চট্টগ্রামে শ্রমিক সমাবেশ: এনসিটিসহ কোন টার্মিনাল ইজারা দিলে প্রতিহত করার ঘোষণা
চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লাহ মোড়ে আজ সকাল ১১টায় নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি)সহ অন্যান্য কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশি অপারেটরের কাছে ইজারা দেওয়ার চক্রান্ত বন্ধের দাবিতে এক বিশাল শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম টিইউসি জেলার সভাপতি এবং শ্রম সংস্কার কমিশনের সদস্য তপন দত্ত, সঞ্চালনা করে বিএফটিইউসি চট্টগ্রাম বিভাগের যুগ্ম সম্পাদক রিজওয়ানুর রহমান খান। সমাবেশে প্রধান অতিথিস বক্তব্য দেন জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি ঢাকা থেকে আগত স্কপ নেতা আনোয়ার হোসেন। আরও বক্তব্য দেন জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল চট্টগ্রাম বিভাগের সাধারণ সম্পাদক ও বন্দর সিবিএ’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী শেখ নুরুল্লাহ বাহার, বিএফটিইউসির চট্টগ্রাম বিভাগের সাধারণ সম্পাদক কে এম শহিদুল্লাহ, ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক এড এমরান হোসেন, বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি মোঃ সোহাদ হোসেন, বিএলএফ চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি নুরুল আবছার তৌহিদ, বন্দর শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইব্রাহিম হোসেন খোকন, টিইউসি চটতগ্রাম জেলা শাখার যুগ্ম সম্পাদক মোঃ ইফতেখার কামাল খান, এসএফএল চট্টগ্রাম জেলার আহবায়ক হেলাল উদ্দিন কবির, পাটকল শ্রমিক নেতা বিজেএসডির শ ম জামাল উদ্দিন এবং ডক জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক তসলিম হোসেন সেলিম সহ আরও বিভিন্ন শ্রমিক নেতৃবৃন্দ।
বক্তারা অভিযোগ করেন, চট্টগ্রাম বন্দরে বিদেশি কোম্পানিকে ইজারা দেওয়ার ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে বন্দরের অভ্যন্তরে অচেনা ব্যক্তিদের দেখা যাচ্ছে যারা এনসিটির দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিনিয়োগ বোর্ডের চেয়ারম্যান ঘোষণা দিয়েছেন, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে এনসিটিসহ সব কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশিদের ইজারা দেওয়া হবে। অথচ শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ দীর্ঘদিন ধরে এই আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছে, কিন্তু সরকার কোনো গুরুত্ব দিচ্ছে না।
নেতৃবৃন্দ বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দর দেশের প্রধান বাণিজ্যিক প্রবেশদ্বার। সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত আধুনিক ও সক্ষম এনসিটি দেশের সবচেয়ে সফল কনটেইনার টার্মিনাল। ডিপি ওয়ার্ল্ড বা অন্য কারও হাতে তুলে দেওয়ার অপচেষ্টা জাতীয় স্বার্থবিরোধী ও আত্মঘাতী।”
তাঁরা উদাহরণ টেনে বলেন, পতেঙ্গা টার্মিনাল সৌদি আরবের রেড সী গেটওয়ের হাতে ইজারা দেওয়ার পর প্রত্যাশিত উন্নয়ন হয়নি। বরং টার্মিনালটির সক্ষমতার মাত্র ১০-১২ শতাংশ ব্যবহার হচ্ছে। এনসিটি বা অন্য কোন টার্মিনাল ইজারা দেওয়া হলে একই পরিণতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সভায় এনসিটি ইজারা বাতিল,পতেঙ্গা টার্মিনালের কার্যকারিতা মূল্যায়ন,কৌশলগত বিষয়ে শ্রমিক ও জনগণের মতামতকে প্রাধান্য দেওয়ার দাবি জানানো হয়। এছাড়া এনসিটিসহ অন্য কোন কন্টেনার টার্মিনাল ইজারা দেওয়া হলে তা প্রতিহত করার ঘোষণা দেওয়া হয়।
নেতারা বলেন, “বিগত স্বৈরশাসন আমলে নেওয়া এই একতরফা সিদ্ধান্ত বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বহাল রেখেছে, যা অত্যন্ত রহস্যজনক। দেশের সম্পদ বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র রুখতেই হবে।”
সভা থেকে আগামীতে আরো বৃহত্তর কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয় এবং শ্রমিক, কর্মচারী ও দেশপ্রেমিক জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে সকল কর্মসূচীতে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়, যাতে চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটিসহ সকল কন্টেনার টার্মিনালকে দেশি-বিদেশি লিজের চক্রান্ত থেকে রক্ষা করা যায়।
বার্তা প্রেরক
