বিজ্ঞান ভাবনা(২০০): সম্পর্ক – অলীক ও বাস্তব -বিজন সাহা
আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম – এক বিখ্যাত বাউল গান যা আমাদের বার বার অতীতের সোনালী সময়ে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। সব সময় না হলেও প্রায়ই আমরা অতীতের জন্য মন খারাপ করি। হয়তো করার মত অনেক কারণ আছে। এই তো কয়েক দিন আগে আমরা এক জুম আড্ডায় বসলাম বন্ধুদের সাথে। মজার ব্যাপার হল সেই আড্ডায় যারা উপস্থিত ছিলেন একজন বাদে অন্য কারও সাথে আমার আগে পরিচয় ছিল না। আমাদের পরিচয় অনলাইনে – ফেসবুকে অথবা প্রগতির যাত্রীকে কেন্দ্র করে। এই অর্থে আমাদের কমন অতীত নেই বা থাকলেও খুবই সংক্ষিপ্ত। আর কমন অতীত না থাকলে আড্ডা দেয়া কঠিন। তারপরেও আমরা আড্ডা দেই, মত বিনিময় করি। কারণ এর বাইরেও অনেক কিছুই আমাদের এক করে, সব বিষয়ে সবার সাথে মতৈক্যে না পৌঁছুতে পারলেও আমরা বিভিন্ন বিষয়ে পরস্পরের ভাবনা শেয়ার করতে পারি। সবচেয়ে বড় কথা আমরা অন্যের মতের সাথে একমত না হলেও সেই মত শুনতে পারি। অন্যের মতামতকে শ্রদ্ধা করা বন্ধুত্বের অন্যতম শর্ত।
উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার পরে আমি রাশিয়া চলে আসি উচ্চ শিক্ষা লাভের জন্য। বিভিন্ন কারণে আর দেশে ফেরা হয়নি, তাই স্কুল ও কলেজ জীবনের বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ তেমন একটা ছিল না বললেই চলে। তাছাড়া সোভিয়েত ইউনিয়নের আমরা যেন নতুন করে জন্ম নেই। ভাষা সম্পূর্ণ অচেনা বলেই নয়, সে দেশের নিয়ম কানুন ছিল একেবারে ভিন্ন। যার ফলে একজন শিশু যেমন নতুন করে চলতে বলতে শেখে, নতুন করে বিশ্বের সাথে পরিচিত হয়, আমাদের অবস্থাও ছিল ঠিক তেমনটাই। আর এ কারণেই হয়তো আমাদের মধ্যে পারস্পরিক বন্ধন একটু অন্য রকম। বর্তমানে বিভিন্ন জন বিভিন্ন দেশে বসবাস করলেও এক ধরণের আত্মার টান রয়ে গেছে। ফলে যখন সামাজিক মাধ্যমে যোগাযোগের সুযোগ এলো আমরা সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়লাম পরস্পরের খোঁজ খবর নিতে। এরপর এলো করোনা নামক শাপে বর। উন্মোচিত হল নব দিগন্ত। তৈরি হল বিভিন্ন গ্রুপ। মাঝে মধ্যে চলল অনলাইন আড্ডা। শুরু হল বিভিন্ন ধরণের সেমিনার। শুরু হল এক সেমিনার থেকে আরেক সেমিনারের অপেক্ষা। অন্যদের কথা জানি না, আমি নিজে যেহেতু বাঙালি সমাজ থেকে অনেক দূরে থাকি, সাধারণত সরাসরি কারও সাথে কথা বলার সুযোগ তেমন হয় না, তাই এ ধরণের আড্ডা আমার জন্য ভিন্ন গুরুত্ব বহন করে।
তবে অনেক দিন হয় এসব আড্ডা বন্ধ হয়ে গেছে। প্রথমে সেটা হয় ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে। ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার আক্রমণকে কেন্দ্র করে আমরা একাধিক শিবিরে ভাগ হয়ে যাই। কেউ রাশিয়ার পক্ষে, কেউ ইউক্রেনের। অনেকেরই যুক্তি ছিল আমরা সোভিয়েত ইউনিয়নে পড়াশুনা করেছি তাই রাশিয়ার পক্ষে কথা বলতে দায়বদ্ধ নই। অনেকে মনে করে সেটা করা আমাদের দায়িত্ব। আমি মনে করি বিষয়টি রাশিয়া বা ইউক্রেনের নয় – আমাদের সত্যের পক্ষে থাকা উচিৎ। প্রথম দিকে দ্বিধা থাকলেও এখন পশ্চিমা বিশ্বের নেতারাই বলছে তারাই রাশিয়াকে বলতে গেলে বাধ্য করেছে