চলমান সংবাদ

চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি ইজারা বন্ধ ও লালদিয়ার চর–পানগাঁও ইজারা চুক্তি বাতিলের দাবিতে শ্রমিক-জনসভা ও মশালমিছিল অনুষ্ঠিত

-১০ ডিসেম্বর দেওয়ানহাট মোড় থেকে বন্দর অভিমুখে লাল পতাকা গণমিছিল

চট্টগ্রাম, ৪ ডিসেম্বর—চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) ইজারা দেয়ার পাঁয়তারা বন্ধ এবং লালদিয়ার চর ও পানগাঁও ইজারা চুক্তি বাতিলের দাবিতে আজ বিকাল ৪টায় সাগরিকা শিল্পাঞ্চলে চট্টগ্রাম শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ)-এর উদ্যোগে শ্রমিক-জনসভা ও মশালমিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক ও বন্দর সিবিএ’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী শেখ নুরুল্লাহ বাহার। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন টিইউসি কেন্দ্রীয় কমিটির সংগঠক ফজলুল কবির মিন্টু।

সমাবেশে প্রধান বক্তা টিএইউসি চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সভাপতি ও শ্রম সংস্কার কমিশনের সদস্য তপন দত্ত বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনীতির প্রাণশক্তি এবং এ বন্দর নিয়ে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্র বরদাস্ত করা হবে না। তিনি বলেন, বন্দর বাংলাদেশের জনগণের সম্পদ—এর ভবিষ্যৎ নির্ধারণের এখতিয়ার কেবল জনগণেরই। অনির্বাচিত ইন্টেরিম সরকারের বন্দর সম্পর্কিত সিদ্ধান্ত নেয়ার কোনো আইনগত বা নৈতিক ভিত্তি নেই বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

তিনি আরও বলেন, বন্দর দেশের কৌশলগত স্থাপনা। নৌবাহিনীর সদর দপ্তরসহ তেল খাতের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা বন্দরের পাশে অবস্থিত। বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে বন্দরের কোনো স্থাপনা তুলে দিলে জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়বে। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ডিসেম্বর বাঙালি জাতির গৌরবের মাস। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ করে এ মাসেই বাঙ্গালি জাতি বিজয় অর্জন করেছে। এই বিজয়ের মাসে ইজারা বাতিলের দাবি জানানোর জন্য ঢাকায় শ্রমিক ঝরিয়েছে ইউনূস সরকার। এর প্রতিদান কড়ায়-গন্ডায় ফেরত দেওয়া হবে।

তিনি আরো বএন, প্রয়োজনে আরেকটি ডিসেম্বর রচিত হবে কিন্তু দেশের ভবিষ্যত জিম্মি হতে দেয়া যাবে না। বাংলাদেশকে গাজা বানানোর স্বপ্ন বাস্তবায়ন হতে দেয়া হবে না।

সমাবেশ শেষে জনাব তপন দত্ত আগামী ১০ ডিসেম্বর দেওয়ানহাট মোড় থেকে বন্দর অভিমুখে লাল পতাকা গণমিছিল কর্মসূচী ঘোষণা করেন।

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন—বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি এস কে খোদা তোতন, টিইউসি চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক মছিউদ দৌলা, জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শ ম জামাল উদ্দিন, বিএফটিইউসি চট্টগ্রাম বিভাগের সভাপতি কাজী আনোয়ারুল হক হুনি, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের নেতা হেলাল উদ্দিন কবির, বিএলএফ এর সাধারণ সম্পাদক আবু আহমেদ মিয়া, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারন সম্পাদক জাহেদ উদ্দিন শাহিন, ডক শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক তসলিম হোসেন সেলিম, বন্দর শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহীম খোকনসহ বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
সভাপতির বক্তব্যে কাজী শেখ নুরুল্লাহ বাহার বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর, লালদিয়ার চর ও পানগাঁও জাতীয় সম্পদ—এগুলো কোনো বিদেশি প্রতিষ্ঠান বা বহুজাতিক কোম্পানির কাছে ইজারা দেয়া জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী। সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না হলে স্কপসহ সকল শ্রমিক সংগঠনকে সাথে নিয়ে সারাদেশে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার ঘোষণা দেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, বন্দরে দুর্নীতির অজুহাত তুলে ইজারা দেয়ার যৌক্তিকতা জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা। তিনি জানান, দুর্নীতিবিরোধী যেকোনো পদক্ষেপকে স্কপ স্বাগত জানাবে, তবে দুর্নীতির গল্প বানিয়ে দেশের কৌশলগত সম্পদ নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র গ্রহণযোগ্য হবে না।