টগ্রামকে সাজিয়ে তুলতে সকলের সহযোগতা ও পরামর্শ প্রত্যাশা করে বলেন, এই নগরী আমর একার নয়, সকলের। আমি ভাল পরামর্শ ও মতামতকে কাজে লাগাতে উদগ্রীব। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খালেদ মাহমুদের পরিচালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্যানেল মেয়র গিয়াস উদ্দিন, আফরোজা কালামসহ চসিক ওয়ার্ড কাউন্সিলরবৃন্দ, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, অতিরিক্ত প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোর্শেদুল আলম চৌধুরী। অনুষ্ঠানে চসিকের বিভাগীয় ও শাখা প্রধানগণ ভার্চুয়াল সংযোগে অংশগ্রহণ করেন। # ২৪.০৬.২০২১ চট্টগ্রাম #