ইউক্রেন আক্রমণ করতে যাতে তাকে শিখণ্ডী করে রাশিয়ার উপর একযোগে বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা যায়, রাশিয়াকে ধ্বংস করা যায়। তবে এর বাইরেও যে কথা তা হল সোভিয়েত ইউনিয়ন আমাদের ফ্যাসিবাদ বিরোধী হতে শিখিয়েছে। তাই যদি হয় তাহলে ইউক্রেনের বর্তমান শাসক শ্রেণী যারা নাজি বাহিনীর দোসর হিসেবে লাখ লাখ ইহুদি, রুশ, পোলিশ হত্যাকারী বান্দেরার সমর্থক এবং আজ তাদের রাষ্ট্রীয় বীর বানাচ্ছে তখন তারা কিভাবে ইউক্রেনের হয়ে কথা বলে। এটা তো অনেকটা গোলাম আযমকে বাংলাদেশের বীরোত্তম উপাধি দেবার মত। আসলে বিষয়টি ইউক্রেনের জনগণ নয়, ইউক্রেন রাষ্ট্র। বিশেষ করে আমরা যারা ভাষা আন্দোলনের কথা জানি, জানি কীভাবে ভাষা আন্দোলন থেকে একটি দেশ জন্ম নিল, তারা কীভাবে ইউক্রেনে রুশ ভাষার বিরুদ্ধে যে জিহাদ ঘোষণা করা হয়েছিল সেটা মেনে নেই। মনে রাখতে হনে ইউক্রেনের প্রায় ৮০% মানুষ রুশ ভাষায় কথা বলত, প্রায় ৪০% মানুষের মাতৃভাষা ছিল রুশ। এটা অবশ্য ঠিক যে মানুষের বিভিন্ন ধরণের প্রাইওরিটি থাকতে পারে, কিন্তু আমি শুধু বুঝতে চেষ্টা করছি কেন এমন হয়। কারণ আজ বাংলাদেশেও একই ভাবে একাত্তরের রাজাকাররা জাতীয় বীর বনে যাচ্ছে। ইউক্রেন যুদ্ধ আর একাত্তরের যুদ্ধ বিভিন্ন দিক দিয়ে অনেকটা মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ।
পরে রুশ – ইউক্রেন যুদ্ধের সাথে যোগ হয়েছে বাংলাদেশে জুলাই আগস্টের ঘটনাবলী, যা নিয়ে নানা জন নানা মত পোষণ করে। ফলে এখন আমরা বলতে গেলে বিভিন্ন ধরণের অনলাইন আড্ডা এড়িয়ে চলি। এসব করে হয়তো নিজেদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় এড়ানো যায় কিন্তু ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটানো যায় না। উল্টো এতে নিজেদের মধ্যে দূরত্ব বাড়ে, বাড়ে পরস্পরের প্রতি আড়ষ্টতা। কথার মধ্যে থাকলে বিভিন্ন প্রশ্নে ভিন্ন মত পোষণ করলেও একটা চলনসই সম্পর্ক ধরে রাখা যেত। কিন্তু পাছে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয় এই ভয় থেকে আড্ডার আয়োজন না করায় এখন কথাই বন্ধ হল। আমরা মাথা কেটে মাথা ব্যথার উপশম করলাম।
বিভিন্ন বিষয়ে মতানৈক্য থাকার পরেও নিঃসন্দেহে বলা যায় যে আমাদের অধিকাংশই ফ্যাসিবাদ বিরোধী ও একাত্তরের পক্ষে। তারপরেও আমরা প্রায়ই একে অন্যকে লাল বদর বা ফ্যাসিবাদের দোসর বলে গালি দেই। ইচ্ছা অনিচ্ছায় নিজেদের একে অন্যের থেকে দূরে ঠেলে দেই। আসলে একাত্তরের শত্রুরা কি অপূর্ব ভাবেই না আমাদের মধ্যে বিভাজন তৈরি করেছে ও করছে। সেটা আমরা নিজেরা টের পাই না। কারণ আমারা অধিকাংশই বামপন্থী চিন্তা ভাবনার মানুষ ও নিজেদের সবচেয়ে বুদ্ধিমান, সবচেয়ে রাজনীতি সচেতন মনে করি। তবে এটা তো গতকাল বা গত আগস্টে শুরু হয়নি। অনেক আগে থেকেই ইউরোপ আমেরিকার বাঙালি বুদ্ধিজীবীরা বিভিন্ন ভাবে বাংলাদেশকে, বিশেষ করে দেশের সরকারকে কর্তৃত্ববাদী হিসেবে দেখানোর কাজ শুরু করেছে। তারা অবশ্য ভুল করেনি কিন্তু প্রশ্ন অন্য জায়গায়। যারা এটা করেছে তারা প্রায় সবাই মার্কিন সরকারের অনুদানপ্রাপ্ত। প্রকাশ্যে বা গোপনে, সরাসরি বা বিভিন্ন গালভরা নামের ফান্ডের মাধ্যমে এদের পোষা হয়। একথা তো গোপন নয় যে এই মার্কিন সরকার বিশ্বের এক নম্বর কর্তৃত্ববাদী সরকার। তারা প্রতিটি দেশের সরকারকে নাকে দড়ি দিয়ে ঘুরাতে চায়, না পারলে সরকার পরিবর্তন করে। তা নিয়ে এদের রা নেই অথচ এরা একাত্তরের পক্ষের মানুষের মধ্যে বৃটিশ স্টাইলে ডিভাইড এন্ড রুল প্রতিষ্ঠা করেছে।
