চলমান সংবাদ

উত্তরা ইপিজেডে শ্রমিক–আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষে নিহত ১, আহত অন্তত ১১

নীলফামারীর উত্তরা এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোনে (ইপিজেড) কারখানা বন্ধ ও শ্রমিক ছাঁটাইয়ের জেরে শ্রমিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষে এক শ্রমিক নিহত ও অন্তত ১১ জন আহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার সকালে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নিহত শ্রমিক মো. হাবিব (২১) সদর উপজেলার ছোট সাঙ্গোলসি গ্রামের দুলাল ইসলামের ছেলে। তিনি উত্তরা ইপিজেডের ইকু ইন্টারন্যাশনালে কর্মরত ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাতের শিফট শেষে বাড়ি ফেরার পথে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের ভিড়ের মধ্যে পড়েন হাবিব। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে তিনি নিহত হন। সকাল ৯টার দিকে তাঁকে মৃত অবস্থায় নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে আনা হয়। হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মো. ফারহান তানভিরুল ইসলাম জানান, মৃতের বুকে ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।

পুলিশ ও আন্দোলনরত শ্রমিকদের অভিযোগ, হংকংভিত্তিক পরচুলা কারখানা এভারগ্রীন (বিডি) লিমিটেড সম্প্রতি প্রায় ৫০ জন শ্রমিককে ছাঁটাই করে। পরে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ না করেই অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে নোটিশ টাঙানো হয়। এতে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে শ্রমিকদের মধ্যে।

মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে শ্রমিকরা কারখানার সামনে জড়ো হয়ে প্রবেশের চেষ্টা করলে ব্যর্থ হন। এরপর তাঁরা নীলফামারী–সৈয়দপুর সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এতে যান চলাচল ব্যাহত হয়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করলে সংঘর্ষ বাঁধে। শ্রমিকদের অভিযোগ, গুলিবিদ্ধ হয়ে অন্তত ছয়জন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

সরেজমিনে সকাল ১০টার দিকে দেখা যায়, বিপুলসংখ্যক পুলিশ, বিজিবি ও সেনা সদস্য ইপিজেড এলাকায় মোতায়েন রয়েছেন। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করছেন।

শ্রমিকদের অভিযোগ, ইপিজেড কর্তৃপক্ষ শ্রমিক স্বার্থে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি, বরং মালিকদের পক্ষ নিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে কর্মরত অনেক শ্রমিক ছাঁটাইয়ের তালিকায় থাকলেও তাঁদের নিয়মমাফিক সুবিধা দেওয়া হয়নি।

এ বিষয়ে ৫৬ বিজিবি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. বদরুজ্জোহা বলেন, “আমরা ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছি এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।”

উত্তরা ইপিজেডের মহাব্যবস্থাপক জানান, শ্রমিক ও মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বিরোধ মেটানোর চেষ্টা চলছে।