আজ স্কপ বন্দর অবরোধ কর্মসূচী পালন করবে

শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ) তাদের পূর্বঘোষিত বন্দর অবরোধ কর্মসূচি আজ বুধবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত পালনের ঘোষণা দিয়েছে। মাইলের মাথা (সী ম্যান্স হোস্টেল), টোল রোডের টোল প্লাজা গেট এবং বড় পোল—এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশমুখে অবরোধ কার্যকর থাকবে। গত সোমবার বন্দরের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও সদস্য (প্রকৌশল) কমডোর কাওছার রশিদের সঙ্গে আলোচনায় বসলেও স্কপ নিজেদের অবস্থান থেকে সরে আসেনি। আলোচনায় সন্তোষজনক অগ্রগতি না থাকায় তারা অবরোধ কর্মসূচি বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নেয়।
স্কপ নেতারা জানান, বিদেশি কোম্পানি—বিশেষ করে DP World—কে বন্দর ইজারা দেওয়ার প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে শ্রমিকদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। তাদের দাবি, দেশের কৌশলগত স্বার্থের সঙ্গে জড়িত গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দিলে শুধু শ্রমিকদের ভবিষ্যৎ নয়, জাতীয় সার্বভৌমত্বও প্রশ্নের মুখে পড়তে পারে। একই সঙ্গে তারা দীর্ঘদিনের ৯ দফা দাবি—যার মধ্যে আছে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধি, আবাসন-চিকিৎসা সুবিধা, নারীদের জন্য ডরমিটরি, আউটসোর্সিং বন্ধ, বেকার ভাতা চালু—এসব বাস্তবায়নের জোর দাবি জানিয়েছে।
বন্দর সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষ ও শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের মতে, বন্দর দেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র। এখানে যেকোনো পরিবর্তন বা সিদ্ধান্তের প্রভাব পড়ে রপ্তানি-আমদানি ব্যবস্থায়। তাই বিদেশি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা হলে শ্রমিকদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। এ কারণে স্কপ শুধু শ্রমিকদের নয়, সাধারণ জনগণকেও আজকের অবরোধ কর্মসূচিতে সমর্থন দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
অন্যদিকে ব্যবসায়ী মহলের একটি অংশ মনে করছে, অবরোধের কারণে বন্দর কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটলে পণ্য পরিবহন ব্যাহত হতে পারে। তবে স্কপের মতে, এই স্বল্পমেয়াদি বিঘ্ন দীর্ঘমেয়াদে দেশের স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় চাপ সৃষ্টি করবে।
সব মিলিয়ে আজকের অবরোধকে কেন্দ্র করে বন্দর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। শ্রমিকদের দাবি, বন্দর সম্পর্কিত ভবিষ্যৎ সিদ্ধান্তগুলো যেন দেশের স্বার্থ রক্ষা, শ্রমিক অধিকার নিশ্চিত করা এবং বন্দরকে স্বনির্ভর রাখার ভিত্তিতে নেওয়া হয়। তাদের মতে, আন্দোলন যতক্ষণ না দাবি পূরণ হয়, ততক্ষণ তারা মাঠ ছাড়বে না।