আমি একটা জিনিস ভালোভাবেই জানি যে আমাদের সবার গন্তব্য এক নয়। আজ আমরা যারা এক সাথে হাঁটছি একটা সময় তারা ভিন্ন ভিন্ন পথে চলব। তবে কিছু কিছু গ্লোবাল প্রশ্নে আমাদের মধ্যে মতের মিল আছে বলেই বিশ্বাস। কিন্তু যখন দেখি আমাদের কর্মকাণ্ড, যেমন দুই পক্ষ দুই পক্ষকে লাল বদর বা স্বৈরাচারের দোসর বলে দূরে সরিয়ে দেয়া, আমাদের মূল শত্রু একাত্তরের বিরোধী শক্তির হাতকে শক্তিশালী করছে তখন প্রশ্ন করতে হয় – আমরা ঠিক পথে চলছি কি? এখনই কি আমাদের নিজদের পারস্পরিক মান অভিমান ভুলে এক হয়ে আসল শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করা উচিৎ না? যদি তাই হয়, তাহলে আমাদের আবার কথা বলা শুরু করা একান্ত প্রয়োজন। সম্পর্ক নষ্টের ভয়ে কথা বাদ দিয়ে আমরা আমাদের দুর্বল করছি, শত্রুর পক্ষে কাজ করছি।
ছোটবেলায় মায়ের মুখে এক গল্প শুনেছি, পরে সেটা রুশ ভাষায় কবিতার আকারে পড়েছি সামিউল মারশাকের কলমে। গল্পের মূল কথা দুই বুড়ো ও বুড়ি বাজী ধরেছেন। যে আগে কথা বলবে সেই হেরে যাবে। এদিকে ঘরে চোর ঢুকে এক এক করে সব নিয়ে যাচ্ছে। পাছে বাজিতে হেরে যায় তাই দু’জনেই মুখে কুলুপ এঁটে বসে আছেন।
বাংলাদেশের চার মূলনীতিতে বিশ্বাসী অনেকেই পাছে লাল বদর বা স্বৈরাচারের দোসর ট্যাগ পেয়ে বন্ধুত্ব নষ্ট হয় এই ভয়ে পরস্পরের সাথে কথা বন্ধ করে বসে আছে। এই সুযোগে চোর এসে বায়ান্ন, একাত্তর, বাহাত্তরের সংবিধান, জাতীয় সঙ্গীত একে একে সব চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। এরা হয়তো একদিন কথা বলা শুরু করবে। কিন্তু ততদিনে দেশটাই হাতছাড়া হয়ে যাবে।
আমার মনে প্রায়ই প্রশ্ন জাগে আমাদের বন্ধুরা, যারা এখনও দেশে আছে এবং স্বৈরাচার পতনের আনন্দে ভাসছে তারা কি নিজদের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে এতটাই নিশ্চিত। যখন তাদের দেখি আনন্দ স্ফূর্তি করছে, পিকনিক করছে, আড্ডা দিচ্ছে, গান বাজনা করছে – তারা কি ভাবছে দেশে যে ধরণের পরিবর্তন আসছে তাতে করে কয়েক বছর পরে সেটা সম্ভব হবে? অথবা তাদের মেয়েরা আগের মতই স্কুল কলেজে পড়তে পারবে, বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পারবে? আফগানিস্তান কি তাদের কোন শিক্ষাই দেয় না? সত্তরের দশকে আফগান মেয়েরা আমাদের চেয়েও বেশি স্বাধীন ছিল। আর আজ? অনেকের ধারণা বাংলাদেশ কখনও আফগান হবে না। আমার কিন্তু সেটা মনে হয় না। বাংলাদেশের জনসংখ্যা আফগানিস্তানের চেয়ে অনেক অনেক বেশি, মব সংস্কৃতি প্রমাণ করেছে যে আমাদের সাধারণ মানুষ বিচ্ছিন্ন, তারা মবের সামনে অসহায়। এখানে সংখ্যা কাজ করে না, কাজ করে ঐক্য। এই মবের সামনে সবাই ছত্রভঙ্গ। আর তাই ছাত্র জনতার আন্দোলনের ফসল আজ কিছু সমন্বয়কের ঘরে। একদিকে মানুষকে জাতীয় সঙ্গীত গাইতে বাধা দেওয়া হচ্ছে আবার মাঝে মাঝে জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে হাজার