চট্টগ্রাম বন্দরের ট্যারিফ বৃদ্ধি,সভা-সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে সরকার বিদেশী কোম্পানির স্বার্থ রক্ষা করছে -বাম গণতান্ত্রিক জোট
বাম গণতান্ত্রিক জোট ও বাসদ(মার্কসবাদী) চট্টগ্রাম জেলা সমন্বয়ক এড শফি উদ্দিন কবির আবিদের সভাপতিত্বে গতকাল সকালে সিপিবি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন সিপিবি জেলা সভাপতি কমরেড অশোক সাহা, বাসদ জেলা ইনচার্জ আল কাদেরি জয়,সদস্য আহমেদ জসিম,সিপিবি জেলা যুগ্মসম্পাদক নুরুচ্ছফা ভুঁইয়া,বাসদ( মার্কসবাদী) জেলা সদস্য আসমা আক্তার, জাহেদুন্নবী কনক প্রমুখ।
নেতৃবৃন্দ বলেন,”ব্যাপক প্রতিবাদ সত্ত্বেও এবং চট্টগ্রাম বন্দর লাভজনক থাকার পরেও বিদেশী কোম্পানির স্বার্থে বন্দরের মাশুল ৪১ শতাংশ বৃদ্ধি করেছে সরকার। এর ফলে চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারের ব্যয় তিনগুণ বৃদ্ধি পাবে। বর্ধিত ট্যারিফে লাভবান হবে ডিপি ওয়ার্ল্ড, এপিএম টার্মিনালস, পিএসএ ইন্টারন্যাশনালের মতো বিদেশী টার্মিনাল অপারেটর যাদের কাছে চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন টার্মিনাল ইজারা দেয়া হচ্ছে। বিপরীতে দেশে আমদানি-রপ্তানির খরচ বহুগুণ বাড়বে।বর্ধিত খরচের ফলে দেশীয় শিল্প-কৃষি ব্যাপতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে,ব্যাপক মূল্যবৃদ্ধির বোঝা টানতে হবে শেষ পর্যন্ত জনগণকেই। বামজোটসহ রাজনৈতিক দল,এমনকি বন্দর ব্যবহারকারী সংগঠন ও ব্যবসায়ীরা প্রথম থেকে আপত্তি জানিয়ে আসা সত্ত্বেও,তাদের মতামত গ্রাহ্যই করা হচ্ছে না।তাহলে প্রশ্ন হলো,কার স্বার্থে সরকার এধরণের জনবিরোধী সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করছে? কয়েক মাস পর নির্বাচন,নির্বাচিত সরকার আসার পূর্বে তড়িঘড়ি ট্যারিফ বাড়ানোর ক্ষমতা সরকারকে কে দিল? আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাই,অবিলম্বে বন্দরের বর্ধিত ট্যারিফ প্রত্যাহার করতে হবে।”
বন্দর এলাকায় ১১ নভেম্বর পর্যন্ত সভা- সমাবেশ নিষিদ্ধ করার প্রতিবাদ জানিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন,”নিজস্ব সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন টার্মিনাল বিদেশী কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়ার প্রতিবাদে বন্দরের শ্রমিক কর্মচারীরা ধারাবাহিক আন্দোলন করছেন।বামপন্থী ও প্রগতিশীলদের নেতৃত্বে কিছুদিন পূর্বে ‘সাম্রাজ্যবাদবিরোধী দেশপ্রেমিক জনগণ’ ঢাকা-চট্রগ্রাম রোডমার্চ করেছে।বন্দরের পরিচালনা বিদেশী কোম্পাতোয়াক্কা না করে চট্টগ্রাম বন্দরের ট্যারিফ ৪১ শতাংশ বৃদ্ধি,বন্দর এলাকায় সভা-সমাবেশে নিষেধাজ্ঞার মতো জনস্বার্থবিরোধী ও স্বৈরাচারী সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করছে। বামজোটসহ রাজনৈতিক দল,বন্দরের শ্রমিক-কর্মচারী,ব্যবসায়ী, বন্দর ব্যবহারকারী কারও আপত্তি গ্রাহ্য না করে এধরণের সিদ্ধান্ত ও চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে বিদেশী অপারেটরের সাথে চুক্তি করার এক্তিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে কে দিয়েছে? দেশের কারও কথা শুনছেন না,তাহলে কাদের পরামর্শে ও স্বার্থে আপনারা কাজ করছেন? সরকারের দেশবিরোধী এ চক্রান্ত রুখে দিতে আমরা চট্টগ্রামসহ সারা দেশের জননির হাতে তুলে দেওয়ার বিরুদ্ধে ব্যাপক জনমতকে প্রভাবিত করতে না পেরে, প্রধান উপদেষ্টা এর বিরোধিতাকারীদের প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছিলেন।এখন একমাসের জন্য বন্দর এলাকায় সভা- সমাবেশ নিষিদ্ধ করে বিদেশী অপারেটরের সাথে অসম চুক্তির গোপন অপতৎপরতাকে নির্বিঘ্ন করতে চাইছে । সরকার এ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সংবিধান রক্ষিত মৌলিক অধিকার এবং ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ফ্যাসিস্ট এ সিদ্ধান্ত শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনামলের দুঃসহ সময়কালকেই মনে করিয়ে দেয়। আমরা চট্টগ্রামের সর্বস্তরের জনগণসহ দেশপ্রেমিক জনগণকে সরকারের এ দেশবিরোধী চক্রান্তের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহবান জানাই।।”