নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে আজ, মধ্যরাত থেকে সাগরে মাছ ধরা শুরু
ইলিশের প্রজনন মৌসুম উপলক্ষে সাগরে মাছ ধরার উপর ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে আজ বৃহস্পতিবার মধ্যরাত (৩ নভেম্বর) থেকে ফের শুরু হচ্ছে মাছ ধরা। এ নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই কক্সবাজার শহরসহ জেলার জেলেপল্লীসমূহে চলছে জোর প্রস্তুতি। নিষেধাজ্ঞা অতিবাহিত হওয়ার পর পরই যাতে মাছ ধরা শুরু করা যায় তার লক্ষ্যে কক্সবাজারের অর্ধ লক্ষাধিক জেলে প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন করেছেন।
গতকাল বুধবার সরেজমিন কক্সবাজার উপকূলের বিভিন্ন ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি হিসাবে কেউ নৌকা মেরামত করছেন আর কেউবা জাল মেরামত করছেন। কেউ কেউ গুদাম থেকে জালের বস্তা সৈকতে আনছেন মেরামতের জন্য। আবার সৈকতের টিলায় অথবা ডকে নোঙর করে রাখা নৌকাগুলোতেও চলছে ধোয়া মোছার কাজ।
নিষেধাজ্ঞা অতিবাহিত হওয়ার সাথে সাথেই যাতে মাছ ধরার জন্য সাগরে রওয়ানা দেওয়া যায় তারই লক্ষ্যে কক্সবাজারের অর্ধ লক্ষাধিক জেলে প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন করে ফেলেছেন বলে জানান জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মাস্টার মোস্তাক আহমদ। তিনি জানান, কক্সবাজারে মাছ ধরার ছোট বড় ৭ সহস্রাধিক যান্ত্রিক বোট রয়েছে। এসব বোটে প্রায় ১ লাখ জেলে শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছে। ইলিশের প্রজনন মৌসুম উপলক্ষে সাগরে মাছ ধরার উপর ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা অতিবাহিত হওয়ার পরপরই যাতে মাছ ধরা শুরু করা যায় সেজন্য কক্সবাজারের অর্ধ লক্ষাধিক জেলে প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। বাকী জেলেরাও প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
ফিশারীঘাটস্থ মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী বলেন, ইলিশের প্রজনন মৌসুম উপলক্ষে গত ১২ অক্টোবর থেকে সাগরে মাছ ধরার উপর ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হওয়ার পর থেকেই মাছের অভাবে সাগরপাড়ের এ শহরের প্রধান মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ফিশারীঘাট এখন খা খা প্রান্তরে পরিণত হয়েছিল। জেলেদের প্রস্তুতির কারণে ফিশারীঘাটসহ জেলার জেলেপল্লীগুলোতে আবারও প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে।
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার পর নিষেধাজ্ঞা অতিবাহিত হওয়ার পরই জেলেরা ট্রলার নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে রওয়ানা দেবে। তবে ইলিশ ধরে ঘাটে ফিরতে জেলেদের সপ্তাহখানেক সময় লাগবে। আর তখনই বাজারে ইলিশ সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
ফিশারীঘাটের পাশাপাশি শহরের দরিয়ানগর সৈকত, রেজু, ইনানী ও শামলাপুর সৈকতসহ অন্যান্য জেলেপল্লীতেও চলছে জেলেদের জোর প্রস্তুতি। দরিয়ানগর বোট মালিক সমিতির সভাপতি নজির আলম বলেন, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার পর নিষেধাজ্ঞা অতিবাহিত হওয়ার সাথে সাথেই যাতে জেলেরা সাগরে রওয়ানা দিতে পারেন সেজন্য গত কয়েকদিন ধরেই চলছে জোর প্রস্তুতি।
কক্সবাজার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বদরুজ্জামান বলেন, প্রজনন মৌসুম উপলক্ষে মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞাসহ পরিকল্পিত ব্যবস্থাপনার কারণে দেশে ইলিশের উৎপাদন প্রতিবছরই বাড়ছে। এতে জেলেরাই লাভবান হচ্ছে।