হাজার মানুষ প্রতিবাদ এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে, কিন্তু প্রতিবাদ আর প্রতিরোধ এক নয়। ওরা যেমন শক্তি দিয়ে আমাদের দমিয়ে রাখছে, নিজেদের এজেন্ডা এগিয়ে নিচ্ছে, এদের বিরুদ্ধে আমাদেরও একটাই পথ – শক্তি। শক্তি মানে সংঘর্ষ নয়, শক্তি মানে ঐক্য। ওদের হাজার জনের বিপক্ষে আমাদের দশ হাজার। ওদের ধারণা বাংলাদেশ এখন ওদের কথায় চলে, দেশের বেশির ভাগ মানুষ ওদের পেছনে। একমাত্র বিশাল জনশক্তি দিয়েই ওদের পরাজিত করা সম্ভব। দেশে প্রতিটি সফল গণ অভ্যুত্থানের পেছনে ছিল বিপুল জনগোষ্ঠীর সক্রিয় অংশগ্রহণ। এমনকি ২০২৪ সালেও। এর বিকল্প নেই। তাই যারা মনে করে বাংলাদেশ ২০২৪ এর ঘোষিত লক্ষ্যের দিকে যাচ্ছে না, বৈষম্য দূর হচ্ছে না, অর্থ পাচার বন্ধ হচ্ছে না, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হচ্ছে না – তাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে হবে। এটা শুরু হতে পারে ইউরোপ আমেরিকায়। সেখানে বিশাল বাংলাদেশী কমিউনিটি ২০২৪ এ যেমন এখনও তেমনি গণতন্ত্রের জন্য ডাক দিতে পারে। প্রয়োজনে তারা নিজ নিজ সরকারের কাছে বাংলাদেশের সার্বিক অবস্থা তুলে ধরতে পারে। যদি কিছু ব্লগার এসব দেশে বসে দেশের রাজনীতি প্রভাবিত করতে পারে, হাজার হাজার মুক্তমনা মানুষ কেন সেটা পারবে না?
আওয়ামী লীগকে যেভাবে নাটক তৈরি করে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হল সেটা নিয়েও আমাদের ভাবা উচিৎ। অনেকেই বলছেন এভাবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করলে তার জনপ্রিয়তা বাড়বে। কিন্তু এটা যে অগণতান্ত্রিক পদক্ষেপ সেটা বলছে না। আমার বিশ্বাস অন্যায় দিয়ে অন্যায় রোধ করা যায় না। এদেশে অনেক জনপ্রিয় দলই হারিয়ে গেছে জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে বলে। এজন্যে আইনের অপপ্রয়োগ করতে হয়নি। এক সমন্বয়ককে বলতে শুনলাম যদি আওয়ামী লীগ ফিরে আসে তাহলে তাদের জীবন ঝুঁকির সম্মুখীন হবে। আমরা তো এই চক্র থেকেই বেরিয়ে আসতে চাইছি। সরকারের এমন কিছু করা উচিৎ নয় যা পরবর্তীতে তাদের বিপদে ফেলে। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করে নয় তাকে বিচারের আওতায় এনে কৃতকর্মের শাস্তি দিতে হবে। কী ডানে কী বামে সর্বত্র একই চিত্র। সব দেখে মনে হয় নিজেদের বদলানোর কোন ইচ্ছে কারও নেই। পরিবর্তনের কথা শুধু ক্ষমতায় যাবার জন্য, কিন্তু একবার লক্ষ্যে পৌঁছে গেলে আবার সেই পুরানো রেকর্ড। ভারত, পাকিস্তান, সাম্রাজ্যবাদ, পুঁজিবাদ – একই গান বাজে সব জায়গায়। আসলে আমাদের অন্য কারও পক্ষে বা বিপক্ষে দাঁড়ানোর প্রয়োজন নেই। আমাদের দরকার সেই বাংলাদেশের জন্য লড়াই করা যে বাংলাদেশ তার সমস্ত নাগরিককে সন্তানের মত কোলে তুলে নেবে, সবাইকে তার আচলের নীচে জায়গা করে দেবে। তবে এর জন্য দরকার ঐক্যবদ্ধ লড়াই। একাত্তরের বাংলাদেশের শত্রুরা ঐক্যবদ্ধ, আমরা বিচ্ছিন্ন। এটাই মনে হয় এই মুহূর্তে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা। আমাদের ঘুম ভাঙবে কি? সবাইকে শুভেচ্ছা!!!
গবেষক, জয়েন্ট ইনস্টিটিউট ফর নিউক্লিয়ার রিসার্চ
শিক্ষক, রাশিয়ান পিপলস ফ্রেন্ডশিপ ইউনিভার্সিটি, মস্কো