চট্টগ্রাম বন্দর রক্ষায় স্কপ শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী অব্যাহত রাখবে, বাধা দিলে ফল ভাল হবে না
শ্রমিক-কর্মচারি ঐক্য পরিষদ (স্কপ) জোরালোভাবে দাবি জানিয়েছে যে, চট্টগ্রাম বন্দর একটি জাতীয় সম্পদ — এর নিরাপত্তা ও পরিচালনার দায়িত্ব কোনোভাবেই বিদেশি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের হাতে দেওয়া যাবে না। দেশের সার্বভৌমত্ব ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্কপ জনগণ ও শ্রমিকদের সঙ্গে নিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে এবং আগামীতেও চালিয়ে যাবে। তবে বাধা দেয়া হলে পরিস্থিতি আরো খারাপ হবে এবং এর দায় স্কপ নিবে না।
স্কপের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সম্প্রতি একটি বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে চট্টগ্রাম বন্দরের টার্মিনাল পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যা দেশের স্বার্থবিরোধী ও জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ। এর প্রতিবাদে স্কপ গত দুই মাস ধরে চট্টগ্রাম শহরের কেন্দ্রীয় এলাকাসহ বন্দর এলাকায় শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশ, পদযাত্রা ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি পরিচালনা করছে।
বক্তারা জানান, চট্টগ্রাম বন্দর বাংলাদেশের অর্থনীতির মূলধারা। এই বন্দরের রাজস্ব ও কার্যক্রমের ওপর নির্ভর করে দেশের অন্যান্য প্রকল্প যেমন: পায়রা বন্দর, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো পরিচালিত হয়।
বর্তমানে নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত বন্দরের কার্যক্রম আগের তুলনায় আরও উন্নত হয়েছে। গত ৬ মাসে ১,৩৭,৩৭০ টিইইউ কনটেইনার খালাস হয়েছে, যা পূর্বের চেয়ে অনেক বেশি এবং এতে বন্দর আয় করেছে অতিরিক্ত প্রায় ১,৭৫০ কোটি টাকা।
সভায় বলা হয়, সংবিধানের ৩৮ ধারা ও শ্রম আইনের সংশ্লিষ্ট বিধান অনুযায়ী শ্রমিকদের সংগঠন সমূহের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও মিছিল করার অধিকার রয়েছে। এসব কর্মসূচির কারণে বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম বা অর্থনৈতিক প্রবাহে কোনো ধরনের বিঘ্ন ঘটেনি। তবুও বন্দর কর্তৃপক্ষ বিভিন্নভাবে কর্মসূচি বন্ধ করতে প্রশাসনের কাছে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে পত্র দিয়েছে, যা সংবিধান ও মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে স্কপ নেতৃবৃন্দ দাবি জানান, শ্রমিকদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে হবে।
স্কপের পক্ষে স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন:
- তপন দত্ত — সদস্য, বাংলাদেশ শ্রম সংস্কার কমিশন ও সভাপতি, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র (টিইউসি), চট্টগ্রাম
- কাজী শেখ নুরুল্লা বাহার — সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল, চট্টগ্রাম বিভাগ
- রিজওয়ানুর রহমান খান — যুগ্ম সমন্বয়ক, স্কপ, চট্টগ্রাম
- জাহিদ উদ্দিন শাহীন — সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন, চট্টগ্রাম জেলা
- আবু আহমেদ মিয়া — সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ লেবার ফেডারেশন, চট্টগ্রাম মহানগর
- মোঃ খোরশেদ আলম — সভাপতি, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ, চট্টগ্রাম জেলা
- কাজী আনোয়ারুল হক — সভাপতি, বাংলাদেশ ফ্রি ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস, চট্টগ্রাম বিভাগ
- আল কাদেরী জয় — সংগঠক, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট, চট্টগ্রাম জেলা
- এস কে বারী খোকন — সিনিয়র সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশন, চট্টগ্রাম জেলা
- মোঃ নুরুল আবছার — সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ মুক্ত শ্রমিক ফেডারেশন, চট্টগ্রাম জেলা
- তসলিম হোসেন সেলিম — সাধারণ সম্পাদক, ডক জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ-এর পক্ষে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন ডিসি হেডকোয়ার্টার ।