এনসিটি ও লালদিয়ার চর ইজারা দেয়ার পাঁয়তারা বন্ধের দাবিতে চট্টগ্রামে শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের মশালমিছিল অনুষ্ঠিত – ২২ নভেম্বর চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে বিভাগীয় শ্রমিক কনভেনশন

চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) ও লালদিয়ার চর ইজারা দেয়ার সরকারি সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদে এবং সিদ্ধান্তটি অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবিতে চট্টগ্রাম শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ)-এর উদ্যোগে আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় হালিশহর নয়াবাজার হতে বড়পুল পর্যন্ত এক মশালমিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক ও বন্দর সিবিএ’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী শেখ নুরুল্লাহ বাহার। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন স্কপের যুগ্ম সমন্বয়ক রিজ ওয়ানুর রহমান খান।
টিইউসি চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সভাপতি ও শ্রম সংস্কার কমিশনের সদস্য তপন দত্ত বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দর বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণশক্তি। এই বন্দর নিয়ে কোনো প্রকার ছিনিমিনি খেলা সহ্য করা হবে না। তিনি বলেন ডেনমার্ক ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান এপিএম টার্মিনালসকে ৩০ বৎসরের চুক্তিতে লালদিয়ার চরে টার্মিনাল করার জন্য ইজারা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু চুক্তির কোন শর্ত জনগনকে জানানো হচ্ছে না। তাছাড়া লালদিয়ার চরে টার্মিনাল করা হলে কর্ণফুলির মোহনা সরু হয়ে যাবে এবং ন্দীর নাব্যতাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সুতরাং জনগনকে না জানিয়ে কোন চুক্তি করা হলে সেটা মেনে নেয়া হবে না।
তিনি D: ইউনূসের উদ্দেশ্যে বলেন, আমাদের আর লাল নীল স্বপ্ন না দেখিয়ে মানে মানে কেটে পড়ুন। বন্দর নিয়ে আর বেশি বারাবাড়ি করিয়েন না।
তিনি আরও বলেন,“বিগত সরকারের সময় নেয়া একতরফাভাবে এনসিটি ইজারা সিদ্ধান্ত বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বহাল রেখেছে—এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। দেশের কৌশলগত সম্পদ বিদেশিদের হাতে তুলে দেয়ার এই চক্রান্ত জনগণ কখনো মেনে নেবে না। সরকারকে অবিলম্বে এনসিটি ও লালদিয়ার চর ইজারা দেয়ার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে; অন্যথায় হরতাল অবরোধসহ বৃহত্তর কর্মসূচির মাধ্যমে বাংলাদেশ অচল করে দেয়া হবে।”
এ সময় তিনি আগামী ২২ নভেম্বর চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে বিভাগীয় শ্রমিক কনভেনশন কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন—বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি এস কে খোদা তোতন, ডক শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক তসলিম হোসেন সেলিম, বন্দর শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহীম খোকন, বিএলএফ চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির সাধারণ সভাপতি নুরুল আবসার তৌহিদ, ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের খোরশেদুল আলম, বিএমএসএফ সাধারণ সম্পাদক নুরুল আবসার প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে কাজী শেখ নুরুল্লাহ বাহার বলেন,
“চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের সাম্প্রতিক গণবিজ্ঞপ্তিতে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত গণতান্ত্রিক অধিকারে হস্তক্ষেপ। তিনি ১১ নভেম্বর নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর নতুন করে কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপের তীব্র নিন্দা জানান।”
বক্তারা সর্বসম্মতভাবে দাবি জানান—চট্টগ্রাম বন্দর ও লালদিয়ার চর জাতীয় সম্পদ, যা কোনো বিদেশি প্রতিষ্ঠান বা বহুজাতিক কোম্পানির কাছে ইজারা দেয়া যাবে না। তারা ঘোষণা দেন, সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না হলে স্কপসহ সকল শ্রমিক সংগঠন বৃহত্তর ঐক্য গড়ে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাসহ সারাদেশে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবে।
